সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

সহজে বিয়ে হওয়ার কার্যকরী আমল

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ০৭:৩৩ পিএম

শেয়ার করুন:

সহজে বিয়ে হওয়ার কার্যকরী আমল

বিয়ে আল্লাহপ্রদত্ত বিশেষ নেয়ামত এবং রাসুলুল্লাহ (স.)-এর গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। বয়স ও উপার্জনের দিক দিয়ে উপযুক্ত হলে দ্রুত বিয়ে করা হাদিসের শিক্ষা। সহজে বিয়ে হওয়ার জন্য কিছু আমল করতে বলেন আলেমরা। যেমন—

১. গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা এবং রোজা রাখা। নবীজি (স.) বলেছেন, ‘হে যুবকেরা! তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিবাহ করে নেয়। কারণ, বিবাহ চক্ষুকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। আর যে ব্যক্তি তাতে অক্ষম, সে যেন রোজা রাখে, কেনা তা যৌন শক্তিকে হ্রাস করে।’ (বুখারি: ৫০৬৬; মুসলিম: ১৪০০) আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা তিন প্রকার মানুষকে সাহায্য করা নিজের কর্তব্য হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। আল্লাহ তাআলার পথে জিহাদকারী, মুকাতাব দাস—যে চুক্তির অর্থ পরিশোধের ইচ্ছা করে এবং বিয়েতে আগ্রহী লোক—যে বিয়ের মাধ্যমে পবিত্র জীবন যাপন করতে চায়।’ (তিরমিজি: ১৬৫৫)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: কত বছর বয়সে বিয়ে করা ‍সুন্নত

২. হালাল উপার্জনের চেষ্টা করা। নবীজি (স.) বলেছেন, ‘হে যুবকেরা! তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিবাহ করে নেয়। কারণ, বিবাহ চক্ষুকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে..।’ (বুখারি: ৫০৬৬) এই হাদিস থেকে বুঝা যায়, বিয়ে করার জন্য সামর্থ্যবান হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তবে এটাও সত্য যে, বিয়ে সাবলম্বী হওয়ার বড় মাধ্যম। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহহীন তাদের বিবাহ দাও, এবং তোমাদের সৎকর্মশীল দাস-দাসীদেরও, তারা অভাবগ্রস্ত হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের অভাবমুক্ত করবেন, আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও সর্বজ্ঞ।’ (সুরা নুর: ৩২) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় আবু বকর (রা.) তরুণ-তরুণীদের উৎসাহ দিয়ে বলতেন, ‘তোমরা বিয়ে করে আল্লাহর নির্দেশ পালন করো। তিনি তোমাদের দেওয়া অঙ্গীকারও পালন করবেন।’ (তাফসিরে ইবনে আবি হাতেম: ৮/২৫৮২) তাছাড়া আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.) বলেন, ‘তোমরা বিয়ের মাধ্যমে প্রাচুর্যের অনুসন্ধান করো।’ (জামিউত তাবিল: ১৭/২৭৫)

আরও পড়ুন: যেসব আমলে হালাল রিজিকের দরজা খুলে যায়

৩. নিজেদের অবস্থান বিবেচনা করে সমকক্ষ কোনো দ্বীনদার পরিবার থেকে বিয়ে করার চেষ্টা করা। আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘তোমরা ভবিষ্যৎ বংশধরদের স্বার্থে উত্তম নারী গ্রহণ করো এবং সমতা (কুফু) বিবেচনায় বিয়ে করো, আর বিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রেও সমতার প্রতি লক্ষ্য রাখো।’ (ইবনে মাজাহ: ১৯৬৮) অন্য হাদিসে রাসুল (স.) বলেছেন, ‘তোমাদের কাছে এমন কোনো ব্যক্তি বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসে, যার চরিত্র ও ধর্মানুরাগ সম্পর্কে তোমরা সন্তুষ্ট, তার সঙ্গে (তোমাদের মেয়েদের) বিয়ে দাও...।’ (ইবনে মাজাহ: ১৯৬৭)


বিজ্ঞাপন


৪. বেশি বেশি সালাতুল হাজত নামাজ পড়া। যেকোনো প্রয়োজনে সালাতুল হাজত উপকারী আমল। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘সঙ্গত কোনো প্রয়োজন পূরণের জন্য বান্দা নিজ প্রভুর কাছে ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করবে।’ (সুরা বাকারা: ১৫৩)

আরও পড়ুন: সালাতুল হাজতের নিয়ম-কানুন

‘সালাতুল হাজত’ নামাজের আলাদা কোনো নিয়ম নেই। স্বাভাবিক নামাজের মতোই উত্তমভাবে অজু করে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বে। চাইলে চার রাকাতও পড়া যাবে। নামাজশেষে আল্লাহ তাআলার হামদ ও ছানা (প্রশংসা) এবং নবী (স.)-এর ওপর দরুদ শরিফ পাঠ করে— নিজের মনের কথা ব্যক্ত করে আল্লাহর নিকট দোয়া করবে। 

৫. দোয়া করা। বিয়ের জন্য কোরআনে বর্ণিত বিশেষ একটি দোয়া রয়েছে। দোয়াটি প্রত্যেক নামাজের পর বেশি বেশি পড়তে হবে। নামাজের পর ছাড়াও পড়া যাবে। যেকোনো সময়ে যেকোনো জায়গায় পড়া যাবে। দোয়াটি হলো- رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا উচ্চারণ: রব্বানা হাব লানা মিন আজওয়াজিনা ওয়া জুররিয়্যাতিনা কুররাতা আ’ইউন, ওয়া জাআলনা লিল মুত্তাকিনা ইমামা। অর্থ: ‘হে আমাদের রব, আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান করুন, যারা আমাদের চোখ শীতলকারী হবে। আমাদের আল্লাহভীরুদের জন্য আদর্শ করুন।’ (সুরা: ফুরকান: ৭৪)

এছাড়াও হাদিসে বর্ণিত বিশেষ দোয়াগুলো ও আল্লাহর গুণবাচক নামগুলোর আমলও করা যেতে পারে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সকল অবিবাহিত যুবক-যুবতীদের যথাসময়ে বিয়ে করার তাওফিক দান করুন। পবিত্র জীবন-যাপনের তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর