মানুষ আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়েই বাঁচে। মনের আশা পূরণে কত কিছুই না করে থাকে মানুষ। অনেকে অনেক আমলও করে থাকেন। কিন্তু মনের আশা পূরণে ইসমে আজম হলো উৎকৃষ্ট উপায়। ‘ইসম’ শব্দের অর্থ নাম। ‘আজম’ শব্দের অর্থ মহান বা শ্রেষ্ঠ। ইসমে আজম অর্থ মহান-শ্রেষ্ঠ নাম। মহান আল্লাহ তাআলার অসংখ্য নামের মধ্যে কিছু নামকে ইসমে আজম বলা হয়।
তবে সেই নামগুলো কী—সে ব্যাপারে অনেক অভিমত রয়েছে। আলেমরা বিভিন্ন নামকে ইসমে আজম বলে অভিহিত করেছেন। পবিত্র কোরআনেও ইসমে আজম রয়েছে। রাসুল (স.) এক হাদিসে ইরশাদ করেন, ‘ইসমে আজম সুরা বাকারার ৩৬৩ নম্বর আয়াত এবং সুরা আল ইমরানের ১ নম্বর আয়াতে রয়েছে।’ (সুনানে আবি দাউদ: ১৪৯৬)
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: দোয়া দ্রুত কবুল না হলে যা করবেন
ইসমে আজমের মাধ্যমে দোয়া করলে আল্লাহ তাআলা তা কবুল করেন। নিচে সেরকম দুটি দোয়া হাদিসের আলোকে তুলে ধরা হলো।
১. اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدَ لَا إِلَهَ إِلَا أَنْتَ الْمَنَّانُ بَدِيعُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ يَا ذَا الْجَلَالِ وَالإِكْرَامِ يَا حَىُّ يَا قَيُّومُ ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আস'আলুকা বি আন্না লাকাল হামদ, লা ইলাহা ইল্লা আন্তাল মান্নানু বাদিউস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম, ইয়া হাইয়্যু ইয়া ক্বাইয়্যুম।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করি। তুমিই তো সকল প্রশংসার মালিক, তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তুমি দয়াশীল। তুমিই আকাশসমূহ ও পৃথিবীর একমাত্র সৃষ্টিকর্তা! হে মহান সম্রাট ও সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী, হে চিরঞ্জীব, হে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী।’
এই দোয়াটির ব্যাপারে হাদিসে আনাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, তিনি রাসুলুল্লাহ (স.)-এর সঙ্গে বসা ছিলেন। এসময় এক ব্যক্তি নামাজ আদায় করে দোয়াটি পাঠ করল। তখন নবী (স.) বলেন, এ ব্যক্তি ইসমে আজম দ্বারা দোয়া করেছে, যে নামে ডাকলে তিনি সাড়া দেন এবং যে নামে তাঁর নিকট চাওয়া হলে তিনি দান করেন। (সুনানে আবু দাউদ: ১৪৯৫, অধ্যায়: ২/সালাত)
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: সুন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু ছোট দোয়া
২. اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ أَنِّي أَشْهَدُ أَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ الأَحَدُ الصَّمَدُ الَّذِي لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আস আলুকা, আন্নি আশহাদু আন্নাকা আংতাল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লা আংতাল আহাদুস সামাদুল্লাজি লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ ওয়ালাম ইয়া কুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।’ অর্থ: ‘ইয়া আল্লাহ! আমি তোমার নিকট প্রার্থনা করছি এবং আমি সাক্ষ্য প্রদান করছি যে, তুমিই আল্লাহ এবং তুমি ছাড়া কোনো ইলাহ নাই। তুমি একক এবং অমুখাপেক্ষী যার কোনো সন্তান নাই এবং যিনি কারও সন্তান নন, যার সমকক্ষ কেউই নাই।’
বুরাইদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) দুইজন লোককে দোয়াটি বলতে শুনেছেন। তখন রাসুল (স.) বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর কাছে ইসমে আজমের মাধ্যমে চেয়েছ, যার মাধ্যমে চাইলে আল্লাহ দান করেন এবং দোয়া করলে আল্লাহ কবুল করেন।’ (আবু দাউদ: ১৪৯৩)