মুসলমানদের ওপর দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ। প্রতি ওয়াক্ত নামাজ নির্ধারিত সময়ে আদায় করাও জরুরি। প্রত্যেক ওয়াক্তে রয়েছে কিছু ফরজ, কিছু সুন্নতে মুয়াক্কাদা ও কিছু সুন্নতে জায়েদা বা নফল। সুন্নতে মুয়াক্কাদা না পড়লে গুনাহ হবে। সুন্নতে জায়েদা পড়া অনেক সওয়াবের, না পড়লে গুনাহ নেই। কিন্তু ফরজ না পড়লে সরাসরি আল্লাহর আদেশ লঙ্ঘন হবে। এর জন্য কাজা করা জরুরি এবং সময়মতো না পড়ার কারণে তাওবাও করতে হবে।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে মোট ১৭ রাকাত ফরজ ও ১২ রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা রয়েছে; আর কিছু সুন্নতে জায়েদা। নিচে সবগুলো নামাজের জরুরি রাকাতগুলো তথা ফরজ ও সুন্নতে মুয়াক্কাদার রাকাতসংখ্যা তুলে ধরা হলো।
বিজ্ঞাপন
ফজর
ফজরের নামাজ মোট ৪ রাকাত। প্রথমে ২ রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এরপর ২ রাকাত ফরজ। ফজর নামাজের প্রথম দুই রাকাত সুন্নত নামাজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কোনোভাবে এটা ত্যাগ করা উচিত নয়।
আরও পড়ুন: ফজরের কাজা কখন পড়বেন, সুন্নত পড়তে হবে কি?
জোহর
জোহরের নামাজ মোট ১২ রাকাত। প্রথম ৪ রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এরপর ৪ রাকাত ফরজ। এরপর ২ রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা ও এরপরে ২ রাকাত নফল।
আছর
আছরের নামাজ ৮ রাকাত। প্রথমে ৪ রাকাত সুন্নতে জায়েদা এরপর ৪ রাকাত ফরজ। আছরের ফরজ নামাজের পর কোনো নামাজ পড়া মাকরুহ। তবে, ওমরকাজা নামাজ পড়া যাবে।
মাগরিব
মাগরিবের ফরজ নামাজ ৩ রাকাত। তারপর ২ রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এরপর কেউ কেউ ২ রাকাত নফল পড়ে থাকেন। সেই হিসেবে মাগরিব নামাজ মোট ৭ রাকাত।
বিজ্ঞাপন
এশা
এশার নামাজ কারো মতে ১৫ রাকাত, আবার কারো মতে ১৭। প্রথমে ৪ রাকাত সুন্নতে জায়েদা। এরপরে ৪ রাকাত ফরজ। এরপর ২ রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এরপরে অনেকে ২ রাকাত নফল আদায় করে থাকেন। সবশেষে ৩ রাকাত বিতির, যা ওয়াজিব তথা অবশ্য পালনীয়। বিতির নামাজ এশার ওয়াক্তের অন্তর্ভুক্ত হলেও ফজরের ওয়াক্ত না হওয়া পর্যন্ত আদায় করা যায়। যারা রাতে নফল পড়েন বা তাহাজ্জুদ পড়েন তাদের জন্য বিতির সবশেষ আদায় করাই উত্তম। যারা এশার নামাজেই বিতির পড়ে নেন, তারা চাইলে বিতিরের পরেও ২ রাকাত নফল পড়তে পারেন। সেই হিসেবে এশার নামাজ মোট ১৭ রাকাত, অন্যথায় ১৫ রাকাত।
উল্লেখ্য, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মোট ১২ রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা আদায়ে সচেষ্ট হতে হবে। অসুস্থ হলে বা সফরে থাকলে আদায় না করলেও চলবে। সুন্নতে মুয়াক্কাদা ছুটে গেলে কাজা আদায়ের সুযোগ নেই। তবে, ফজরের সুন্নতের বিশেষ মর্যাদার কারণে সূর্যোদয়ের পরে কাজা করা উত্তম। এছাড়া জোহরের প্রথম ৪ রাকাত সুন্নত ফরজ পড়ার পর আদায়ের সুযোগ আছে বলে আলেমগণ মত দেন। আর কোনো ওয়াক্তের সুন্নতে মুয়াক্কাদা কাজা আদায়ের অবকাশ নেই। আর ফরজ নামাজ কাজা হলে পরবর্তী নামাজের আগেই তা আদায় করবেন।
আল্লাহ তাআলা আমাদের নামাজের ব্যাপারে বেশি সচেতনতা করুন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যথাসময়ে যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

