বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪, ঢাকা

‘ছাত্রলীগ নতুন করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কোনো কমিটি দিতে পারবে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর ২০২২, ০৬:৩৬ পিএম

শেয়ার করুন:

‘ছাত্রলীগ নতুন করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কোনো কমিটি দিতে পারবে না’
ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাত্রলীগের সম্মেলনের দিনক্ষণ ঠিক হওয়ার পর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তাদের বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি ঘোষণা করছে। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভিন্ন মত রয়েছে। কেউ বলছেন, কমিটি দিতে বাধা নেই। আবার কেউ বলছেন, নতুন করে কমিটি দিতে পারবে না কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

শনিবার (১২ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর ধানমণ্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘ছাত্রলীগ নতুন করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কোনো জেলা, উপজেলা কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সর্বোপরি কোনো শাখার কমিটি দিতে পারবে না।’


বিজ্ঞাপন


এসব কমিটিকে ‘কাগুজে’ কমিটি বলে আখ্যা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

আরও পড়ুন: ছাত্রলীগের কাউন্সিল ৩ ডিসেম্বর

নাছিম বলেন, ‘এটা আমাদের ও ছাত্রলীগের অভিভাবকের (শেখ হাসিনা) নির্দেশনা। সেটা আমরা যোগাযোগ করে দিয়েছি।’

তবে গত বুধবার ঢাকা মেইলের সঙ্গে আলাপকালে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার আমাদের নাই। এটি ছাত্রলীগের ব্যাপার। ছাত্রলীগই নেবে। যদি নেত্রীর নির্দেশনা থাকে… তবে নেত্রী এ ধরনের কোনো নির্দেশনা আছে বলে আমার জানা নাই।’

এদিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রেও এ ধরনের কোনো বিষয় উল্লেখ নেই।

সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পরও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত বেশ কয়েকটি কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। একই সময়ে ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের স্থগিত করা কমিটি পুনর্বহাল করেছেন জয়-লেখকরা।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা রিসিভ করেননি।

এর আগে গত ৩১ অক্টোবর সন্ধ্যায় ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বৈঠকে বসেন।

বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক।

আরও পড়ুন: ‘বোনাস টাইম’ কাটাচ্ছেন তারা

জানা গেছে, সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কমিটি ঘোষণা করতে পারবে কিনা এ বিষয়টি আলোচনায় উঠে ছিল ওই বৈঠকে। সেখানে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা দুই ধরনের মত দিয়েছেন। কেউ কমিটি ঘোষণার পক্ষে ছিলেন, কেউ ছিলেন কমিটি ঘোষণার বিপক্ষে।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এর দুই মাস পর ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ গঠিত হয়েছিল।

ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক হন গোলাম রাব্বানী। এক বছরের মাথায় অনিয়ম ও চাঁদাবাজির অভিযোগে শোভন-রাব্বানীকে অপসারণ করা হয়।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, এক নম্বর সহসভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়কে সভাপতি ও এক নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

তবে ছাত্রলীগের বর্তমান নেতাদের ভাষ্য, সম্মেলন ও কমিটি ঘোষণার দিন হিসাবে বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে প্রায় আড়াই বছর আগেই। সম্মেলন নিয়ে এই নেতারা কিছু কথাই বলে না।

২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসা আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্য্য ‘ভারমুক্ত’ করে ঘোষণা দেন তাদের ‘সাংগঠনিক নেত্রী’ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলে কাউন্সিল ছাড়াই নিয়মিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান জয় ও লেখক।

ছা্ত্রলীগের বর্তমান কমিটির অনেক নেতাই বলেছেন, সাংগঠনিক নেত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী হিসেব করলেও বর্তমান নেতৃত্বের সময় ফুরিয়েছে গত জানুয়ারিতে। সে হিসেবেও ১১ মাস বোনাস টাইম কাটিয়ে সম্মেলনের তারিখ পেলেন নানা বিতর্কের জন্ম দেওয়া জয়-লেখক।

কারই/জেএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর