রোববার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

‘হামাক একখান ভোট দিবান না’

জেলা প্রতিনিধি, রংপুর
প্রকাশিত: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:০৫ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

‘কি বাহে একখান ভোট মুই পামু না, হামাক একখান ভোটার দিবান না, হামাক একখান ভোট দিবা।’- এভাবেই আঞ্চলিক ভাষায় পীরগঞ্জবাসীর কাছে ভোট চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই যে আমার মেয়ে শিরীন শারমিন চৌধুরীকে দিয়ে গেলাম। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করা মানে আমাকে ভোট দেওয়া, জয়কে ভোট দেওয়া, সে জয়ের বোন, পুতুলের বোন। এ সময় শিরীন শারমিন চৌধুরীর হাত তুলে উপস্থিত জনতাকে দেখান প্রধানমন্ত্রী।


বিজ্ঞাপন


পরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌকাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। হাত তুলে দেখান। নৌকা জয়ী হলে আবারো রংপুরে আসব। এ সময় উপস্থিত জনতা হাত তুলে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার ওয়াদা করেন।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে রংপুরের পীরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন শেখ হাসিনা।

আরও পড়ুন

স্বামীর কবর জিয়ারত করলেন শেখ হাসিনা 

প্রধানমন্ত্রী পীরগঞ্জবাসীর উদ্দেশে বলেন, ৭ জানুয়ারি নির্বাচন, এজন্য আপনাদের কাছে এসেছি। আপনারা ২০০৮ এর নির্বাচন, ২০১৪, ২০১৮ এর নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। আপনারা এমন একজনকে ভোট দিয়েছেন, যিনি আমার কন্যার মতো। তাকে আমি এনেছি এখানে। অত্যন্ত মেধাবী, সেই সাথে পার্লামেন্টের স্পিকার। পার্লামেন্টের স্পিকার হচ্ছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতির পরেই যার অবস্থান। আমি পার্লামেন্টের সংসদ নেতা। পার্লামেন্ট পরিচালনা করেন স্পিকার। আমি গোপালগঞ্জ থেকে প্রধানমন্ত্রী আর এখান থেকে জাতীয় সংসদের স্পিকার।


বিজ্ঞাপন


পীরগঞ্জে পুত্রবধূ শেখ হাসিনা বলেন, আমরা অত্যন্ত গর্বিত। আমি মনে করি পীরগঞ্জবাসীর জন্য অত্যন্ত গৌরবের। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে স্পিকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন পদ। রাষ্ট্রপতির অবর্তমানে স্পিকার অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। আপনারা কি বুঝতে পারেন, এই শিরীন শারমিন চৌধুরীকে নির্বাচিত করে পীরগঞ্জবাসী কত উঁচু আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। এজন্য আমি পীরগঞ্জবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমি যে প্রার্থী দিয়েছি, উপহার দিচ্ছি, এই যে শিরীর শারমিন চৌধুরী জীবনে কোনো দিন ফার্স্ট ছাড়া সেকেন্ড হয়নি। বিদেশ থেকেও ডিগ্রি নিয়ে এসেছে। অত্যন্ত মেধাবী। আমরা চাই সবাই শিক্ষায় দীক্ষায় এগিয়ে যাক। এই পীরগঞ্জে কোনো কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাই ছিল না। আমরা শিরীন শারমিনের নেতৃত্বে মেরিন একাডেমি করে দিয়েছি। অনেকগুলো ট্রেনিং একাডেমি করে দিয়েছি। এখানকার রাস্তাঘাট পাকা করে দিয়েছি। প্রাথমিক বিদ্যায়লগুলো ঠিক করে দিয়েছি। জরাজীর্ণ ভবন নতুন করে দিয়েছি। জয়িতা ফাউন্ডেশন এই শিরীন শারমিন মন্ত্রী থাকাকালীন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

আরও পড়ুন

অগ্নিসন্ত্রাসীদের রুখে দাঁড়ান, মানুষের মুখে হাসি ফোটাবো 

শেখ হাসিনা বলেন, পীরগঞ্জ অত্যন্ত অবহেলি একটা জায়গা ছিল। সবাই পীরগঞ্জকে চেনে, পীরগঞ্জের সার্বিক উন্নয়নে ব্যপক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। আমি বলব, ১৫ বছর আগের কথা চিন্তা করবেন। এই পীরগঞ্জ কেমন ছিল। আর এখন কেমন হয়েছে। গোটা রংপুর বিভাগকে দারিদ্র বিমোচন একাডেমি করে দিচ্ছি।

PM11

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবথেকে অবহেলিত রংপুর। আমি নির্বাচনে আসার পর বিভাগ হিসেবে চালু করি। রাস্তা-ঘাট কালভার্ট ব্রিজসহ সার্বিকভাবে রংপুরের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। নদী ভাঙন থেকে রক্ষা করা, যার সুফল আপনারা পাচ্ছেন। আমরা পীরগঞ্জের সাথে দিনাজপুরের সংযোগে ওয়াজেদ মিঞা সেতু নির্মাণ করে দিয়েছি। যাতে পীরগঞ্জের মানুষ সহজেই দিনাজপুর যেতে পারে। রংপুর বিভাগের প্রতিটি উপজেলা ভূমিহীনমুক্ত হয়েছে। আমি এভাবে সারা বাংলাদেশ ভূমিহীনমুক্ত করতে কাজ করছি। সবচেয়ে বেশি মঙ্গাপীড়িত রংপুর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আর মঙ্গা হয়নি। এ ক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতা দরকার।

আরও পড়ুন

নৌকায় ভোট দেওয়ায় দেশের উন্নয়ন হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী 

শেখ হাসিনা বলেন, আমি আপনাদের কাছে এসেছি, সামনে নির্বাচন।  আপনারা জানেন ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নির্বাচনে জিতেছি। এটাই বাংলাদেশে প্রথম ধারাবাহিক গণতন্ত্র। যদিও অনেকে এই ধারাবাহিক গণতন্ত্র চায় না। স্থিতিশীল তারা চায় না। যারা অবৈধভাবে পকেট থেকে ক্ষমতা দখল করতে এসেছে, তারা অগ্নিসন্ত্রাস করছে। তারা মানুষের শান্তি দেখতে পারে না। বাদ যায়নি রংপুরও। বাসে ট্রেনে আগুন লাগাচ্ছে। ট্রেনের ফ্লিস প্লেট তুলে ফেলছে। এতে ট্রেন পড়ে যাবে। বিএনপি জামায়াত মানুষ মারার ফাঁদ তৈরী করছে। এর থেকে ঘৃণার আর কী হতে পারে বলেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, শুধু তাই না, ট্রেনে আগুন দিয়েছে। মা আর শিশু, মা তো সন্তান ফেলতে পারে না। মা সন্তানকে বুকে নিয়ে আগুনে পুড়ে মারা গেছে। এই দৃশ্য যারা দেখে সহ্য করা যায় না। ওই বিএনপি-জামায়াত মিলে অগ্নিসন্ত্রাস যারা করে, তারা মানুষ মেরে আন্দোলন করে। আমরা মানুষের জন্য রাজনীতি করি। মানুষকে হত্যা করে, মানুষকে খুন করে কিসের আন্দোলন। আমাদের প্রত্যেককে সজাগ থাকতে হবে। যারা এসব ঘটাতে আসবে তাদের ধরে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। পুলিশকে দিতে। আমরা মানুষের কল্যাণে কাজ করি। দিন রাত পরিশ্রম করে মানুষের ভাগ্য বদলাতে কাজ করছি। আর তারা আসে ধ্বংস করতে। দরকার হলে আমাদের আশেপাশে রেললাইন পাহারা দিতে হবে। আমি সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।

প্রতিনিধি/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন