শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

নিকৃষ্ট মৃত্যু থেকে রক্ষার বিশেষ আমল

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:২০ পিএম

শেয়ার করুন:

নিকৃষ্ট মৃত্যু থেকে রক্ষার বিশেষ আমল

আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল ও পাপাচারে লিপ্ত অবস্থায় মৃত্যু হওয়াকে ইসলামে নিকৃষ্ট মৃত্যু বা মন্দ মৃত্যু বলা হয়। আবার কিছু মৃত্যু হঠাৎ হয়, যে কারণে তাওবা করা বা কালেমা পড়ার সুযোগ হয় না, সেগুলোও ভালো মৃত্যু নয়। হাদিসে এ মৃত্যুকে অপমৃত্যু বলা হয়েছে। এ ধরণের মৃত্যু থেকে রক্ষার জন্য এক সুন্দর আমল হলো- সদকা বা আল্লাহর পথে খরচ করা। 

আনাস ইবনে মালেক (রা.) বর্ণিত এক হাদিসে বলা হয়েছে, সদকার বিশেষ একটি ফায়েদা হলো- সদকার কারণে মানুষ নিকৃষ্টমৃত্যু বা অপমৃত্যু থেকে বেঁচে যায়। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন- إِنَّ الصَّدَقَةَ لَتُطْفِئُ غَضَبَ الرَّبِّ وَتَدْفَعُ مِيتَةَ السَّوْءِ সদকা আল্লাহ তাআলার ক্রোধ প্রশমিত করে এবং খারাপ মৃত্যু থেকে রক্ষা করে ‘ (সুুনানে তিরমিজি: ৬৬৪)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: কবর আজাবের কারণ ও মুক্তির উপায়

এখানে ওইসব মৃত্যুকে বোঝানো হয়েছে যা থেকে স্বয়ং নবীজি (স.) পানাহ চেয়েছেন। যেমন রাসুলুল্লাহ (স.) প্রার্থনা করেছেন- ঘর-বাড়ি ভেংগে চাপা পড়ে, উঁচু জায়গা থেকে পড়ে, পানিতে ডুবে, আগুনে জ্বলে মৃত্যু ও অতি বার্ধক্য থেকে। আরও আশ্রয় চেয়েছেন মৃত্যুর সময় শয়তানের প্ররোচনা থেকে, জিহাদের ময়দান থেকে পলায়নপর অবস্থায় মৃত্যু বরণ করা থেকে এবং (সাপ, বিচ্ছুর) দংশনজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করা থেকে। (সুনানে আবু দাউদ: ১৫৫২)

আরও পড়ুন: যে নামাজে সব গুনাহ মাফ

সদকা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আমল। কোরআনে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সদকাকারীদের, তাঁর পথে খরচকারীদের তাঁর সন্তুষ্টি, সওয়াব ও জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন- اَلَّذِیۡنَ یُنۡفِقُوۡنَ اَمۡوَالَهُمۡ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ ثُمَّ لَا یُتۡبِعُوۡنَ مَاۤ اَنۡفَقُوۡا مَنًّا وَّ لَاۤ اَذًی ۙ لَّهُمۡ اَجۡرُهُمۡ عِنۡدَ رَبِّهِمۡ وَ لَا خَوۡفٌ عَلَیۡهِمۡ وَ لَا هُمۡ یَحۡزَنُوۡنَ ‘যারা আল্লাহর রাস্তায় তাদের সম্পদ ব্যয় করে, তারপর তারা যা ব্যয় করেছে, তার পেছনে খোঁটা দেয় না এবং কোনো কষ্টও দেয় না, তাদের জন্য তাদের রবের কাছে প্রতিদান রয়েছে এবং তাদের কোনো ভয় নেই, আর তারা চিন্তিতও হবে না। (সুরা বাকারা: ২৬২)


বিজ্ঞাপন


আরেক আয়াতে মানুষের দান-সদকার প্রতিদান সাতশত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- مَثَلُ الَّذِیۡنَ یُنۡفِقُوۡنَ اَمۡوَالَهُمۡ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ كَمَثَلِ حَبَّۃٍ اَنۡۢبَتَتۡ سَبۡعَ سَنَابِلَ فِیۡ كُلِّ سُنۡۢبُلَۃٍ مِّائَۃُ حَبَّۃٍ وَ اللّٰهُ یُضٰعِفُ لِمَنۡ یَّشَآءُ وَ اللّٰهُ وَاسِعٌ عَلِیۡمٌ ‘যারা আল্লাহর পথে তাদের সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উপমা একটি বীজের মত, যা উৎপন্ন করল সাতটি শীষ, প্রতিটি শীষে রয়েছে একশত দানা। আর আল্লাহ যাকে চান তার জন্য বাড়িয়ে দেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।’ (সুরা বাকারা: ২৬১)

আরও পড়ুন: বেশি সওয়াব লাভের দোয়া

সদকাকারীদের জন্য আরও অনেক পুরস্কার রয়েছে। যেমন- সদকা করলে ফেরেশতাদের দোয়া লাভ হয় (মুসলিম: ২২২৬)। সম্পদ পবিত্র হয় (আবু দাউদ: ৩৩২৬)। বিপদাপদ দূর হয় (বায়হাকি: ৮০৮৩)। ধন-সম্পদ বৃদ্ধি হয় (বুখারি: ৫৩৫২)। হায়াত বাড়ে (তাবারানি: ৩১) ইত্যাদি।

সুরা তাওবায় এসেছে, ‘হে নবী! তাদের ধন-সম্পদ থেকে সদকা নিয়ে তাদেরকে পাক পবিত্র করুন, (নেকির পথে) তাদের এগিয়ে দিন এবং তাদের জন্য রহমতের দোয়া করুন।’ (সুরা তাওবা: ১০৩) গোপন দানকারী সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, যারা গোপনে দান করবেন মহান আল্লাহ কঠিন কেয়ামতের দিন তাদের আরশের ছায়াতলে স্থান দেবেন। (বুখারি: ৬৬০)

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর