রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

মুমিন আসলে কারা, কোরআন কী বলছে

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০২৪, ১২:৫৯ পিএম

শেয়ার করুন:

মুমিন আসলে কারা, কোরআন কী বলছে

ঈমান অর্থ বিশ্বাস। মুমিন মানে বিশ্বাসী। তাওহিদ, রিসালাত ও আখেরাতে বিশ্বাসীকে মুমিন বলা হয়। মুমিনের পরিচয় বর্ণনায় মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘মুমিন তো তারাই, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছে। অতঃপর তাতে কোনো ধরনের সন্দেহ পোষণ করেনি। আর তাদের জীবন ও সম্পদ দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে। প্রকৃতপক্ষে তারাই হলো সত্যনিষ্ঠ।’ (সুরা হুজরাত: ১৫)

সুরা মুমিনুনের শুরুতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মুমিনের কিছু বিশেষ গুণ ও বৈশিষ্ট্যের কথা তুলে ধরেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই সফলতা অর্জন করেছ মুমিনরা, যারা তাদের নামাজে আন্তরিকভাবে বিনীত। যারা অহেতুক বিষয় থেকে বিরত থাকে। যারা জাকাত সম্পাদনকারী। যারা নিজ লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করে; নিজেদের স্ত্রী ও মালিকানাধীন দাসীদের ছাড়া অন্য সবার থেকে। কেননা এতে তারা নিন্দনীয় হবে না। তবে কেউ এ ছাড়া অন্য কিছু কামনা করলে তারাই হবে সীমা লঙ্ঘনকারী। এবং যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। এবং যারা নিজেদের নামাজের পরিপূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণ করে। এরাই হলো সেই ওয়ারিশ, যারা জান্নাতুল ফিরদাউসের মিরাস লাভ করবে। তারা তাতে সর্বদা থাকবে।’ (সুরা মুমিনুন: ১-১১)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: ঈমান মজবুত হয় যেসব আমলে

এই আয়াতগুলোতো দেখা যাচ্ছে- মুমিন হতে হলে বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে। পবিত্র কোরআনের অন্যান্য জায়গায় মুমিনের আরও কিছু বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়। প্রকৃতপক্ষে মুমিন না হলে সব আমল বৃথা। আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনে, তাঁর প্রিয় হতে হলে এবং আখেরাতে মুক্তি পেতে চাইলে মুমিন হওয়া জরুরি। মুমিনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু বৈশিষ্ট্য কোরআনের আলোকে এখানে উল্লেখ করা হলো। 

১. নামাজে আন্তরিক। (সুরা মুমিনুন: ২)
২. অনর্থক কথা-কাজ থেকে দূরে থাকে। (সুরা মুমিনুন: ৩)
৩. জাকাত প্রদানকারী। (সুরা মুমিনুন: ৪)
৪. লজ্জাস্থানের হেফাজতকারী। (সুরা মুমিনুন: ৫)
৫. আমানত রক্ষাকারী। (সুরা মুমিনুন: ৮; সুরা নিসা: ৫৮)
৬. প্রতিশ্রুতি পূরণকারী। (সুরা মুমিনুন:৮; সুরা বনি ইসরাইল: ৩৪)
৭. নামাজের পরিপূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণকারী। (সুরা মুমিনুন: ৯)
৮. জান-মাল দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদকারী। (সুরা হুজরাত: ১৫)
৯. ঈমান বিষয়ে সন্দেহপোষণ করে না। (সুরা হুজরাত: ১৫)
১০. আল্লাহকে ভয় করে। (সুরা আনফাল: ১)

আরও পড়ুন: ঈমান ভঙ্গের ১০ কারণ


বিজ্ঞাপন


১১. আল্লাহর বাণী শুনলে ঈমানে দৃঢ়তা বাড়ে। (সুরা আনফাল: ২)
১২. দান করে। (সুরা আনফাল: ৩)
১৩. অন্য মুমিনের প্রতি আন্তরিক হয়। (সুরা তাওবা: ৭১)
১৪. মানুষকে সৎকাজে উদ্বুদ্ধ করে। (সুরা তাওবা: ৭১)
১৫. অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে। (সুরা তাওবা: ৭১)
১৬. আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অনুগত হয়। (সুরা তাওবা: ৭১)
১৭. গুনাহ হয়ে গেলে দ্রুত তাওবা করে। (সুরা তাওবা: ১১২)
১৮. ইবাদতে আগ্রহী হয়। (সুরা তাওবা: ১১২)
১৯. আল্লাহর প্রশংসাকারী হয়। (সুরা তাওবা: ১১২)
২০. রোজা রাখে। (সুরা তাওবা: ১১২)
২১. পার্থিব লোভ-লালসা থেকে মুক্ত থাকে। (সুরা নুর: ৩৭)
২২. আল্লাহর উপদেশ গ্রহণ করে। (সুরা সাজদাহ: ১৫)
২৩. অহংকার করে না। (সুরা সাজদাহ: ১৫)
২৪. গুরতর পাপ ও অশ্লীলতা থেকে দূরে থাকে। (সুরা আশ শুরা: ৩৭)
২৫. ক্ষমাশীল হয়। (সুরা আশ শুরা: ৩৭)
২৬. আত্মপ্রশংসা থেকে দূরে থাকে। (সুরা নাজম: ৩২)
২৭. বান্দার হকের ব্যাপারে সতর্ক থাকে। (সুরা দাহার: ৭-১০)
২৮. বিশুদ্ধ আকিদার অধিকারী হয়। (সুরা বাকারা: ১৭৭)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে উল্লেখিত গুণাবলী অর্জন করার এবং অটল থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর