বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

ইস্তেখারার পর স্বপ্নে কিছু না দেখলে যা করবেন

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:০৫ পিএম

শেয়ার করুন:

ইস্তেখারার পর স্বপ্নে কিছু না দেখলে যা করবেন

ইস্তেখারা হলো- কোনো বিষয় নির্বাচন করার ক্ষেত্রে আল্লাহর সাহায্য চাওয়া, কল্যাণ চাওয়া। ইস্তেখারার মাধ্যমে মূলত দুই বিষয়ের মধ্যে উত্তমটি বাছাই করতে আল্লাহর সাহায্য চাওয়া হয়। ইস্তেখারা সুন্নত আমল। যা সহিহ বুখারির হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। অনেকে এটাকে মোস্তাহাব বলেছেন। 

জাবের বিন আবদুল্লাহ আল-সুলামি (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুল (স.) তাঁর সাহাবিদের সব বিষয়ে ইস্তেখারা করার শিক্ষা দিতেন; যেভাবে তিনি তাদের কোরআনের সুরা শিক্ষা দিতেন। তিনি বলতেন, ‘তোমাদের কেউ যখন কোনো কাজের উদ্যোগ নেয়, তখন সে যেন দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে। অতঃপর এই দোয়া (নিচে উল্লেখ করা হয়েছে) পড়ে। (সহিহ বুখারি: ৫৯৪০, তিরমিজি: ৬৪৮)


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: যে দোয়া পড়লে মনের আশা পূরণ হয়

প্রশ্ন হলো- নিয়ম অনুযায়ী ইস্তেখারা করার পরও স্বপ্নে কোনো নির্দেশনা না পেলে কী করতে হবে? এর উত্তরে আলেমরা বলেন, আসলে ইস্তেখারার জন্য স্বপ্ন দেখা জরুরি নয়। মনে উদয় হওয়াই গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ ইস্তেখারার মাধ্যমে শুধুই স্বপ্নেই সমাধান বুঝা যাবে বিষয়টি এমন নয়। মূল বিষয় হলো- ইস্তেখারা শেষে ঘুমানোর পর জাগ্রত হয়ে মন যেদিকে সায় দিবে, বা যেদিকে আগ্রহী হয়ে উঠবে, সেটিই ফলাফল মনে করবে। (তুহফাতুল আলমায়ি: ২/৩৩৮, বেহেশতি জেওর)

ইস্তেখারা নামাজের নিয়ম
ইস্তেখারা নামাজের পদ্ধতি হলো- প্রথমে পবিত্র হয়ে ইস্তেগফার করে দোয়া-দরুদ পাঠ করে নিজের যে সমস্যা আছে তা নিয়তে রেখে সুরা ফাতেহার সঙ্গে যেকোনো সুরা মিলিয়ে দুই রাকাত নামাজ ধীর-স্থিরভাবে আদায় করা এবং হাদিসে বর্ণিত দোয়া পড়া।

ইস্তেখারার দোয়া
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلْمِكَ، وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ، وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ الْعَظِيمِ، فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ، وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ، وَأَنْتَ عَلاَّمُ الْغُيُوبِ، اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ خَيْرٌ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي ـ (أَوْ قَالَ عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ)ـ فَاقْدُرْهُ لِي، وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ شَرٌّ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي ـ(أَوْ قَالَ فِي عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ)ـ فَاصْرِفْهُ عَنِّي وَاصْرِفْنِي عَنْهُ، وَاقْدُرْ لِيَ الْخَيْرَ حَيْثُ كَانَ، ثُمَّ رَضِّنِي بِهِ


বিজ্ঞাপন


“আল্লাহুম্মা ইন্নি-আস্তাখিরুকা বি-ইলমিকা ওয়া আস্তাকদিরুকা বি-কুদরাতিকা ওয়া আসআলুকা মিন ফাদলিকাল আজিম, ফা-ইন্নাকা তাকদিরু ওয়ালা আকদিরু, ওয়া তা’লামু ওয়ালা আ’লামু ওয়া আন্তা আল্লামুল গুয়ুব। আল্লাহুম্মা ইনকুন্তা তা’লামু আন্না হাজাল আমরা” (এখানে নিজের কাজের কথা মনে মনে উল্লেখ করবে) খাইরুন লি ফি- দ্বীনী ওয়া মা’আশি ওয়া আক্বিবাতি আমরি (অথবা বলবে: আ-জিলি আমরি ওয়া আজিলিহি) ফাকদিরহু লি, ওয়া ইয়াসসিরহু লি, সুম্মা বা-রিকলি ফিহি, ওয়া ইন কুনতা তা’লামু আন্না হাজাল আমরা (এখানে নিজের কাজের কথা মনে মনে উল্লেখ করবে) শাররুন লি ফি দ্বীনী ওয়া মা’আশি ওয়া আক্বিবাতি আমরি (অথবা বলবে: আ-জিলি আমরি ওয়া আজিলিহি) ফাসরিফহু আন্নি ওয়াসরিফনি আনহু ওয়াকদির লিয়াল খাইরা হাইসু কানা সুম্মা রাদ্দিনি বিহি।” (এরপর নিজের কাজের কথা উল্লেখ করে দোয়া করবে)।

আরও পড়ুন: দোয়ার আগে যে কাজটি না করলে কবুলের সম্ভাবনা নেই

অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার জ্ঞানের সাহায্যে আপনার কাছে কল্যাণ প্রার্থনা করছি। আমি আপনার শক্তির সাহায্যে শক্তি ও আপনার অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি। কেননা আপনিই ক্ষমতাবান; আমি ক্ষমতা রাখি না। আপনি জ্ঞান রাখেন, আমার জ্ঞান নেই এবং আপনি অদৃশ্য বিষয়ে সম্পূর্ণ পরিজ্ঞাত। হে আল্লাহ, আপনার জ্ঞানে আমার এ কাজ (এখানে নিজের প্রয়োজনের নাম উল্লেখ করবে অথবা মনে মনে স্মরণ করবে) আমার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য (কিংবা বলবে আমার দ্বীনদারি, জীবন-জীবিকা ও কর্মের পরিণামে) কল্যাণকর হলে, আপনি তা আমার জন্য নির্ধারণ করে দিন। সেটা আমার জন্য সহজ করে দিন এবং তাতে বরকত দিন। হে আল্লাহ, আর যদি আপনার জ্ঞানে আমার এ কাজ আমার দ্বীনদারি, জীবন-জীবিকা ও কর্মের পরিণামে (কিংবা বলবে, আমার বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য) অকল্যাণকর হয়, তবে আপনি আমাকে তা থেকে ফিরিয়ে দিন এবং সেটাকেও আমার থেকে ফিরিয়ে রাখুন। আমার জন্য সর্বক্ষেত্রে কল্যাণ নির্ধারণ করে রাখুন এবং আমাকে সেটার প্রতি সন্তুষ্ট করে দিন।’ (সহিহ বুখারি: ৬৮৪১, তিরমিজি: ৬৪৮)

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর