সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার খোঁজ নিতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে ভিড় করছেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা। তাদেরই একজন কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের আব্দুল মান্নান। নেত্রীকে ‘স্বপ্নে দেখে’ তিনি ঢাকায় ছুটে এসেছেন বলে দাবি তার।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে বিশেষ ভাবে নজর কাড়েন ভিড়ের মধ্যে থাকা আব্দুল মান্নান। তার হাতে ছিল বিএনপির দলীয় প্রতীক একগুচ্ছ ধানের শীষ। তিনি জানান, খালেদা জিয়াকে স্বপ্নে দেখার পর আর গ্রামে থাকতে পারেননি, তাই ধানের শীষ নিয়ে ছুটে এসেছেন ঢাকায়।
আব্দুল মান্নান ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘আমি চাই তারেক রহমান দেশে আসুক। ১৮ বছর ধরে আন্দোলন করছি তাকে দেশে আনতে। কিন্তু পারলাম না। খালেদা জিয়া সুস্থ হোক, সারাদেশের মানুষ তার জন্য দোয়া করছে, কান্না করছে। আমরা কিছু চাই না, শুধু তারেক জিয়াকে চাই। তিনি দেশে ফিরলে গণতন্ত্র ফিরবে, আমরাও কথা বলতে পারব।’
বিএনপির এই সমর্থক দাবি করেন, ‘গতকাল (শুক্রবার) রাতে খালেদা জিয়াকে স্বপ্নে দেখেছি। স্বপ্ন দেখার পর আর থাকতে পারলাম না। তাই ধানের শীষ নিয়ে চলে এসেছি ঢাকায়।’
বিজ্ঞাপন
এদিকে খুলনা থেকে এসেছেন মিরাজ হোসেন নামে বিএনপির এক সমর্থক। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) পছন্দ করি। কোনো পদ নেই। আজ ছুটি, তাই হাসপাতালে এলাম শুধু খোঁজ নিতে।’
বরগুনা থেকে এসেছেন মনির ভুঁইয়া। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘মনের টানেই এসেছি। জানতাম, দেখতে পাব না। কিন্তু না এলেই আফসোস হতো।’
নাটোরের সিংড়া থেকে যুবদল নেতা খুরশিদ আলম মৃধা রাতভর যাত্রা করে এসেছেন ঢাকায়। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘বেগম জিয়া শুধু রাজনীতিবিদ নন, মানুষের আশা-ভরসার প্রতীক। তাকে না দেখলেও দোয়া করছি। আল্লাহ সুস্থ করে দিন।’
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে ‘সুখবর’
মোংলার আবদুস সাত্তার ব্যাপারী ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে প্রতিদিন আসছি। ম্যাডামের জন্য দোয়া করছি।’
এদিকে শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে ব্রিফ করেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
তিনি জানান, ‘বিএনপি চেয়ারপারসনের অবস্থা স্থিতিশীল। বিদেশে নেওয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত আছে। তবে যাত্রা নির্ভর করছে তার শারীরিক অবস্থার ওপর। চিকিৎসায় নিয়োজিত মেডিকেল টিম সবুজ সংকেত দিলেই ম্যাডামকে লন্ডনে নেওয়া হবে।’
গত ২৩ নভেম্বর রাতে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দেশি–বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে তার চিকিৎসা চলছে। পাশাপাশি হাসপাতাল ও এর পাশপাশে রয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
শনিবারও (৬ ডিসেম্বর) এভারকেয়ার হাসপাতাল এলাকায় কড়া নিরাপত্তা। হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে কাঁটাতারের ব্যারিকেড; এসএসএফ, বিজিবি ও পুলিশের টহল ছিল চোখে পড়ার মতো।
এএইচ
