বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে মাঠে থাকবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। ২৬ নভেম্বরের এই সমাবেশে বিভিন্ন জেলা থেকে যারা আগে চলে আসবেন তাদের জন্য নির্মাণাধীন ৭৮টি ফ্ল্যাটে থাকা এবং খাওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) ঢাকা মেইলের সঙ্গে আলাপকালে সাক্কু এই কথা জানান।
বিজ্ঞাপন
জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কুমিল্লা বিভাগীয় সমাবেশে আমি উপস্থিত থাকবো। সমাবেশের জন্য প্রচার-প্রচারণার কাজ করছি, বিভিন্ন ওয়ার্ডে যাচ্ছি, নেতাকর্মীদের উপস্থিত থাকার জন্য বলছি।’
আরও পড়ুন: সাক্কুর বহিষ্কার জাস্ট ফর্মালিটিস!
দল থেকে বহিষ্কার করা হলেও কেন সমাবেশে থাকবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দল দলের কাজ করেছে। দল আমাকে বহিষ্কার করেছে এটা আইনগত। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করেছি, এ কারণে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমি দীর্ঘ ৪২ বছর রাজনীতি করেছি। এখন দেশের দুর্দিন চলছে, মনে হচ্ছে এখন বসে থাকা ঠিক হবে না। সে কারণে আমি কাজ করছি। আমাকে দলে রাখুক বা না রাখুক আমি আছি। এই দল আমি করবো এটা আমার অধিকার। এই দল আমি পরিবর্তন করতে পারবো না।’
বিজ্ঞাপন
সাক্কু বলেন, ‘১৫ থেকে ২০ হাজার নেতাকর্মীকে নিয়ে আমি সমাবেশে উপস্থিত থাকব। এছাড়া নির্মাণাধীন ৭৮টি ফ্ল্যাট রয়েছে, এখানে থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে যারা আগে চলে আসবেন তারা এখানে থাকতে পারবেন এবং তাদের জন্য খাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’
বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের বিষযে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে বলা হয়েছে। এখন উনি যা করেন এটা ওনার ব্যাপার। ইচ্ছে করলে করতে পারেন আবার নাও করতে পারেন। এটা আমার দাবি এবং আমার নেতাকর্মীদের দাবি।’
আরও পড়ুন: বিএনপি থেকে কুমিল্লার মনিরুলকে ‘আজীবন’ বহিষ্কার
বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় চলতি বছরের ১৯ মে আজীবনের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা হয় সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুকে।
২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত প্রথম কুমিল্লা সিটির নির্বাচনে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে নাগরিক সমাজের ব্যানারে প্রথমবার এবং ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ দলীয় প্রতীকে দ্বিতীয়বার মেয়র নির্বাচিত হন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মনিরুল হক সাক্কু।
প্রথমবার তিনি হারান আওয়ামী লীগের প্রবীণ ও প্রভাবশালী নেতা আফজল খানকে; দ্বিতীয় পরাজিত করেন তার মেয়ে আঞ্জুম সুলতানা সীমাকে।
দলীয় কর্মসূচিতে নিষ্ক্রিয় থাকায় গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কুকে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: প্রথমবারের মতো ভোটে হারলেন সাক্কু
দলীয় সূত্রে জানা যায়, দ্বিতীয়বার কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে শপথ গ্রহণ শেষে বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু প্রধানমন্ত্রীর পা ছুঁয়ে সালাম করেন। এ নিয়ে সে সময় দলীয় নেতাকর্মীরা সাক্কুর ব্যাপক সমালোচনাও করেন। এরপর থেকে মনিরুল হক সাক্কু দলীয় কর্মকাণ্ডে নিষ্ক্রিয় ছিলেন বলে জানা যায়।
গত ১৫ জুন অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের তৃতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের কাছে অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন সাক্কু।
এমই/জেবি