রোববার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

হাদিসে মন্দ লোক চেনার সহজ সূত্র

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:০১ পিএম

শেয়ার করুন:

হাদিসে মন্দলোক চেনার সহজ সূত্র

খারাপ মানুষের পরিচয় গায়ে লেখা থাকে না। কিন্তু আচার-আচরণে মানুষের খারাপ স্বভাবগুলো ফুটে উঠে। তখন আমরা বলে থাকি, এই লোকটি খারাপ, বিশ্রী তার ব্যবহার। পক্ষান্তরে ওই লোকটি ভালো, কতো নম্র তার আচরণ। ইসলামি স্কলাররা মানুষের এমন কিছু মন্দ স্বভাবের কথা বলেছেন, যেগুলো দেখলে বলা যায়- লোকটি মন্দ। তেমন কিছু স্বভাব বা মন্দ লক্ষণ হলো- অহংকার করা, অশ্লীল বাক্যে কথা বলা, কথায় কথায় মিথ্যা বলা, নেশাদ্রব্য পান করা, কুটনামি করা, বাচাল, খোঁটা দেওয়া, গোয়েন্দাগিরি করা, গিবত করা ইত্যাদি চরিত্রের লোককে ইসলামের দৃষ্টিতে মন্দ প্রকৃতির মানুষ বিবেচনা করা হয়।

কিন্তু হাদিস শরিফে মন্দ লোক চেনার সহজ একটি সূত্রের কথা বলা হয়েছে। সেটি হলো- মানুষকে হেয়জ্ঞান করা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা, উপহাস বা বিদ্রূপ করা। হাদিসের ভাষ্যমতে, এ ধরণের স্বভাব কারো মধ্যে থাকলে বুঝতে হবে, লোকটি মন্দ হওয়ার ব্যাপারে আর কোনো সন্দেহ নেই। কেননা রাসুলুল্লাহ (স.) এ অভ্যাসকে মন্দ লোক চেনার মানদণ্ড বলে ঘোষণা দিয়েছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির মন্দ প্রমাণিত হওয়ার জন্য এতটুকু যথেষ্ট যে, সে তার মুসলমান ভাইকে তুচ্ছজ্ঞান করে।’ (ইবনে মাজাহ: ৪২১৩)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: নেকি খেয়ে ফেলে যে ৬ গুনাহ 

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা এ স্বভাব থেকে মুমিনদের সতর্ক করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! কোনো সম্প্রদায় যেন অন্য সম্প্রদায়কে ঠাট্টা-বিদ্রূপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রূপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর নারীরা যেন অন্য নারীদেরকে ঠাট্টা-বিদ্রূপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রূপকারিণীদের চেয়ে উত্তম। তোমরা একে অন্যের নিন্দা করো না, একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। ঈমান গ্রহণের পর (ঈমানের আগে কৃত অপরাধকে যা মনে করিয়ে দেয় সেই) মন্দ নাম কতই না নিকৃষ্ট! (এ সব হতে) যারা তাওবা করে না, তারাই জালিম।’ (সুরা হুজরাত: ১১)

বিদ্রূপকারীরা পরকালে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য আফসোস করবে। আল্লাহ তাআলা এ বিষয়ে সতর্ক করে বলেন, ‘যাতে কাউকেও বলতে না হয়, হায় আফসোস! আল্লাহর প্রতি আমার কর্তব্যে আমি যে শৈথিল্য করেছি তার জন্য! আর আমি তো ঠাট্টাকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম।’ (সুরা জুমার: ৫৬)

রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘তোমাদের কোনো ভাই যাতে অন্য মুসলিম ভাইকে ছোট না করে অর্থাৎ তার মান-সম্মান ক্ষুণ্ন না করে। কেননা প্রত্যেক মুসলিমের প্রতি অন্য ভাইয়ের রক্ত, মাল ও সম্মানকে ক্ষুণ্ন করা হারাম করা হয়েছে।’ (সহিহ মুসলিম ৪/১৯৮৬, হাদিস:২৫৬৪)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: ১০টি কঠিন গুনাহ হয় শুধু মুখের কারণে

পরকালে উপহাসকারীর সঙ্গে উপহাস করা হবে। হাদিসে এসেছে, ‘একজন উপহাসকারীর জন্য বেহেশতের দরজা খুলে দেয়া হবে এবং তাকে বলা হবে ‘এসো।’ সে তার দুঃখ ও অসহায়ত্ব নিয়ে সামনে অগ্রসর হবে এবং যখন সে ভেতরে প্রবেশ করতে চাইবে, তখনই তার সামনে বেহেশতের দরজা বন্ধ হয়ে যাবে।’(কানজুল উম্মাল, হাদিস: ৮৩২৮)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে বিনয়ী ও সত্যবাদী হওয়ার তাওফিক দান করুন। মুসলিম ভাইয়ের সম্মান রক্ষায় সদা সচেতন থাকার তাওফিক দান করুন। মানুষকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা ও তুচ্ছজ্ঞান করা থেকে আমাদের হেফাজত করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর