শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের ‘মনোমালিন্য’

মো. ইলিয়াস
প্রকাশিত: ১০ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:৫৭ পিএম

শেয়ার করুন:

বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের ‘মনোমালিন্য’

বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর জোটবদ্ধ রাজনীতি প্রায় দুই যুগের। প্রথমে ৪ দলীয় জোট, পরে এর পরিধি বেড়ে হয় ২০ দলীয় জোট। জোটে ২০টি দল থাকলেও মূল ভূমিকা ছিল বিএনপি ও জামায়াতের।

জোটবদ্ধ এই দীর্ঘ সময়ে নানা ইস্যুতে আন্দোলনসহ একসঙ্গে পথ চললেও বিভিন্ন কারণে দল দুটির নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিল অস্বস্তি। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। অবশেষে গত ডিসেম্বরে ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের আগে ২০ দলীয় জোট ভেঙ্গে দেওয়ার কথা জানায় বিএনপি।


বিজ্ঞাপন


জোট ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা বিএনপি দিলেও জোটের শরিকরা যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। এ লক্ষ্যে তারা দুটি জোটও গঠন করেছেন। এর মধ্যে ১২টি দল মিলে একটি জোট এবং ১১টি দল মিলে জাতীয়তাবাদী সম্মাননা জোট গঠন করা হয়েছে। নতুন এই দুই জোটের মাধ্যমে সাবেক ২০ দলীয় জোটের শরিকরা যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।

BNP২০ দলীয় জোট বিলুপ্তি হলেও এই জোটের শরিকদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের বিষয়ে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির নিয়মিত বৈঠক ও আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির কোনো বৈঠক হয়নি। বরং বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে চলছে ‘মনোমালিন্য’।

এদিকে জোট ভাঙলেও যুগপৎ আন্দোলন করছে জামায়াত ইসলামী। দলটির নেতারা জানিয়েছেন, তাদের সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি যোগাযোগ করেনি। এমনকি গত ৩০ ডিসেম্বর রাজধানীতে গণমিছিল করার সময় পুলিশের আক্রমণ হলে বহু নেতা আহত ও গ্রেফতার হলেও এ ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি বা জামায়াতের কারও সঙ্গে যোগাযোগও করেনি।

যুগপৎ আন্দোলনের বিষয় জানতে চাইলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ ঢাকা মেইলকে বলেন, আগামীকাল জামায়াতে ইসলামী গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন করবে। ইতিমধ্যে বিভাগীয় শহরে আলোচনা সভার মাধ্যমে গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালনের জন্য সেক্রেটারি জেনারেল বিবৃতি দিয়েছেন।


বিজ্ঞাপন


>> আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে যে কৌশলে মাঠে থাকবে বিএনপি

তিনি বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের ইস্যু সামনে রেখে যার যার অবস্থান থেকে আন্দোলন করবে। জামায়াত তার অবস্থান থেকে আন্দোলন করবে, বিএনপির তার অবস্থান থেকে আন্দোলন করছে। দল ভিন্ন, মঞ্চ ভিন্ন, তাই নেচার একটু আলাদা হবে- এটাই স্বাভাবিক। কাল কর্মসূচি পালন করা হবে। এরপর পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করব।

মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, আমরা বিবৃতি দিয়ে আমাদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করছি। বিএনপির অফিসে যখন হামলা হয় তখন আমরা নিন্দা জানিয়েছি। মির্জা ফখরুল সাহেব যখন গ্রেফতার হন তখন আমরা নিন্দা জানিয়ে দ্রুত মুক্তি দাবি করেছি। কিন্তু রাজধানীতে ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিলে জামায়াতের বহু নেতাকর্মী আহত ও গ্রেফতার হয়। এ বিষয়ে বিএনপির কোনো বিবৃতি দেখিনি।

BNP-Jamatজামায়াতে ইসলামের সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম ঢাকা মেইলকে বলেন, ১১ জানুয়ারি ওয়ান-ইলেভেন হিসেবে চিহ্নিত। এ বিষয়ে আমরা আলোচনা সভা করব। কিন্তু আমাদের কর্মসূচি হলো গণতন্ত্র হত্যা দিবস। ৩০ ডিসেম্বর পুলিশের সঙ্গে জামাতের সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির কোনো নেতা যোগাযোগ করেননি বলেও জানান তিনি।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ঢাকা মেইলকে বলেন, জামায়াতের সাথে আলোচনা হলে তো আপনারা জানতে পারতেন। জামায়াত নিয়ে প্রশ্ন না করাই ভালো, আমি এটার কোনো উত্তর দেব না।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ঢাকা মেইলকে বলেন, জামায়াত আমাদের যুগপৎ আন্দোলনের শরিক নয়।

উল্লেখ্য, সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্তি ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনসহ ১০ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দল ও জোট। যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি হিসেবে ঢাকায় ৩০ ডিসেম্বর এবং অন্যান্য জেলা ও মহানগরে ২৪ ডিসেম্বর গণমিছিল করে। যুগপৎ আন্দোলনের দ্বিতীয় কর্মসূচি ১১ জানুয়ারি গণঅবস্থান। ওইদিন বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচি।

এমই/জেএম/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর