আত্মীয়-স্বজন ও ভাই-বন্ধুর বিপদে সহযোগিতার পাশাপাশি তাদের জন্য দোয়া করার শিক্ষা দেয় ইসলাম। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘যতক্ষণ একজন মানুষ অন্য মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত থাকবে, আল্লাহ তাআলাও তার কল্যাণে রত থাকবেন।’ (মুসলিম: ৬৭৪৬)
বিপদগ্রস্ত ভাইদের জন্য হাদিসে বর্ণিত একটি দোয়া হলো— اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِىْ عَافَانِىْ مِمَّا ابْتَلَاكَ بِهِ وَ فَضَّلَنِىْ عَلَى كَثِيْرٍ مِّمَنْ خَلَقَ تَفْضِيْلَا উচ্চারণ: ‘আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি আফানি মিম্মাবতালাকা বিহি; ওয়া ফাদ্দালানি আলা কাছিরিম মিম্মান খালাকা তাফদিলা।’ অর্থ: ‘সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি তোমাকে বিপদাক্রান্ত করেছেন; তা থেকে আমাকে নিরাপদ রেখেছেন এবং আমাকে তিনি তার মাখলুক থেকে মাখলুকের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন।’ তখন তাকে এ মসিবত কখনো স্পর্শ করবে না।’ (তিরমিজি. মেশকাত, মকবুল দোয়া: ১৪৯)
বিজ্ঞাপন
ভাইয়ের বিপদে পাশে দাঁড়াতে না পারলেও অন্তত এই দোয়া করার শিক্ষা দিয়েছেন নবীজি (স.)। তাই আমাদের উচিত হবে- এ ব্যাপারে হাদিসের ওপর আমল করা।
আরও পড়ুন: সুন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু ছোট দোয়া
তবে, বিপদগ্রস্তকে সম্ভব হলে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা অনেক ফজিলতপূর্ণ আমল। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। কাজেই সে তার ওপর নির্যাতন করবে না এবং তাকে অসহায় অবস্থায়ও ছেড়ে যাবে না। যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের প্রয়োজন মেটাবে, আল্লাহ তার প্রয়োজন মেটাবেন। একইভাবে যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের বিপদ দূর করবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার বিপদ দূর করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ গোপন রাখবে, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তার দোষ গোপন রাখবেন।’ (আবু দাউদ: ৪৮৯৩)
ভাইয়ের জন্য দোয়া করলে তা কখনও বিফলে যায় না। এতে সীমাহীন সওয়াব নিজের আমলনামায় লেখা হয়। এ বিষয়ে রাসুল (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মুসলিম পুরুষ ও মুসলিম নারীর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, প্রত্যেক মুসলমানের বিপরীতে একটি করে সওয়াব মহান আল্লাহ তার আমলনামায় লিখে দেন।’ (তাবরানি: ৩/২৩৪)
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: কোরআনে প্রশস্ত অন্তরের মানুষের প্রশংসা
আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যখন কোনো মুসলিম তার ভাইয়ের জন্য তার পশ্চাতে দোয়া করে, তখন তার (মাথার কাছে নিযুক্ত) একজন ফেরেশতা তাঁকে লক্ষ্য করে বলে, তোমার জন্যও এমনই হোক’। (সহিহ মুসলিম: ২৭৩২)
অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘কোনো মুসলিম তার ভাইয়ের অবর্তমানে তার জন্য নেক দোয়া করলে তা কবুল হয়। তার মাথার কাছে একজন ফেরেশতা নিয়োজিত থাকে, যখনই সে তার ভাইয়ের জন্য দোয়া করে, তখনই ওই ফেরেশতা বলেন, ‘আমিন! তোমার জন্যও এমনই হোক”। (সহিহ মুসলিম: ২৭৩২)
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে বিপদগ্রস্ত ভাই-বন্ধুকে সহযোগিতা ও দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহ তাআলা বিপদ-মসিবতে পতিত সবাইকে বিপদ থেকে উদ্ধার করুন। আমিন।

