শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

যে দুই ওয়াক্ত নামাজ পড়লে জান্নাতের গ্যারান্টি দিয়েছেন নবীজি

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৫৯ পিএম

শেয়ার করুন:

যে দুই ওয়াক্ত নামাজ পড়লে জান্নাতের গ্যারান্টি দিয়েছেন নবীজি

ঈমান আনার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো নামাজ। দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ। প্রতি ওয়াক্ত নামাজই সমান গুরুত্বপূর্ণ হলেও দুই ওয়াক্ত নামাজের আলাদা গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে কোরআন-হাদিসে। এমনকি ওই দুই ওয়াক্ত নামাজের প্রতিদান হিসেবে জান্নাত লাভ হবে বলেছেন প্রিয়নবীজি (স.)। 

আবু বকর ইবনু আবু মুসা (রহ) থেকে তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দুই শীতের (ফজর ও আছরের) সালাত আদায় করবে, সে জান্নাতে দাখিল হবে।’ (সহিহ বুখারি: ৫৪৬)


বিজ্ঞাপন


আসুন জেনে নিই- কোরআন ও হাদিসের আলোকে ফজর ও আছর নামাজের ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত।

ফজর
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে ফজরের নামাজ অধিক গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্র কোরআনে ‘ফজর’ নামে একটি সুরাও রয়েছে। এমনকি মহান আল্লাহ শপথ করেছেন ফজরের। (সুরা ফজর: ১) ফজরের নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করল সে মহান আল্লাহর রক্ষণাবেক্ষণের অন্তর্ভুক্ত হলো...।’ (মুসলিম: ১৩৭৯) 

আরও পড়ুন: ফজরের সুন্নত ও ফরজ নামাজে যেসব সুরা পড়তেন নবীজি

অন্য হাদিসে রাসুল (স.) বলেছেন, ‘মুনাফিকদের জন্য ফজর ও এশার নামাজের চেয়ে অধিক ভারী কোনো নামাজ নেই। এ দুই নামাজের ফজিলত যদি তারা জানত, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা উপস্থিত হতো।’ (বুখারি: ৬৫৭) 


বিজ্ঞাপন


জাহান্নাম থেকে মুক্তির জন্য ফজরের নামাজ বিশেষ ভূমিকা পালন করে। বিখ্যাত তাবেয়ি আবু বকর বিন উমারাহ তাঁর পিতা রুআয়বাহ থেকে বর্ণনা করেন, আমি রাসুলুল্লাহ (স.)-কে বলতে শুনেছি, ‘এমন কোনো ব্যক্তি জাহান্নামে যাবে না, যে সূর্যোদয়ের আগের এবং সূর্যাস্তের আগের অর্থাৎ ফজর ও আছরের নামাজ আদায় করে।’ (মুসলিম: ১৩২২) ফজরের সুন্নত নামাজ সম্পর্কে  এক হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘ফজরের দুই রাকাত (সুন্নত) দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়ে উত্তম।’ (মুসলিম: ৭২৫)

আছর
আছর শব্দের অর্থ সময়। পবিত্র কোরআনে আছর নামে একটি সুরা রয়েছে। পবিত্র কোরআনে আছরের নামাজকে সালাত আল-ওসতা বা মধ্যবর্তী নামাজ হিসেবে সম্বোধন করা হয়েছে। কারণ আছর নামাজ ফজর-জোহর এবং মাগরিব-এশার মধ্যবর্তী নামাজ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘সকল নামাজের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাজের (আছর) ব্যাপারে। আর আল্লাহর সামনে একান্ত আদবের সঙ্গে দাঁড়াও।’ (সুরা বাকারা: ২৩৮)

আরও পড়ুন: আছরের নামাজ আদায়কারীর পুরস্কার

মুফাসসিরগণ এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, আছরের নামাজকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার কারণ হলো— সাধারণত এ সময় মানুষ কাজকর্মে ব্যস্ত থাকে। ফলে নামাজ আদায়ে গাফিলতি হওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা থাকে। আছরের নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে হাদিসে এসেছ, ‘ফেরেশতারা পালা বদল করে তোমাদের মাঝে আগমন করেন; একদল দিনে, একদল রাতে। আছর ও ফজরের নামাজে উভয় দল একত্র হয়। অতঃপর তোমাদের মাঝে রাত যাপনকারী দলটি উঠে যায়। তখন তাদের প্রতিপালক তাদের জিজ্ঞেস করেন, আমার বান্দাদের কোন অবস্থায় রেখে এলে? অবশ্য তিনি নিজেই তাদের ব্যাপারে সর্বাধিক অবগত। উত্তরে তারা বলে, আমরা তাদের নামাজে রেখে এসেছি এবং আমরা যখন তাদের কাছে গিয়েছিলাম তখনো তারা নামাজ আদায়রত অবস্থায় ছিল। (সহিহ বুখারি: ৫৫৫)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সময়মতো আদায়ের তাওফিক দান করুন। বিশেষ করে ফজর ও আছর নামাজকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর