নেত্রকোনা-২ (সদর-বারহাট্টা) আসনের জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী রহিমা আক্তার (আসমা সুলতানা) নিজ দলের জেলা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদকসহ ছয়জন নেতার বিরুদ্ধে নির্বাচন নষ্ট, মানহানি ও চাঁদা দাবির মামলা করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) রহিমা আক্তার বাদী হয়ে নেত্রকোনার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামাল হোসাইনের আদালতে এই মামলা দায়ের করেন।
বিজ্ঞাপন
এর আগে গত ২৬ ডিসেম্বর দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় না করা, এলাকায় না থাকাসহ নির্বাচনে কোনো রকম প্রচার-প্রচারণা না করার অভিযোগে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রহিমা আক্তারকে নিজ দলের নেতা-কর্মীরা অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে সংবাদ সম্মেলন করে নেতা-কর্মীরা লাঙ্গল প্রতীকের ওই প্রার্থীর নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা করা হয়। এ ঘটনায় প্রার্থী রহিমা আক্তার জেলা কিমিটির সাধারণ সম্পাদকসহ ছয়জন নেতার বিরুদ্ধে মামলা করলেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বারহাট্টা উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ইসলাম উদ্দিন, সদস্য সচিব মোমেন আকবরী, জাতীয় কৃষক পার্টি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাসেম, সদর উপজেলা কমিটার সভাপতি আতিকুর রহমান ও নেত্রকোনা পৌর শাখার সভাপতি ফারুক ইয়ার খান।
মামলায় প্রার্থী উল্লেখ করেন, নির্বাচন পরিচালনার জন্য জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মান্নান খানসহ কয়েকজন তার (রহিমা) কাছে ৭৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা দাবি করেন। তা না হলে তারা নির্বাচন পরিচালনা করবেন না। তাদের দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় রহিমাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
রহিমা আক্তার বলেন, ওই নেতারা নির্বাচনে খরচের জন্য ৭৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা দাবি করেছেন। টাকা না দিলে তারা নির্বাচনে কাজ করবেন না বলে জানান। টাকা না দেওয়ায় তারা সাংবাদ সম্মেলন করে আমাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করাসহ নানা সম্মানহানিকর কথাবার্তা বলেছেন। তাদের সমস্ত কার্যকলাপের প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে। আমার নির্বাচন নষ্ট করা, চাঁদা দাবি ও মানহানি করার অভিযোগে আমি আদালতে মামলা করেছি। মামলার অভিযোগের সাথে তাদের বিরুদ্ধে সমস্ত প্রমাণাদিও জমা দিয়েছি। আদালত বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নেত্রকোনা পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।
নেত্রকোনা পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহীনুর কবির জানান, আদালতের নির্দেশ এখনো হাতে পাননি। পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মান্নান খান বলেন, লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী রহিমা আক্তার নির্বাচনী এলাকায় ভোটারদের কাছে গিয়ে কোনো রকম প্রচার-প্রচারণা চালাননি। তিনি দলীয় কোনো নেতাকর্মীর সঙ্গেও কোনো ধরনের যোগাযোগ করেন না। তিনি ঢাকায় থাকেন। দল যেহেতু তাকে মনোনয়ন দিয়েছে তাই আমরা প্রথম পর্যায়ে তার পক্ষ হয়ে প্রচার-প্রচারণা করেছিলাম। তিনি দলের সঙ্গে আত্মঘাতী কাজ করায় আমরা জেলা, পৌরসভা, সদর ও বারহাট্টা কমিটি তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি। এজন্য প্রতিশোধ নিতেই তিনি আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদা দাবির কথা উল্লেখ করে মামলা করেছেন শুনেছি।
নেত্রকোনা-২ আসনে নৌকার মনোনীত প্রার্থী সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আশরাফ আলী খান, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান, লাঙ্গলের প্রার্থী রহিমা আক্তারসহ সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আসনটিতে মোট ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৬৫ হাজার ৬১৬ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার দুই লাখ ৩১ হাজার ২৯৭ জন।
প্রতিনিধি/জেবি