শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪, ঢাকা

স্বতন্ত্র এমপিদের কী বার্তা দেবেন প্রধানমন্ত্রী?

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:৫৯ পিএম

শেয়ার করুন:

স্বতন্ত্র এমপিদের কী বার্তা দেবেন প্রধানমন্ত্রী?

এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ৬২ জন, যাদের দুই-তিনজন বাদে প্রায় সবাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। কেউ কেউ দলের গুরুত্বপূর্ণ পদেও রয়েছেন। সংসদে তাদের কী ভূমিকা হবে সেটা নিয়ে ঘরে-বাইরে আলোচনা চলছে। এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল রোববার (২৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় তাদের গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

সরকারপ্রধান ও সংসদ নেতা স্বতন্ত্র এমপিদের কী বার্তা দেবেন সেটা নিয়ে এখন আলোচনা শুরু হয়েছে। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরাও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার জন্য মুখিয়ে আছেন। তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী তাদের যে নির্দেশনা দেবেন সে অনুযায়ীই কাজ করবেন।   


বিজ্ঞাপন


প্রধানমন্ত্রী স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের কী নির্দেশনা দেবেন এ সম্পর্কে স্পষ্ট করে দায়িত্বশীল কোনো নেতাই কথা বলছেন না। তারা বলছেন, এটা একান্তই প্রধানমন্ত্রীর ব্যাপার। আগেভাগে সে সম্পর্কে কিছু বলা যাবে না।

আরও পড়ুন

‘বিরোধী দল’ নাকি ‘বিরোধী জোট’ কোন পথে আওয়ামী লীগ

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলীয় সূত্র জানিয়েছে, সংসদে স্বতন্ত্র এমপিদের ভূমিকা কী হবে সেটা সম্পর্কে স্পষ্ট নির্দেশনা দেবেন সংসদ নেতা। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের অনেকেই নিজ দল আওয়ামী লীগের এমপি হিসেবে পরিচিত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা দেখালেও দলীয় প্রধান সেটা হতে দেবেন না। আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলে তাদের যুক্ত করা হবে না। প্রধানমন্ত্রী চাচ্ছেন, স্বতন্ত্ররা স্বতন্ত্রই থাকবে। তারা সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের গঠনমূলক সমালোচনা করবে এবং ভালো কাজের প্রশংসাও করবে। তারাও আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিশে গেলে সংসদ প্রাণবন্ত থাকবে না।

আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের গণভবনে ডাকার একটি বড় উদ্দেশ্য হচ্ছে, নির্বাচনকেন্দ্রিক দলে যে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে সেটা দূর করার নির্দেশনা দেওয়া। এবার প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দেওয়ায় আওয়ামী লীগের নিজেদের মধ্যেই বিবাদের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক জায়গায় সেটা সংঘাতেও রূপ নিয়েছে। এটা নিয়ে দল উদ্বিগ্ন। ইতোমধ্যে সারাদেশে আভ্যন্তরীণ এই বিরোধ নিরসনে কাজ শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। এক্ষেত্রে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের বড় ভূমিকা প্রত্যাশা করছে দল। এজন্য তাদের ডেকে নির্দেশনা দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন

কেন প্রতীকে নির্বাচন থেকে সরে এলো আওয়ামী লীগ

এবারের নির্বাচনে মনোনয়ন চূড়ান্ত করার আগে আওয়ামী লীগ সভাপতি তিন হাজারের বেশি মনোনয়নপ্রত্যাশীকে গণভবনে ডেকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি জানিয়েছিলেন, কেউ নিজের যোগ্যতায় পাস করে আসতে পারলে তার জন্য সুযোগ রয়েছে। মূলত সেই নির্দেশনা পেয়েই দলের অন্তত ২৬৯ জন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। এর মধ্যে বিজয়ী হয়েছেন অন্তত ৬৮ জন। তাদের বেশিরভাগই নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করে বিজয়ী হয়েছেন। অন্যবার নৌকার বিরুদ্ধে কেউ নির্বাচন করলে তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হতো। তবে এবার যেহেতু দলীয়প্রধান আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন এজন্য কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। বরং যারা নিজেদের যোগ্যতায় বিজয়ী হয়ে এসেছেন তাদের অভিনন্দন জানাবেন শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, স্বতন্ত্র এমপিদের বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের পদধারী হলেও আপাতত তাদের সংসদীয় দলে নেওয়ার পরিকল্পনা নেই। তাই স্বতন্ত্রদের আলাদা জোট গঠনের মাধ্যমেই সংসদীয় কার্যক্রমে অংশ নিতে হবে। স্বতন্ত্র জোটের নেতা বিরোধীদলীয় নেতার মর্যাদা না পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ, আওয়ামী লীগ চাচ্ছে জাতীয় পার্টিকেই প্রধান বিরোধী দল বানাতে। এ ব্যাপারে স্বতন্ত্র এমপিদের ভূমিকা কী হবে সেটা প্রধানমন্ত্রী নির্ধারণ করে দেবেন।

আরও পড়ুন

সংরক্ষিত আসনের জন্য দৌড়ঝাঁপ, চেষ্টা চালাচ্ছেন সেলিব্রেটিরাও

এদিকে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের কাছে সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচনের কথা জানিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারেও তারা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর তার নির্দেশনার আলোকে সিদ্ধান্ত নেবেন স্বতন্ত্র এমপিরা। স্বতন্ত্র সদস্যরা ৬২টি আসন পাওয়ায় ১১টি নারী আসন যাবে তাদের কোটায়। স্বতন্ত্র থেকে কারা সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য হবেন সেটাও আগামীকালের গণভবনের বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত হবে।

জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর