রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ঋণ শোধ করতে না পারলে পরকালে যা হবে

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১৯ এএম

শেয়ার করুন:

ঋণ শোধ করতে না পারলে পরকালে যা হবে

যথাসময়ে ঋণ পরিশোধের তাগিদ দেয় ইসলাম। ঋণ পরিশোধে উদাসীনতা মুসলমানদের জন্য নাজায়েজ। মানুষের জীবনের কোনো নিশ্চয়তা নেই। উদাসীনতার কারণে ঋণ রেখে মারা গেলে বড় বিপদ হতে পারে। হাদিসে এসেছে, ‘ঋণের বোঝা নিয়ে মৃত্যু হলে হাশরের মাঠে নিজ নেকি থেকে ঋণের দাবি পূরণ করতে হবে। (বুখারি, মেশকাত: ৫১২৬)

আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হওয়া ব্যক্তি পর্যন্ত ঋণের কারণে পরকালে আটকে যেতে পারে। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন, ‘ঋণ ছাড়া শহীদের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।’ (মুসলিম: ৪৭৭৭)


বিজ্ঞাপন


কেউ ঋণ রেখে মারা গেলে, তার রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে ওয়ারিশদের ওপর তার ঋণ পরিশোধ করা আবশ্যক। ঋণ পরিশোধের পর ওয়ারিশরা অবশিষ্ট সম্পত্তির মালিক হবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এর সবই (তারা পাবে) সে যা অসিয়ত করে তা দেওয়ার এবং ঋণ পরিশোধের পর।’ (সুরা নিসা: ১১)

আরও পড়ুন: অনেক পুরনো ঋণ পরিশোধের সময় কিছু টাকা বেশি দিলে সুদ হবে?

মৃতব্যক্তির ঋণ পরিশোধের আগে নবীজি জানাজা পড়েননি বলেও হাদিস রয়েছে। সালামা ইবনে আকওয়া (রা.) থেকে বর্ণিত একদিন নবী (স.)-এর কাছে জানাজা নামাজের জন্য এক ব্যক্তিকে উপস্থিত করা হলো। তখন নবী (স.) জিজ্ঞাসা করলেন, তার কি কোনো ঋণ আছে? সাহাবিরা বললেন, না। তখন তিনি তার জানাজার সালাত আদায় করলেন। তারপর আরেকটি জানাজা উপস্থিত করা হলো। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তার কি কোনো ঋণ আছে? সাহাবিরা বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তোমাদের সাথির নামাজে জানাজা তোমরাই আদায় করে নাও। আবু কাতাদা (রা.) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! তার ঋণের দায়দায়িত্ব আমার ওপর। তখন তিনি তার জানাজার নামাজ আদায় করলেন। (সহিহ বুখারি: ২২৯৫)

তবে যে ব্যক্তি ইচ্ছা থাকার পরও ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয় এবং তার কোনো সম্পদও না থাকে স্বয়ং আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের মাঠে তার পক্ষ থেকে ঋণ পরিশোধ করবেন। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, কেয়ামতের দিন আল্লাহ ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিকে তার সামনে ডেকে আনবেন। তিনি জিজ্ঞাসা করবেন, হে আদম সন্তান, তুমি এই ঋণ কেন গ্রহণ করেছিলে এবং কোথায় ব্যয় করেছিলে যে মানুষের হক নষ্ট করলে? উত্তরে ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি বলবে, হে আমার প্রতিপালক! আপনি জানেন আমি তা গ্রহণ করেছিলাম, তবে তা আমি খাইনি, পানও করিনি, পরিধানও করিনি, তা নষ্টও করিনি। আমি তা গ্রহণ করার পর পুড়ে গেছে বা চুরি হয়েছে বা ধ্বংস হয়ে গেছে। আল্লাহ বলবেন, আমার বান্দা সত্য বলেছে। আজ তোমার পক্ষ থেকে ঋণ আদায়ে আমিই অধিক হকদার। অতঃপর আল্লাহ কিছু জিনিস (ফেরেশতাদের কাছে) চাইবেন এবং তা দাঁড়িপাল্লায় রাখবেন। এতে ব্যক্তির পাপের পাল্লার ওপর নেকের পাল্লা ভারী হবে এবং সে আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ৪/১৩৬) 


বিজ্ঞাপন


আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে ঋণমুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। প্রয়োজনে ঋণ নিলে তা যথাসময়ে শোধ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর