রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

নফসকে নিয়ন্ত্রণের ৪ দোয়া

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৩ পিএম

শেয়ার করুন:

নফসকে নিয়ন্ত্রণের ৪ দোয়া

নফস আরবি শব্দ। এর অর্থ আত্মা, মন, প্রবৃত্তি, স্বয়ং ইত্যাদি। নফস সেটাই যা আল্লাহ আমাদের দেহে ফুঁকে দিয়েছেন। মৃত্যুর সময় যা দেহ থেকে বেরিয়ে যায়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন- কুল্লু নাফসিন জা-ইকাতুল মউত তথা প্রত্যেক নফসকে তথা প্রাণকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫)

নফস সাধারণত মানুষকে মন্দ কাজে প্ররোচিত করে। নফসের এই পর্যায়ের নাম নফসে আম্মারাহ। এটাকে নিয়ন্ত্রণের অন্যতম উপায় হলো- মুজাহাদা তথা সাধনা বা চেষ্টা। অর্থাৎ মন চাইলেও ধৈর্যের মাধ্যমে, উত্তম সঙ্গী ও মৃত্যুর স্মরণের মাধ্যমে নফসের চাহিদাকে দমিয়ে রাখতে হয়। এভাবে নফসে লাওয়ামাহ থেকে এক পর্যায়ে নফসে মুতমাইন্নায় উন্নীত হন আল্লাহর বান্দারা। মহান আল্লাহর কাছে নফসের প্ররোচনা থেকে বাঁচার দোয়া রয়েছে। এখানে এ সম্পর্কিত চারটি দোয়া তুলে ধরা হলো।


বিজ্ঞাপন


১. ইস্তেগফার
বেশি বেশি ইস্তেগফার করা নফসের প্ররোচনা থেকে বাঁচার অন্যতম উপায়। যখন কেউ আল্লাহর কাছে গুনাহের জন্য ক্ষমা চায়, তখন তার নতুন করে গুনাহ করার সম্ভাবনা কমে যায়। তাছাড়া ইস্তেগফারকারীরা সাধারণত মুত্তাকি। তারা আল্লাহর ইচ্ছায় গুনাহ থেকে অন্যদের চেয়ে অধিক মুক্ত থাকে। মুত্তাকিদের গুণাবলী বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘এবং যারা কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেললে কিংবা নিজেদের ওপর জুলুম করে ফেললে আল্লাহকে স্মরণ করে, অতঃপর নিজেদের গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ ছাড়া আর কে আছে যে গোনাহ ক্ষমা করবে এবং তারা যা করে ফেলে জেনেবুঝে তা পুনরায় করতে থাকে না।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৩৫)

আরও পড়ুন: আল্লাহর শেখানো যে দোয়া পড়ে আদম (আ.) ক্ষমা পেয়েছেন

ইস্তেগফারের জন্য এই দোয়াটি করতে পারেন— رَبَّنَا ظَلَمۡنَاۤ اَنۡفُسَنَا وَ اِنۡ لَّمۡ تَغۡفِرۡ لَنَا وَ تَرۡحَمۡنَا لَنَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ উচ্চারণ: ‘রব্বানা জলামনা আনফুসানা ওয়াইল্লাম তাগফিরলানা ওয়াতারাহামনা লানাকুনান্না মিনাল খ-সিরিন।’ অর্থ: ‘হে আমাদের রব, আমরা নিজদের উপর জুলুম করেছি। আর যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদেরকে দয়া না করেন তবে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হব।’ (সুরা আরাফ: ২৩)

২. তাউজ পড়া
নফসের কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচতে তাউজ তথা أَعُوذُْ بِاللّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ ‘আউজুবিল্লাহি মিনাশশাই ত্বনির রজীম’ পড়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি দোয়া বা আমল। কেননা নফস ও শয়তানের মধ্যে একটা যোগসূত্র রয়েছে। নফস খারাপ কিছু চাইলে শয়তান তা উস্কে দেয়। এ কারণে যেকোনো খারাপ কাজের ইচ্ছা হলে তাউজ পড়া উচিত।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: আল্লাহর কাছে শয়তানের ৪ আবেদন

৩. اَللَّهُمَّ آتِ نَفْسِي تَقْوَاهَا وَزَكِّهَا أَنْتَ خَيْرُ مَنْ زَكَّاهَا أَنْتَ وَلِيُّهَا وَمَوْلاَهَا - اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عِلْمٍ لاَ يَنْفَعُ وَمِنْ قَلْبٍ لاَ يَخْشَعُ وَمِنْ نَفْسٍ لاَ تَشْبَعُ وَمِنْ دَعْوَةٍ لاَ يُسْتَجَابُ لَهَا উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা আতি নাফসি তাকওয়াহা ওয়া যাক্কিহা আংতা খাইরু মান যাক্কাহা আংতা ওয়ালিয়্যুহা ওয়া মাওলাহা; আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন ইলমিন লা ইয়ানফাউ ওয়া মিন কালবিন লা ইয়াখশাউ ওয়া মিন নাফসিন লা তাশবাউ ওয়া মিন দাঅওয়াতিন লা ইউসতাঝাবু লাহা।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার মনে তাকওয়া (আল্লাহ ভীতি) দান করো, আমার মনকে পবিত্র কর, তুমিই তো আত্মার পবিত্রতা দানকারী, তুমিই তো হৃদয়ের মালিক ও অভিভাবক। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই এমন ইলম (জ্ঞান) থেকে যা কোনো উপকারে আসে না, এমন হৃদয় থেকে আশ্রয় চাই যা (তোমার ভয়ে) ভীত হয় না, এমন আত্মা থেকে আশ্রয় চাই যা পরিতৃপ্ত হয় না এবং এমন দোয়া থেকে আশ্রয় চাই যা কবুল করা হয় না।’ (সহিহ মুসলিম: ৬৬৫৮)

৪.  يَاحَىُّ يَا قَيُّوْمُ بِرَحْمَتِكَ أَسْتَغِيْثْ أَصْلِحْ لِىْ شَأْنِىْ كُلَّهُ وَلَا تَكِلْنِيْ إِلَى نَفْسِىْ طَرْفَةَ عَيْنِ উচ্চারণ: ‘ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুম বি রহমাতিকা আস্তাগিস, আসলিহলি শা’নি- কুল্লাহু ওলা তাকিলনি ইলা নাফসি ত্বর ফাতা আঈ-ন।’ অর্থ: ‘হে চিরঞ্জীব, হে জমিন আসমান ও সমস্ত মাখলুকের রক্ষাকারী, আমি আপনার রহমতের ওসিলায় ফরিয়াদ করছি যে, আমার সকল কাজ দুরস্ত করিয়া দিন এবং আমাকে এক পলকের জন্যও আমার নফসের সোপর্দ করবেন না। (মুসতাদরাকে হাকেম)

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর