বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

দেশের মানুষ বরাবরের মতো অন্যায়ের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৭:৪৮ পিএম

শেয়ার করুন:

দেশের মানুষ বরাবরের মতো অন্যায়ের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে: ফখরুল

বরাবরের মতো বাংলাদেশের মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, যারা আমাদের স্বাধীনতার সমস্ত আশা-আকাঙ্ক্ষাকে কেড়ে নিয়েছে, যারা আমাদের সন্তানদের হত্যা করেছে, যারা আমাদের রুটি-রুজি বন্ধ করে দিয়েছে, আমাদের কৃষক, খেটে-খাওয়া মেহনতি মানুষের পেটের ভাত কেড়ে নিয়েছে, তাদের মানুষ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেল রাজধানীর খিলগাঁওয়ের জোড়পুকুর খেলার মাঠের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে এ কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।


বিজ্ঞাপন


মির্জা ফখরুল বলেন, ধরা পড়ে গেছে- আজকে ইংল্যান্ডে যখন রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গিয়েছেন, তখন সেখানে বিবিসির সাংবাদিক তাকে জিজ্ঞেস করেছে- আপনি রানীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় এসেছেন। রানীর প্রতিনিধি ঢাকায় বলেছেন- বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না, সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য আপনি কি পরিবেশ তৈরি করেছেন? এর জবাবে তিনি (শেখ হাসিনা) বলেছেন- আওয়ামী লীগের আমলে যে নির্বাচন হয়, তা সবচেয়ে সুষ্ঠু সুন্দর হয়। শেখ হাসিনার কথা শুনে আজকে ঘোড়াও হাসে। তাই সারা বাংলাদেশের স্লোগান এখন একটাই শেখ হাসিনা ভুয়া।

বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, আমরা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধ করেছিলাম। আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ তৈরি করব। আমাদের এখানে গণতন্ত্র থাকবে। আমরা প্রতিবাদ করতে পারব, কথা বলতে পারব, সভা-সমাবেশ করতে পারব। আমাদের সাধারণ মানুষকে মোটা কাপড়, মোটা ভাত দিতে পারব। তারা কী করেছে দুইবার- সেই ৭২ থেকে ৭৫ সাল, এখন আবার এই সময়ে তারা আমাদের সেই স্বপ্নকে ধ্বংস করে দিয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘বিএনপি-ছাত্রদল নেতাদের বাড়িতে হামলায় দায়ী সরকারদলীয় বাহিনী’


বিজ্ঞাপন


আওয়ামী লীগের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, মেগা প্রজেক্ট করে মেগা দুর্নীতি করছে। আজকে টাকা পাচার করছে, বিদেশে ঘর-বাড়ি তৈরি করছে। আর আমাদের গণতন্ত্রকে হত্যা করছে। বিএনপির বরকত উল্লাহ বুলু, তাবিথ আউয়াল ও বেগম সেলিমা রহমানকে হত্যার জন্য আঘাত করেছে। ভোলায় নূরে আলম, আব্দুর রহিম এবং নারায়ণগঞ্জে শাওন প্রধানকে হত্যা করে এই আন্দোলনকে দমন করে রাখা যাবে না। বাংলাদেশের মানুষ বরাবরই অন্যায়ের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে, আজকেও জেগে উঠেছে।

BNPফখরুল বলেন, আজকে আমাদের পরিষ্কার কথা- দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যিনি গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, তাকে মুক্তি দিতে হবে। মুক্তি দিতে হবে সমস্ত বন্দিদের, যাদের রাজনৈতিক কারণে বন্দি করে রাখা হয়েছে। ৩৫ লাখ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা করেছে, সব তুলে ফেলতে হবে। পদত্যাগ করতে হবে, পদত্যাগ করে একটি নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।

সংসদ বিলুপ্ত করে নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে নতুন পার্লামেন্ট গঠন করা হবে, সরকার গঠন হবে। আসুন আমরা সেই লক্ষ্যে আজকে ঐক্যবদ্ধ হই। সকল রাজনৈতিক দল, সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাই এবং দুর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারের পতন ঘটাই।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির জোন-২ এর খিলগাঁও, সবুজবাগ ও মুগদা থানার উদ্যোগে জ্বালানি তেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, গণপরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি ও পুলিশের গুলিতে তিনজন কর্মী নিহতের প্রতিবাদে ওই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। দক্ষিণের বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মিছিল নিয়ে এ দিন সমাবেশে উপস্থিত হন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মীর্জা আব্বাস ছাড়াও সমাবেশে অন্যদের মধ্যে দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, মীর সরাফত আলী সপু, কামরুজ্জামান রতন, সুলতানা আহমেদ, রফিকুল আলম মজনু, ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসানসহ ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এতে উপস্থিত ছিলেন।

এমই/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর