বাংলাদেশের যেকোনো পরিস্থিতিতে ক্রেডিট নেওয়ার মানুষের অভাব হয় না। বিশেষ করে সম্মিলিত কোনো চেষ্টা কিছুটা সফল হলে সুবিধা নেওয়ার জন্য বেরিয়ে আসে নানাজনের নাম। অর্থাৎ পেছনে থেকে কলকাড়ি নেড়েছেন বা যার ভূমিকা ছাড়া সফল হতো না—এমন একাধিক নাম সামনে আসে মাস্টারমাইন্ড পরিচয়ে। ইসলাম এ ধরণের কথা ও কনসেপ্ট সমর্থন করে না। কারণ পবিত্র কোরআনের ঘোষণা অনুযায়ী, আল্লাহ তাআলার ইচ্ছার বাইরে কোনোকিছুই হয় না। তিনিই সবকিছুর নিয়ন্ত্রক। সবাই যে যার মতো পরিকল্পনা করতে পারে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আল্লাহর পরিকল্পনাই বাস্তবায়িত হয়।
এজন্যই চলমান ‘মাস্টারমাইন্ড বিতর্ক’ থেকে মুখ ফেরাতে আসল মাস্টারমাইন্ডের পরিচয় তুলে ধরেছেন বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার মিজানুর রহমান আজহারী। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আসল মাস্টারমাইন্ড ছিলেন মহান আল্লাহ তাআলা।’ এর স্বপক্ষে পবিত্র কোরআনের একটি আয়াত তুলে ধরেন মাওলানা আজহারী। আয়াতটি হলো- ‘তারা ষড়যন্ত্র করলো। আর আল্লাহ নিগূঢ় কৌশল অবলম্বন করলেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ কুশলী।’ (সুরা আলে-ইমরান: ৫৪)
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: বৈষম্য ও ইনসাফ নিয়ে সরকারের প্রতি আজহারীর নতুন বার্তা
নিজেকেই যদি একবার প্রশ্ন করি- যুগ যুগ ধরে অনিয়ম প্রতিষ্ঠিত ছিল, সেসময় মাস্টারমাইন্ডরা কোথায় ছিল? এর জবাব কি আছে? বস্তুত আল্লাহ তাআলা পরীক্ষা করার জন্য কিংবা শাস্তি হিসেবেও কোনো জাতীর ওপর বোঝা চাপিয়ে দেন। তাঁর ইচ্ছা না হওয়া পর্যন্ত ওই বোঝা সরানো কারো পক্ষে সম্ভব হয় না।
একইভাবে আল্লাহ তাআলা চাইলে ভবিষ্যতে আরও পরিবর্তন আনতে পারেন কিংবা বোঝা চাপাতে পারেন। তখন কোনো মাস্টারমাইন্ড বিরোধিতা করলেও আল্লাহর ইচ্ছাকে ঠেকাতে পারবে না। এটাই ইসলামি বিশ্বাস।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। এই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড ছিল কারা, এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে আলোচনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সাইয়েদ আবদুল্লাহ বলেন, জুলাইয়ের এই আন্দোলনের সফল হওয়ার একমাত্র কারণ এই আন্দোলনের কোন মাস্টারমাইন্ড না থাকা। এ আন্দোলনের যদি কোন মাস্টারমাইন্ড থাকতো তাহলে এ আন্দোলন কখনোই সফল হতো না। তিনি আরও বলেন, এ আন্দোলন যদি সফল না হতো তখন অনেক সমন্বয়ক ও মাস্টারমাইন্ডরা পরিচয় দিতে লজ্জা পেত, মুখ লুকিয়ে রাখত। যে মুহূর্তে হাসিনার পতন ঘটিয়ে ফেলেছে আন্দোলনকে ছিনিয়ে নেয়ার জন্য এ আন্দোলনের ক্রেডিট নেয়ার জন্য লোকের অভাব নেই। এদিকে পাঁচ তারিখের পর থেকে অনেক বিপ্লবীর জন্মে হয়ে গেছে।