ইসলামি শরিয়তে হারাম উপার্জনের কোরবানি শুদ্ধ না হলেও সেই গোশত কেউ খেতে দিলে প্রয়োজন ও পরিস্থিতির কারণে তা গ্রহণ করতে নিষেধ নেই। এমনকি অমুসলিমের দেওয়া হাদিয়া গ্রহণের পক্ষেও দলিল রয়েছে। হাদিসে আমরা দেখতে পাই যে, রাসুলুল্লাহ (স.) ইহুদির বাড়িতে দাওয়াত খেয়েছেন এবং তাদের দেওয়া হাদিয়া গ্রহণ করেছেন। (বুখারি: ২৬১৫-১৮, আবুদাউদ, মেশকাত: ৫৯৩১)
সেই হিসেবে সুদখোরের দেওয়া গোশত গ্রহণ করাও নাজায়েজ নয়। তবে সাধারণভাবে উচিত হলো- কৌশলে ফিরিয়ে দেওয়া। তাকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার চেষ্টায় তা করা। এতে সে হালাল খাবারের প্রতি উদ্বুদ্ধ হতে পারে। মূলত এটি এ কারণে করা যে, আল্লাহ তাআলা মুসলমানদেরকে কেবল হালাল খাবার গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। (সুরা বাকারা: ১৭২) সুদের টাকায় কুরবানী
বিজ্ঞাপন
তবে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা যদি ভালো মনে না করেন; যেমন- আত্মীয়তার কারণে, প্রতিবেশী হওয়ার কারণে বা সামাজিক সুসম্পর্ক ধরে রাখার জন্য প্রয়োজন মনে করেন, তাহলে হাদিয়া-উপহার নিতে পারবেন। তখন নিয়ত করবেন যে, তার কোরবানির মধ্যে যেসব হালাল অংশ রয়েছে; সেখান থেকে আপনি সামান্য নিচ্ছেন। যেমন- হারাম উপার্জনের বাইরে তার হালাল আয় থাকতে পারে। তার পৈত্রিক সম্পত্তিও হালাল আয়ের অন্তর্ভুক্ত। সেসব বিবেচনায় অপারগতার কারণে শরিয়ত আপনাকে সুদখোরের হাদিয়া গ্রহণের অনুমতি দিয়েছে। হারাম টাকায় কোরবানি
এর দলিল হলো- ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘তার নিকটে জনৈক ব্যক্তি এসে বলল- আমার একজন প্রতিবেশী আছে, যে সুদ খায় এবং সর্বদা আমাকে তার বাড়িতে খাওয়ার জন্য দাওয়াত দেয়। এখন আমি তার দাওয়াত কবুল করব কি? জওয়াবে তিনি বললেন, ‘তোমার জন্য এটি বিনা কষ্টের অর্জন এবং এর গুনাহ তার উপরে’। (মুসান্নাফ আবদুর রাজ্জাক: ১৪৬৭৫) সুদখোরের কোরবানি
উল্লেখিত দলিলের আলোকে আলেমরা সুদখোরের দেওয়া গোশত ইত্যাদি নেওয়া জায়েজ বলেছেন। তাছাড়া জীবনের তাগিদেও হারাম উপার্জনের হাদিয়া গ্রহণ করা জায়েজ। আমরা জানি যে, জীবন বাঁচানো জরুরি হয়ে পড়লে হারাম বস্তুও হালাল হয়ে যায়। (দ্রষ্টব্য: সুরা বাকারা: ১৭৩)
তবে, সবসময় মনে রাখতে হবে, মুমিনের জন্য সন্দেহজনক বস্তু (হালাল নাকি হারাম অনিশ্চিত) গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে পারার মাঝেই সতর্কতা রয়েছে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হারাম থেকে যথাসম্ভব বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। হালাল খাবার গ্রহণের তাওফিক দান করুন। আমিন।

