সদকাতুল ফিতর বা ফিতরা রমজানের গুরুত্বপূর্ণ একটি আর্থিক ইবাদত। এটি জাকাতেরই একটি প্রকার। সদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব। এর দুটি তাৎপর্য বর্ণিত হয়েছে। ১. অশালীন কথা ও কাজে রোজার যে ক্ষতি হলো তা পূরণের জন্য। ২. নিঃস্ব লোকের আহার জোগানোর জন্য। (আবু দাউদ: ১৬০৯)
ইসলামি শরিয়াহমতে, আটা, যব, কিশমিশ, খেজুর ও পনির ইত্যাদি পণ্যগুলোর যেকোনো একটি দিয়ে ফিতরা প্রদান করা যায়। সদকাতুল ফিতরের পরিমাণ সম্পর্কে হাদিস শরিফে দুটি মাপকাঠি নির্ধারণ করা হয়েছে। ১. ‘এক সা’ ২.‘অর্ধ সা’। খেজুর, পনির, জব ও কিশমিশ দ্বারা আদায়ের ক্ষেত্রে এক ‘সা’=৩২৭০.৬০ গ্রাম (প্রায়), অর্থাৎ তিন কেজি ২৭০ গ্রামের কিছু বেশি। এ ছাড়া গম দ্বারা আদায় করতে চাইলে ‘নিসফে সা’=১৬৩৫.৩১৫ গ্রাম, অর্থাৎ এক কেজি ৬৩৫ গ্রামের কিছু বেশি প্রযোজ্য হবে। (আওজানে শরইয়্যাহ, পৃষ্ঠ- ১৮)
বিজ্ঞাপন
আমাদের দেশের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গবেষণা মতে, ‘এক সা’-এর পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়, তিন কেজি ৩০০ গ্রাম। আর ‘আধা সা’-এর পরিমাণ এক কেজি ৬৫০ গ্রাম। সামর্থ্য থাকার পরও সর্বনিম্ন দ্রব্যের ফিতরা দেওয়া অপছন্দনীয়। কারণ হাদিস শরিফে এসেছে একবার রাসুলুল্লাহ (স.)-কে সর্বোত্তম দান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি ইরশাদ করেন, ‘দাতার নিকট যা সর্বোত্কৃষ্ট এবং যার মূল্যমান সবচেয়ে বেশি।’ (বুখারি: ২৫১৮)
আরও পড়ুন
যেসব পণ্যের জাকাত দেওয়া ফরজ
যাদের জাকাত দিলে আদায় হবে না
নিচে ইসলামি ফাউন্ডেশন নির্ধারিত ২০২৪ সালের ৫ রকম ফিতরার পরিমাণ দেওয়া হলো।
১. গম ও আটা: এক কেজি ৬৫০ গ্রাম গম ও আটার বর্তমান বাজারমূল্য ১১৫ টাকা;
বিজ্ঞাপন
২. যব: তিন কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের যবের মূল্য ৪০০ টাকা;
৩. কিশমিশ: তিন কেজি ৩০০ গ্রাম কিশমিশের দাম ২,১৪৫ টাকা;
৪. খেজুর: তিন কেজি ৩০০ গ্রাম খেজুরের দাম ২,৪৭৫ টাকা;
৫. পনির: তিন কেজি ৩০০ গ্রাম পনিরের দাম ২,৯৭০ টাকা।
সদকাতুল ফিতর খাদ্যদ্রব্য দিয়ে যেমন আদায় করা যায়, তেমনি টাকা দিয়েও আদায় করা যায়। কারণ সলফে সালেহিনরা সহজ ও উপযোগী বিবেচনায় উভয়ভাবে ফিতরা আদায় করতেন। (বুখারি: ১১৪৭; মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা: ১০৪৭২)

