সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

নিশ্চিত শবে কদর পেতে রাতের শুরুতে যা করবেন

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৩০ পিএম

শেয়ার করুন:

নিশ্চিত শবে কদর পেতে রাতের শুরুতে যা করবেন

শবে কদর মহিমান্বিত এক রাত। যে রাতকে আল্লাহ তাআলা বলেছেন ‘হাজার মাসের চেয়ে উত্তম’ (সুরা কদর: ৩)। অতএব এই রাতের যেকোনো আমলের সওয়াব টানা হাজার মাস করার মতোই। তাই লাইলাতুল কদর সম্পর্কে বেখবর হওয়া এবং এ থেকে বঞ্চিত হওয়া মুসলমানের জন্য খুবই দুঃখজনক।

শবে কদরের বিশেষ ফজিলত লাভের আশায় আল্লাহ রাসুল (স.) রমজানের শেষ দশকে ইতেকাফ করতেন এবং ইবাদতে আত্মমগ্ন থাকতেন। উম্মতকেও শবে কদর অনুসন্ধানের নির্দেশনা দিতেন। আয়েশা (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদরের সন্ধান কর।’ (সহিহ বুখারি: ২০১৭, সহিহ মুসলিম: ১১৬৯)


বিজ্ঞাপন


শবে কদর হাজার মাসের চেয়ে উত্তম

মহাগ্রন্থ কোরআনুল কারিম নাজিল হয়েছে লাইলাতুল কদরে। এ রাতের মর্যাদা সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আমি একে নাজিল করেছি মহিমান্বিত রাতে (লাইলাতুল কদর)। আপনি কি জানেন মহিমান্বিত রাত কী? মহিমান্বিত রাত হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। সেই রাতে প্রতিটি কাজের জন্য ফেরেশতারা এবং রুহ তাদের প্রতিপালকের আদেশক্রমে অবতীর্ণ হয়। সেই রাতে শান্তিই শান্তি, ফজর হওয়া পর্যন্ত।’ (সুরা কদর: ১-৫)

শবে কদরের ইবাদতে অতীতের গুনাহ মাফ হয়ে যায়


বিজ্ঞাপন


প্রিয়নবী (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় কদরের রাতে ইবাদতের মধ্যে রাত জাগবে, তার আগের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে’ (সহিহ বুখারি: ৩৫)

নিশ্চিত শবে কদর পেতে যে আমল করবেন

শবে কদর পাওয়ার জন্য একটি আমলের বিকল্প নেই। সেটি হলো- মাগরিব, এশা ও ফজরের নামাজ মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে আদায় করা। তাহলে হাদিস অনুযায়ী শবে কদরের ফজিলত লাভ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। কেননা হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি এশা ও ফজর জামাতের সঙ্গে পড়ে, সে যেন সারা রাত দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ে।’(মুসলিম: ৬৫৬)

তাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে- জামাতে নামাজ মিস না করা। অন্তত এশা ও ফজর অবশ্যই জামাতে পড়া। তাহলে হাদিস অনুযায়ী, সারারাত নামাজের সওয়াব পাওয়া যাবে। আর সারারাত ইবাদত মানে শবে কদর পাওয়ার ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ নেই।

তবে, যারা ইতেকাফ করছেন তারা নিশ্চিতভাবেই শবে কদর লাভ করবেন। ইতেকাফ অবস্থায় কেউ যদি রাতে ঘুমিয়েও থাকে, তবু তাকে ইবাদতকারীদের মধ্যে শামিল করা হবে। তখন শবেকদরের প্রতিটি মুহূর্ত ইবাদতে ব্যয় করার ফজিলত অর্জন করবেন। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, في المعتكف هو يعكف الذنوب و يجري له من الحسنات كعامل الحسنات كلها  ‘সে নিজেকে গুনাহ থেকে বিরত রাখে এবং নেককারদের সকল নেকী তার জন্য লেখা হয়। (সুনানে ইবনে মাজাহ, বাবুস সাওম)

‘হাজার মাসের চেয়ে উত্তম’ এর ব্যাখ্যা

হাজার মাসের চেয়ে উত্তম অর্থ শুধু যে একহাজার মাসের চেয়ে উত্তম-বিষয়টি এমন নয়, বরং অনেক বেশি বোঝাতেও হাজার শব্দটা ব্যবহার করা হয়। তারপরও আমরা যদি এখানে শুধু এক হাজার মাসই ধরি এর সময় দাঁড়ায় ৮৩ বছর ৪ মাস। তার মানে ৮৩ বছর ৪ মাস পর্যন্ত ইবাদত করার যে ফজিলত বা সওয়াব পাওয়া যায় তা এ এক রাতের ইবাদতের দ্বারাই মহান আল্লাহ প্রদান করে থাকেন। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘এ মাসে (রমজানে) এমন একটি রাত আছে, যা হাজার রাতের চেয়ে উত্তম। যে এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো, সে সত্যিই বঞ্চিত হলো।’ (সুনানে নাসায়ি: ২১০৮)

এমএইচটি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর