ঈমান ও নেক আমলের কারণে পরকালে কেউ জান্নাতে যাবেন, আবার কেউ কুফুরি ও গুনাহের কারণে যাবে জাহান্নামে। প্রত্যেক নবী-রাসুলের অনুসারী বা উম্মত রয়েছে। সর্বশেষ নবী মুহাম্মদ (স.)-এর অনুসারীদের উম্মতে মুহাম্মদি বলা হয়। হাদিসের ভাষ্যমতে, জান্নাতে উম্মতে মুহাম্মদির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি হবে।
যদিও অন্যান্য উম্মতের সম্মিলিত সংখ্যার তুলনায় উম্মতে মুহাম্মদির সংখ্যা খুব বেশি নয়। কেননা একদিকে যেমন মহানবী (স.)-এর আগমনের আগে অসংখ্য মানুষ গত হয়েছে, তেমনি তাঁর পরবর্তী যুগেও বহু মানুষ এমন রয়েছে, যারা তাঁর অনুসরণ করেনি। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, তোমরা তো অন্যান্য মানুষের তুলনায় এমন, যেমন সাদা ষাঁড়ের দেহে কয়েকটি কালো পশম অথবা কালো ষাঁড়ের শরীরে কয়েকটি সাদা পশম। (সহিহ বুখারি: ৩৩৪৮)
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: যে কারণে সবচেয়ে বেশি মানুষ জান্নাতে যাবে
উম্মতে মুহাম্মদির সংখ্যা কম হলেও বিপুলসংখ্যক নবীজির অনুসারীকে জান্নাত দেওয়ার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা নবীজিকে (স.) সম্মানিত করবেন। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তাঁর কসম। আমি আশা করি, তোমরা সব জান্নাতবাসীর এক-তৃতীয়াংশ হবে। (বর্ণনাকারী বলেন) আমরা এ সংবাদ শুনে আবার আল্লাহু আকবর বলে তাকবির দিলাম। তিনি আবার বললেন, আমি আশা করি তোমরা সব জান্নাতির অর্ধেক হবে। এ কথা শুনে আমরা আবারও আল্লাহু আকবর বলে তাকবির দিলাম। (সহিহ বুখারি: ৩৩৪৮)
অন্য হাদিসে নবীজি (স.) বলেন, জান্নাতিদের ১২০টি কাতার হবে। এর মধ্যে এই উম্মতের হবে ৮০টি কাতার এবং অন্য সব উম্মতের হবে ৪০টি। (সুনানে তিরমিজি: ২৫৪৬)
বিজ্ঞাপন
আরেক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘আগের উম্মতদের আমার সামনে পেশ করা হয়। কোনো নবী তাঁর বহু উম্মতকে সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন। কোনো নবীর সঙ্গে অপেক্ষকৃত ছোট দল। কোনো নবীর সঙ্গে আছে ১০ জন উম্মত। কোনো নবীর সঙ্গে আছে পাঁচজন আবার কোনো নবী একা যাচ্ছেন। দৃষ্টি দিতেই, হঠাৎ দেখি অনেক বড় একটি দল। জিজ্ঞাসা করলাম, হে জিবরাইল! ওরা কি আমার উম্মত? তিনি বললেন, না। তবে আপনি শেষ প্রান্তের দিকে তাকিয়ে দেখুন! আমি দৃষ্টি দিলাম: হঠাৎ দেখি অনেক বড় একটি দল। তিনি বললেন, ওরা আপনার উম্মত। আর তাদের অগ্রবর্তী ৭০ হাজার লোকের কোনো হিসাব হবে না, তাদের কোনো আজাব হবে না। (সহিহ বুখারি: ৬৫৪১)
আল্লাহ তাআলা আমাদের নবীজির প্রকৃত উম্মত হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

