আরবি ‘মিজান’ শব্দের অর্থ পরিমাপক বা দাঁড়িপাল্লা। পরকালে বান্দার ভালো-মন্দ কাজের পরিমাপ করার জন্য যে দাঁড়িপাল্লা স্থাপন করা হবে তাকে মিজান বলা হয়। ‘যাদের পাল্লা ভারী হবে তারাই সফলকাম হবে।’ (সুরা আরাফ: ৮)
মিজানের পাল্লা ভারী হওয়ার কিছু দোয়া বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। নিচে এ সম্পর্কিত উল্লেখযোগ্য ৩টি দোয়া বা জিকির তুলে ধরা হলো।
বিজ্ঞাপন
১. لا إله إلا الله উচ্চারণ: ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।’ অর্থ: ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ বা উপাস্য নেই।’ হাদিসে এসেছে, যদি সাত আসমান ও সাত জমিন এক পাল্লায় রাখা হয়, আর ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এক পাল্লায় রাখা হয়, তাহলে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর পাল্লা ভারী হবে। (শরহুস সুন্নাহ: ১২৭৩; মুস্তাদরাক হাকেম: ১৯৭২)
২. سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيمِ উচ্চারণ: ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আজিম।’ অর্থ: ‘মহান আল্লাহর প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি।’ হাদিসে এসেছে, এই দুই বাক্য জিহ্বায় অতি হালকা, মিজানে ভারী, আর দয়াময় আল্লাহর কাছে খুব পছন্দনীয়। (সহিহ বুখারি: ৬৬৮২)
আরও পড়ুন: অজস্র ফজিলতের ব্যতিক্রমী ২ আমল
৩. বিশেষ চার জিকির তথা سُبْحَانَ الله – اَلْحَمْدُ للهِ – لَا اِلَهَ اِلَّا الله – اَللهُ اَكْبَر ‘সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবর। এই চার জিকিরের ফজিলত নিয়ে অসংখ্য হাদিস রয়েছে। সবগুলো হাদিসের মূলকথা হলো- এ জিকিরগুলো আল্লাহর কাছে খুব প্রিয়, অগণিত সওয়াব লাভের মাধ্যম এবং মিজানের পাল্লাকে ভারী করবে। জিকিরগুলো একসঙ্গে মিলিয়েও পড়া যায়। যেমন- সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবর। আগপিছ করেও পড়া যায়।
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য, মিজানের পাল্লাকে ভারী করার আমলগুলো হলো- জানাজা ও দাফনে অংশগ্রহণ করা, সওয়াবের আশায় সন্তানের মৃত্যুতে ধৈর্যধারণ করা, সদাচরণ করা ইত্যাদি। সবচেয়ে বেশি যে কারণে মিজানের পাল্লায় ভারী হবে সেটি হলো উত্তম চরিত্র। রাসুল (স.) বলেছেন, ‘মিজানের পাল্লায় সচ্চরিত্রের চেয়ে অধিক ভারী আর কিছুই নেই।’ (আবু দাউদ: ৪৭৯৯)

