মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

‘ফাঁসির মঞ্চ থেকে আল্লাহ আমাকে জনতার মঞ্চে নিয়ে এসেছেন’

জেলা প্রতিনিধি, রংপুর
প্রকাশিত: ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৬:৫৮ পিএম

শেয়ার করুন:

ATM azhar
প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন এটিএম আজহার। ছবি: ঢাকা মেইল

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দণ্ডিত হয়ে ফাঁসি কার্যকরের অপেক্ষায় ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম। তবে ৫ আগস্টের অভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতিতে তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন। যে গলায় ফাঁসির রশি পরার কথা ছিল সেই গলায় এখন জনতার ভালোবাসার ফুলের মালা। এজন্য তিনি আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করেছেন। আমৃত্যু রংপুরের মানুষের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেলে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জামায়াতে ইসলামীর বিভাগীয় জনসভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সব খুনির বিচার, প্রয়োজনীয় সব সংস্কারের পর নির্বাচনসহ চার দফা দাবিতে জনসভার আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামীর রংপুর মহানগর ও জেলা শাখা।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন

এ জীবন আমার এক্সটেনশন লাইফ: ঢাকা মেইলকে এটিএম আজহার

এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, আমি আজ মুক্তভাবে কথা বলতে পারছি। কিছুদিন আগেও আমি কারাগারে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। আল্লাহ যে আমাকে ফাঁসির মঞ্চ থেকে জনতার মঞ্চে নিয়ে আসবে, এটা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানত না। আজকে আমি ফাঁসির মঞ্চ থেকে লক্ষ জনতার মঞ্চে হাজির হয়েছি। সবই আল্লাহর মেহেরবানি, রহমত। যে গলায় আমার রশি পরানোর কথা ছিল, সেই গলায় ফুলের মালা পরানো হলো। আল্লাহ আমাকে মুক্ত করেছেন।

Azhar2

জামায়াতের এই কারা নির্যাতিত নেতা বলেন, রংপুরের জনগণ কেউ বলতে পারবে না যে, আমি কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। আমি কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। কিন্তু আমাকে অপরাধী বানানো হলো। রংপুরের জনগণ সাক্ষী, যারা সাক্ষ্য দিয়েছে তারাও কিন্তু পরবর্তীতে বলেছেন, আমাদের জোর-জুলুম করে সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করা হয়েছে। আমার কারও প্রতি কোনো ক্ষোভ নাই, দুঃখ নাই।


বিজ্ঞাপন


আজহারুল ইসলাম বলেন, যার বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেওয়ার মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল। যার পরিসমাপ্তি হয়েছিল ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট। ৫ আগস্ট না হলে আপনারা আমার জানাজা পড়তেন। আমার মুক্তির জন্য আবু সাঈদ আমার পক্ষে কাজ করেছে। কেননা আমার মুক্তির প্রথম সোপান হচ্ছে আবু সাঈদ। তার মৃত্যুই আমাকে মুক্তির পথ দেখিয়ে দিয়েছে। আমি তার হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার দাবি করছি।

আরও পড়ুন

মুক্তি পেয়েই শাহবাগ সমাবেশে যোগ দিলেন এটিএম আজহার

দীর্ঘ ১৭ পর রংপুরে অনুষ্ঠিত এই জনসভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, ঢাকা দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, শহিদ আবু সাঈদের বাবা ও বড়ভাই রমজান আলীসহ জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। সভাপতিত্ব করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রংপুর মহানগরের আমীর এটিএম আজম খান।

Azhar3

এর আগে সকাল থেকেই জনসভাস্থলে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেন। দূর-দূরান্ত থেকে রিকশা, অটোরিকশা, ভ্যান, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানে জনসভায় জড়ো হন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। মাঠেই দুটি জামাতের মাধ্যমে জুমার নামাজ আদায় করেন তারা। এছাড়াও রংপুর নগরীর বিভিন্ন মসজিদে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে জনসভা মাঠে প্রবেশ করেন তারা। জনসমাবেশস্থল ছাড়াও ডিসির মোড়, কাচারী বাজার, আরডিআরএস মোড়সহ বিভিন্ন সড়কে নেতাকর্মীদের উপচেপড়া উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। কখনও রোদ, কখনও ছায়া, এই রোদছায়ার লুকোচুরি আবহাওয়ার মাঝেই মাঠে বক্তব্য শোনেন হাজার হাজার নেতাকর্মী। জনসভা থেকে আগামী নির্বাচনে রংপুর বিভাগের ৩৩টি আসনে জামায়াতের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।

প্রতিনিধি/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর