শনিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

প্রকৃত মুমিন ও মুমিন নামধারীদের সাধারণ পার্থক্য

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:১০ পিএম

শেয়ার করুন:

প্রকৃত মুমিন ও মুমিন নামধারীদের সাধারণ পার্থক্য

মুমিনের আভিধানিক অর্থ বিশ্বাসী, ঈমানদার, আস্থাজ্ঞাপনকারী ইত্যাদি। যে ব্যক্তি ঈমানের ঘোষণা দেয়, সে-ই মুমিন। ইসলামি পরিভাষায় মুমিন তাকেই বলা হয়, যে ব্যক্তি এক আল্লাহ, তাঁর রাসুলগণ, ফেরেশতাগণ, আল্লাহর কিতাবসমূহ, আখেরাত এবং তাকদিরে বিশ্বাস স্থাপন করে।

প্রকৃত মুমিন সাধারণত আল্লাহর আদেশ-নিষেধের বিপরীত কাজ করতে পারে না, নামাজে আন্তরিক হয়, জাকাত দেয়, অহেতুক কথা ও কাজে নিজেকে জড়ায় না, লজ্জাস্থানের হেফাজত করে এবং আমানত ও অঙ্গীকার সম্পর্কে হুঁশিয়ার থাকে। (সুরা মুমিনুন: ১-১১) এছাড়াও তারা ভালো কাজের আদেশ দেয়, অন্যায় কাজে বাধা প্রদান করে। (সুরা তাওবা: ৭১)


বিজ্ঞাপন


অন্যদিকে যারা আল্লাহ ও রাসুলের (স.) অনুগত নয়, বরং পাপী, তারা এর সম্পূর্ণ বিপরীত। প্রিয়নবীজি হাদিসে মুমিন ও পাপিষ্টদের চেনার একটি সাধারণ উপায় বলেছেন। তা হলো- মুমিনরা ভদ্র ও চিন্তাশীল হয় আর পাপিষ্টরা ধোকাবাজ, কৃপণ ও অসভ্য হয়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, মুমিন ব্যক্তি চিন্তাশীল, গম্ভীর ও ভদ্র হয়ে থাকে। আর পাপিষ্ঠ ব্যক্তি প্রতারক, ধোকাবাজ, কৃপণ, নীচ ও অসভ্য হয়ে থাকে। (সুনানে তিরমিজি: ১৯৬৪)

আরও পড়ুন: আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে ১৬ আমল

এই হাদিসে পাপিষ্টদের তথা অনৈতিক ব্যক্তিদের প্রকৃত মুমিন থেকে আলাদা করা হয়েছে। অর্থাৎ নিজেকে মুমিন পরিচয় দিলেও প্রতারক, কৃপণ ও অসভ্যরা মুমিনের পরিচয় থেকে আলাদা। এসব পাপীষ্টদের আরও কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন- তারা নিজের স্বার্থকেই সবসময় বড় করে দেখে এবং অন্যকে কষ্ট দিতে দ্বিধা করে না। 

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘সে তো মুমিন নয়, যে নিজে তৃপ্তিভরে আহার করে, আর তার প্রতিবেশী থাকে অনাহারে, অর্ধাহারে।’ (আল আদাবুল মুফরাদ: ১১২) অন্য হাদিসে নবীজি বলেছেন, ‘আল্লাহর কসম, সে মুমিন নয়, আল্লাহর কসম সে মুমিন নয়, আল্লাহর কসম, সে মুমিন নয়।’ জানতে চাওয়া হলো- ‘কে ইয়া রাসুলুল্লাহ!’ তিনি বললেন, ‘যার অনিষ্ট ও উৎপীড়ন থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ থাকে না।’ (বুখারি: ৬০১৬)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: হাদিসে ৭টি সর্বনাশা গুনাহ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ

এছাড়াও পাপিষ্টদের মধ্যে নিন্দা ও দোষারোপ করার প্রবণতা বেশি এবং তারা কটূ ভাষায় কথা বলে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘মুমিন কখনো দোষারোপকারী ও নিন্দাকারী হতে পারে না, অভিসম্পাতকারী হতে পারে না, অশ্লীল কাজ করে না এবং কটুভাষীও হয় না।’ (তিরমিজি: ১৯৭৭)

আর মুমিনের কাছে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই সর্বাপেক্ষা প্রিয়। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘সেই প্রভুর কসম, যার হাতে আমার জীবন, তোমরা কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ মুমিন নও, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার নিকটে তার পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততির চেয়ে অধিক প্রিয় না হই।’ (বুখারি: ১৪)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে পাপিষ্টদের বৈশিষ্ট্যগুলো থেকে হেফাজত করুন। প্রকৃত ঈমানদার হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর