এবারের নির্বাচনে বিএনপি তাদের অতীতের মিত্রদের অনেককে হারিয়েছে। কেউ কেউ চলে গেছে বিরোধী বলয়ে। একটা সময় ইসলামপন্থী দলগুলোর নির্ভরতা ছিল বিএনপির ওপর। তবে এবারের নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীসহ ইসলামি ও সমমনা দলগুলো ভিন্ন বলয় গড়ে তোলায় বিএনপি কিছুটা বেকায়দায় পড়েছে। এই অবস্থায় ইসলামপন্থীদের মধ্যে একমাত্র জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম রয়েছে বিএনপির সঙ্গে। কওমি মাদরাসার প্রতিনিধিত্বশীল এই দলটি বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতার মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিএনপির সঙ্গে জমিয়ত নেতাদের আসন সমঝোতা নিয়ে চূড়ান্ত বৈঠক হয়। সেখানে দেশের চারটি আসনে জমিয়তকে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। পরে সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণাও করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
‘কপাল পুড়ল’ রুমিন ফারহানার
সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
জমিয়ত নেতাদের মধ্যে দলের সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি মহাসচিব জানান, চারটি আসনে জমিয়তকে ছাড়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব আসনে বিএনপি কোনো প্রার্থী দেবে না। জমিয়ত নেতারা তাদের দলীয় প্রতীক খেজুর গাছ নিয়ে নির্বাচন করবেন। বিএনপির স্থানীয় নেতাদের দলীয় নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। কেউ এই নির্দেশনা অমান্য করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যে চার আসনে ছাড় পেলেন জমিয়ত নেতারা
সিলেট-৫: আসনটি বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী সিলেটের কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ নিয়ে গঠিত। এই আসনে জমিয়তের সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক নির্বাচন করবেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তিনি বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ছিলেন। তখন তিনি ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করেন। তবে রাতের ভোট খ্যাত সেই নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন। এর আগেও তিনি খেজুর গাছ প্রতীকে নির্বাচন করেছেন। এবারের নির্বাচনে তিনি স্থানীয় বিএনপির একটি অংশের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন
জমিয়তকে চার আসনে ছাড়ের ঘোষণা বিএনপির
নীলফামারী-১: ডোমার ও ডিমলা উপজেলা নিয়ে গঠিত নীলফামারী-১ আসন বহু বছর ধরেই বিএনপি ও জাতীয় পার্টির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। যদিও গত ১৬ বছর পুরো সময় এ আসনটি দখলে ছিল আওয়ামী লীগের। এবারের নির্বাচনে বিএনপি এই আসনে কোনো প্রার্থী দেয়নি। এখান থেকে খেজুর গাছ প্রতীকে নির্বাচন করবেন জমিয়তের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী। তিনি আগেও বিএনপি জোটের হয়ে নির্বাচন করেছেন।
নারায়ণগঞ্জ-৪: ঢাকার পাশে ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ নিয়ে গঠিত আসনটিতে লড়বেন জমিয়তের কেন্দ্রীয় নেতা মুফতি মনির হোসেন কাসেমী। তিনি ২০১৮ সালেও এই আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচন করেছিলেন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে। তবে রাতের ভোট হিসেবে পরিচিত সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমানের দাপটের কাছে তিনি পাত্তা পাননি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২: সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটিতে খেজুর গাছ নিয়ে লড়বেন জমিয়তের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব। তিনি হেফাজতে ইসলামেরও প্রভাবশালী নেতা। তবে এই আসনে বিএনপির আলোচিত নেত্রী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন। তিনি ইতোমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
জেবি

