আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার স্থায়ী সমাধানসহ তিন দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে নির্বাহী আদেশে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
বিজ্ঞাপন
ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ডের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ।
সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ৩ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়-
১. আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার স্থায়ী সমাধান করে তাকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে হবে এবং গত ১৫ বছরে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে সংগঠিত সমস্ত সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
২. মহান মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে সংগঠিত প্রত্যেকটি ছাত্র হত্যার বিচার নিশ্চিতে বিশেষ কমিশন গঠন করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
৩. জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে ও শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন নিয়ে যে দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি হয়েছে তা দ্রুত নিরসন করতে হবে এবং শহীদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা দ্রুত প্রকাশ করে তাদের মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান খান বলেন, বিগত ১৫ বছরের দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো ছাত্রলীগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে গণরুম-গেস্টরুমে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন, সারারাত ধরে পিটিয়ে ছাত্র হত্যা, ধর্ষণসহ এমন হেন কোনো অপরাধ নাই যার সঙ্গে ছাত্রলীগ জড়িত নয়। সারাদেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমনেও সবসময় প্রধান লাঠিয়ালের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলো ছাত্রলীগ।
তিনি আরও বলেন, তাদের সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে সকল ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারই ধারাবাহিকতায় ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দমাতে সংগঠিত গণহত্যার প্রধান অংশীদারে পরিণত হয় ছাত্রলীগ। হাজারো মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হয়েছে। জনগণের মাঝে এই গণহত্যায় অংশ নেওয়া সকলের বিচার নিশ্চিত করা ও গণহত্যায় অংশগ্রহণকারী সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। এমতাবস্থায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাহী আদেশে গতকাল ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এই মুহুর্তে এ সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা থাকলেও আমরা মনে করি ছয় মাসের মধ্যে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার স্থায়ী সমাধান করে তাকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মাঝে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক ফারহানা মুনা, ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি আল-আমিন রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সম্পাদক সাকিবুর রনি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাইদুর রহমান, ঢাকা মহানগর শাখার সহ-সভাপতি তুহিন ফরাজীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
কারই/এমএইচএম