ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে প্রায় দুই মাস আগে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন টানা সাড়ে ১৫ বছরের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ভারতেই স্থায়ী হবেন নাকি অন্য কোনো দেশে যাবেন সেটা নিয়ে আলোচনা চলছিল এতদিন। তবে গতকাল থেকে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে শেখ হাসিনা ভারত ছেড়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ আরব আমিরাতে চলে গেছেন। সেখানকার আজমান শহরে তিনি অবস্থান করছেন।
তবে শেখ হাসিনার ভারত ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। নির্ভরযোগ্য কোনো গণমাধ্যম এখনো এই বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। ভারতের কোনো কর্তৃপক্ষও এ ব্যাপারে মুখ খোলেনি।
বিজ্ঞাপন
গত কয়েক দিন ধরেই শেখ হাসিনা ভারত ছাড়তে পারেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। এর মধ্যেই গতকাল রোববার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে শেখ হাসিনা আমিরাতে চলে গেছেন। কোনো কোনো গণমাধ্যমও এটা নিয়ে খবর প্রকাশ করেছে। তবে কেউই কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রের কথা উল্লেখ করতে পারেনি।
কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম দাবি করছে, আরব আমিরাতের আজমান শহরে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। সম্প্রতি সেখানে নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে দেখা গেছে। সেই শহরে শামীম ওসমানের বাড়ি আছে বলে খবর বেরিয়েছে। তাই মনে করা হচ্ছে, আরব আমিরাতের আজমান শহরে শামীম ওসমানের বাড়িতে শেখ হাসিনা আশ্রয় নিতে পারেন।
বিজ্ঞাপন
শেখ হাসিনা ভারতে সাময়িক আশ্রয়ে আছেন এমনটা জানিয়েছিল দেশটি। পশ্চিমা কয়েকটি দেশে শেখ হাসিনকে স্থায়ীভাবে অবস্থানের সুযোগ করে দিতে ভারত দূতিয়ালি করলেও সফল হয়নি বলে জানা যাচ্ছিল। পরে মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশে হাসিনাকে থিতু করার পরিকল্পনা ছিল দেশটির। যদিও আরব আমিরাত আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে বলে খবর বেরিয়েছিল। এবার শেখ হাসিনা সত্যিই আমিরাতে গিয়ে থাকলে কীভাবে গেছেন এবং সেখানে কত দিন থাকবেন সেটা এখনো নিশ্চিত নয়।
সম্প্রতি একাধিক সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের কাছে জানতে চেয়েছে, শেখ হাসিনা কীভাবে, কোন ব্যবস্থায় দিল্লিতে অবস্থান করছেন? জবাবে ভারত বলেছে, খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যের কোনো একটি দেশে তিনি চলে যাবেন। তবে এনিয়ে ওয়াশিংটন বা দিল্লি প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে মাত্র ৪৫ মিনিটের প্রস্তুতিতে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। সুসম্পর্কের কারণে দেশটি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে সাময়িক আশ্রয় দেয়। ইতোমধ্যে ভারতে অবস্থানের বৈধ মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠছিল শেখ হাসিনা সেখানে কী হিসেবে আছে।
এছাড়া শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা সম্ভব হবে না বলেই মনে করছিল দেশটির কূটনৈতিক মহল। এজন্য তাকে তৃতীয় কোনো দেশে আশ্রয় পাইয়ে দিতে ভারত চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। তবে শেষমেশ ভারত তাদের সেই প্রচেষ্টায় সফল হয়েছে নাকি শেখ হাসিনা এখনো দিল্লিতেই অবস্থান করছেন, এটা নিয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
জেবি