সন্তানের সুন্দর নাম রাখার তাগিদ দিয়েছে ইসলাম। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘কেয়ামতের দিন তোমাদের নিজ নাম ও পিতার নামে ডাকা হবে। সুতরাং তোমরা সুন্দর নাম রাখো।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯৪৮)
সাধারণভাবে যেকোনো অর্থবহ সুন্দর নাম ও উপনাম গ্রহণে কোনো বিধি-নিষেধ নেই। তবে মহানবী (স.)-এর নাম ও উপনাম গ্রহণের ক্ষেত্রে কিছুটা বিধি-নিষেধ রয়েছে। যেমন কোনো শিশুর নাম একইসঙ্গে নবীজির নামে এবং উপনামে রাখা যাবে না বলেছেন কোনো কোনো ইমাম। কেননা এতে মহানবী (স.)-এর সঙ্গে সাদৃশ্য তৈরি হয়। এভাবে নাম রাখতে স্বয়ং নবীজিও নিষেধ করেছেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা আমার নামে নাম রেখো, কিন্তু আমার উপনাম গ্রহণ করো না।’ (সহিহ বুখারি: ৩৫৩৮)
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: শিশুর নাম রাখা নিয়ে ইসলাম কী বলে?
তবে অন্য আলেমদের মতে, এই নিষেধাজ্ঞা ছিল নবীজির জীবনকালের জন্য। তাই নবীজির ইন্তেকালের পরে কেউ চাইলে একইসঙ্গে নবীজির নাম ও উপনাম একসঙ্গে রাখতে পারবে। এ বিষয়ে এক হাদিসে এসেছে, আলী (রা.) রাসুলুল্লাহ (স.)-কে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আপনার ইন্তেকালের পর আমার যদি কোনো পুত্রসন্তান জন্মগ্রহণ করে তাহলে আমি কি তার নাম ও উপনাম আপনার নাম ও উপনামে রাখব? তিনি বলেন, হ্যাঁ।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯৬৭)

উভয় মতামতের সমন্বয় সাধনের জন্য বিজ্ঞ আলেমরা বলেন, এক ব্যক্তির জন্য নবীজি (স.)-এর নাম ও উপনাম উভয়টি ধারণ করা অনুচিত; বরং নাম বা উপনামের যেকোনো একটি গ্রহণ করা উত্তম।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: শিশুদের যে বয়সে নামাজ শেখাবেন
আসলে নবীজির সম্মানার্থে নিজের সন্তানের নাম নবীজির নামে রাখা প্রশংসনীয়। একাধিক বিশুদ্ধ হাদিসে তা প্রমাণিত। হজরত জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, আমাদের মধ্যে এক ব্যক্তির ছেলেসন্তান জন্মাল। সে তার নাম রাখল মুহাম্মদ। তাঁর গোত্রের লোকেরা বলল, আমরা তোমাকে রাসুলুল্লাহ (স.)-এর নামে নাম রাখতে দেব না। সেই ব্যক্তি তাঁর ছেলেকে নিয়ে রাসুলুল্লাহ (স.)-এর কাছে গেল এবং বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আমার একটি ছেলে হয়েছে আমি তাঁর নাম রেখেছি মুহাম্মদ। কিন্তু আমার গোত্রের লোকেরা বলছে, আমরা রাসুলের নামে নামকরণ করতে দেব না। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘তোমরা আমার নামে নাম রাখো; কিন্তু আমার উপনাম গ্রহণ করো না। নিশ্চয়ই আমিই কাসেম বা বণ্টনকারী। আমি তোমাদের মধ্যে বণ্টন করি।’ (সহিহ মুসলিম: ২১৩৩)

অতএব, সন্তানের নাম মুহাম্মদ রাখা যাবে এবং এটি খুবই প্রশংসনীয় কাজ হবে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সর্বক্ষেত্রে নবীজির প্রতি সম্মান ও ভালোবাসার প্রমাণ দেয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

