রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

অসুস্থ ব্যক্তির জন্য ৪১ বার দোয়া ইউনুস পড়া যাবে?

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৪১ পিএম

শেয়ার করুন:

অসুস্থ ব্যক্তির জন্য ৪১ বার দোয়া ইউনুস পড়া যাবে?

দোয়া ইউনুস পবিত্র কোরআনে বর্ণিত একটি ফজিলতপূর্ণ আয়াত। যেকোনো বিপদ-মসিবত, অসুস্থতা, দুশ্চিন্তা-পেরেশানি, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা থেকে মুক্তির উদ্দেশ্যে দোয়া ইউনুস পাঠ করা কার্যকর একটি আমল। দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় ইউনুস (আ.) নদীতে বিশালাকৃতির একটি মাছের পেটে বন্দি হন। এই মহাবিপদে তিনি মহান আল্লাহর কাছে যে দোয়া পড়েন তা-ই দোয়া ইউনুস। এই দোয়ার বরকতে আল্লাহ তাঁকে মসিবত থেকে উদ্ধার করেছিলেন।

দোয়া ইউনুস হলো— لَا إِلَـٰهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ ‘লা ইলাহা ইল্লা আংতা, সুবহানাকা ইন্নি কুংতু মিনাজ জ্বলিমিন।’ অর্থ: ‘তুমি ছাড়া সত্য কোনো উপাস্য নেই; তুমি পুতঃপবিত্র, নিশ্চয় আমি জালিমদের দলভুক্ত।’ (সুরা আম্বিয়া: ৮৭)


বিজ্ঞাপন


এ দোয়ায় একসাথে তাওহিদের ঘোষণা, তাসবিহ, তাওবা, রুজু ইলাল্লাহ, ইনাবত— এসব রয়েছে। নিজেকে আল্লাহর হাওয়ালা করার জন্য, নিজেদের সমস্যা, প্রয়োজন আল্লাহর কাছে পেশ করার জন্য, আল্লাহর সাথে সম্পর্ক মজবুত করার জন্য অনেক ফলপ্রসূ দোয়া এটি।

এ দোয়ার শব্দগুলো কোরআন-হাদিসে বর্ণিত হলেও সংখ্যা ও পদ্ধতির কথা কোরআন-হাদিসে নেই, কিন্তু জায়েজ পন্থায় ভালো অভিজ্ঞতার আলোকে একটি পন্থা বের করে সংখ্যা বা পদ্ধতি নির্ধারণ করা জায়েজ। যদিও তা সুন্নত নয়, মোস্তাহাবও নয়; মুবাহ মাত্র। 

আরও পড়ুন: যে দোয়া পড়লে যা হারিয়েছেন তার চেয়ে উত্তম কিছু পাবেন

উদ্দেশ্য হলো- আল্লাহর দিকে রুজু করা এবং নিজের সমস্যা ও প্রয়োজনগুলো পেশ করা। এই মূলনীতির আলোকে দোয়া ইউনুস ৪১ বার এবং সোয়া লক্ষ বার পড়ার যে আমল প্রচলিত আছে তা করতে কোনো অসুবিধা নেই, বরং তা বৈধ।


বিজ্ঞাপন


একান্ত বিনয় ও একাগ্রতার সঙ্গে পূর্ণ আন্তরিকতার মাধ্যমে যাবতীয় বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পাবার জন্য মহান আল্লাহর কাছে এ দোয়া করা যায়। দোয়া ইউনুস পড়ার পর আল্লাহর কাছে কাঙ্ক্ষিত উদ্দেশ্য নিয়ে যেকোনো দোয়া করলে, আশা করা যায়- মহান দয়ালু দাতা তা কবুল করবেন। এক্ষেত্রে দোয়া কবুলের শর্তাবলী ও আদব ঠিক থাকতে হবে।

আরও পড়ুন: যে দোয়া পড়লে সবরকম ক্ষতি থেকে আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখেন

অসুস্থ ব্যক্তির জন্য নবীজি সুন্দর একটি দোয়া শিখিয়েছেন। দোয়াটি হলো- أَذْهِبِ الْبَاسَ رَبَّ النَّاسِ وَاشْفِ أَنْتَ الشَّافِي لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا উচ্চারণ: ‘আজহাবিল বাসা রাব্বাননাসি, ইশফি ওয়া আংতাশ শাফি লা শিফাআ ইল্লা শিফাউকা শিফাআন লা ইয়ুগাদিরু সাক্বামা।’ অর্থ: ‘কষ্ট দূর করে দাও, হে মানুষের রব! আরোগ্য দান করো, তুমিই একমাত্র আরোগ্যদানকারী। তোমার সুস্থতা ছাড়া অন্যকোনো সুস্থতা নেই। এমন সুস্থতা দান করো তা যেন সামান্যতম রোগকেও অবশিষ্ট না রাখে।’ (সহিহ মুসলিম: ৫৫২২)

আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.)-এর নিয়ম ছিল, তিনি যখন কোনো রোগীর কাছে আসতেন কিংবা তাঁর কাছে যখন কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে আনা হতো; তখন তিনি এই দোয়াটি বলতেন। (সহিহ মুসলিম: ৫৫২২)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বিপদ-মসিবতে যথাযথভাবে দোয়া ইউনুস পাঠ করার তাওফিক দান করুন। যেভাবে তিনি হজরত (আ.)-কে বিপদ থেকে হেফাজত করেছিলেন সেভাবে দুনিয়াবাসিকে যাবতীয় বিপর্যয় থেকে হেফাজত করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর