ইসলামে আত্মীয়তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা সতর্ক থাকো রক্তসম্পর্কিত আত্মীয়দের ব্যাপারে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের পর্যবেক্ষক।’ (সুরা নিসা: ১) রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে ও শেষ দিনে বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার রক্তের সম্পর্ক বজায় রাখে। (বুখারি: ৬১৩৮)
আমরা অনেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানবতার পরিচয় দিই; সাধারণ মানুষের বিপদাপদে পাশে দাঁড়াই। কিন্তু আত্মীয়-স্বজনের কঠিন দুরবস্থায়ও উদাসীন থাকি। এটি কাম্য নয়। ইসলামে আত্মীয়-স্বজনের বিপদাপদ আগে, অন্য মানুষের পরে। যেকোনো সহযোগিতা ও পাশা থাকার ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে আত্মীয়-স্বজনকে প্রাধান্য দিতে হবে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘কোনো অভাবীকে দান করলে শুধু দানের সওয়াব আর আত্মীয়কে সহযোগিতা করলে দুটি সওয়াব, দান ও আত্মীয়তা রক্ষা।’ (সুনানে নাসায়ি: ২৫৮২)
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: আত্মীয়ের বাড়িতে ঘুরতে গেলে যে সওয়াব
ইসলামে আত্মীয়ের হক বা অধিকার রয়েছে। যেমন- যোগাযোগ রক্ষা করা, সদাচরণ করা, অভাবগ্রস্ত হলে তাকে সহযোগিতা করা, মেহমানদারি করা, অসুস্থ হলে সেবা করা, দ্বীনের ব্যাপারে সতর্ক করা। এছাড়াও সালাম আদান-প্রদান করা, স্নেহ ও সম্মান করা, আনন্দ-বেদনার অংশীদার হওয়া, দাওয়াত কবুল করা, জানাজায় অংশ নেওয়া, পরস্পর হিতাকাঙ্ক্ষী হওয়া, বিবাদ হলে মিটিয়ে দেওয়া, অনুপস্থিতিতে দোয়া করা ইত্যাদি আত্মীয়ের হক।
এসব হক রক্ষা করা জরুরি। আসলে আল্লাহ তাআলার কাছে আত্মীয়তার বন্ধন অনেক মূল্যবান বিষয়। তাই অবহেলা বা উদাসীনতা আত্মীয়-স্বজনের ক্ষেত্রে চলে না। এতে আল্লাহ তাআলা খুবই অসন্তুষ্ট হন। নবীজি (স.) বলছেন, ‘আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি রহমান! আর এই ‘রাহিম’—আত্মীয়তার বন্ধন। তাকে আমার নাম থেকেই একটি নাম দিয়েছি। যে ব্যক্তি এই বন্ধন রক্ষা করবে আমি তার সঙ্গে বন্ধন রক্ষা করব। আর যে ব্যক্তি তার সঙ্গে বন্ধন ছিন্ন করবে আমিও তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করব।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৬৯৬)
বিজ্ঞাপন
আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারীর প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি আরোপ করে নবীজি ইরশাদ করেন, ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক বিচ্ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।’ (সহিহ মুসলিম: ৬৪১৫)