এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি না থাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছেন নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। অন্যান্য বার বিদ্রোহী হলে দলের পক্ষ থেকে বহিষ্কারের হুঁশিয়ারি দেওয়া হলেও এবার সেটা দেওয়া হয়নি। বরং পরোপক্ষভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে। এতে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের বিপরীতে স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন নিজ দলের শত শত নেতা। ফলে মাঠ পর্যায়ে একই দলের নেতাকর্মীরা দ্বিধা-বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।
গতকাল সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) প্রতীক বরাদ্দের পর আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। টানা ১৮ দিন চলছে এই প্রচার। তবে প্রচারের শুরুতেই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকেরা সংঘাতে জড়িয়েছেন। গত দুই দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে এই সংঘাতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এতে শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আক্রান্ত হয়েছেন খোদ প্রার্থীও। ভোটের সময় যত ঘনিয়ে আসবে এই সংঘাতের মাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিজ্ঞাপন
দেশের বিভিন্ন এলাকায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের সংঘাতের খবর জানিয়েছেন আমাদের প্রতিনিধিরা।
বেনাপোলে সংঘর্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ আহত ১০
ভোট চাইতে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটন বেনাপোল স্থলবন্দরের শ্রমিকদের হাতে হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর জেরে লিটনের পক্ষের ও বিপক্ষের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও শ্রমিকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও হামলার ঘটনায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বন্দর এলাকা। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থী লিটনসহ ১০ জন আহত হন।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে বেনাপোল স্থলবন্দর এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
বিজ্ঞাপন
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে দফায় দফায় প্রতিবাদ মিছিল করেন বন্দরের শ্রমিক ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
এদিকে বন্দরের ৯২৫ শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি রশিদ অভিযোগ করে বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটন আমাদের কাছে ভোট চাইলে তাকে বলি, নৌকার প্রার্থী ছাড়া কাউকে ভোট দেব না। তুমি আগে এ বন্দরে বোমা মেরেছো, শ্রমিকদের মেরে আহত করেছ, তাই তোমাকে ভোট দেব না। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে লিটন আমাকে চড়-থাবা মারতে থাকেন। এসময় অন্যান্য শ্রমিকরা এসে তাদের ধাওয়া করলে তারা পালিয়ে যান।
এদিকে যশোর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটন জানান, সকালে তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে বন্দরের শ্রমিকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করতে যান। এসময় হঠাৎ বেনাপোল স্থলবন্দরের শ্রমিক নেতা রশীদ ও রাজু সর্দার তাদের ওপর চড়াও হয়ে গালিগালাজ করতে থাকেন। এসময় প্রতিবাদ করলে তাদের মারধর করা হয়। এতে তিনিসহ ১০ জন আহত হয়েছেন।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নয়ন কুমার রাজবংশী জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিন শ্রমিককে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। এছাড়া সবাইকে সুষ্ঠুভাবে প্রচারণা চালানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
সরিষাবাড়ীতে সংঘর্ষে আহত ৫
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্বতন্ত্র ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদকসহ আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে সরিষাবাড়ী রেলস্টেশন এলাকার প্রেসক্লাব রোডে এ ঘটনা ঘটে। তবে তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যক্ষ আবদুর রশীদ (ট্রাক) সমর্থক মিঠু মিয়া ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহবুবুর রহমান হেলাল (নৌকা) সমর্থক লুৎফর রহমানের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ জড়ো হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক পৌর কমিশনার বেলাল হোসেন, মিঠু মিয়া, লুৎফর রহমান, ফারুক হোসেনসহ উভয়পক্ষে অন্তত পাঁচজন আহত হন।
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুশফিকুর রহমান জানান, নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। তাৎক্ষণিক সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
পাবনায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু সাইয়িদ দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ
পাবনার সাঁথিয়ায় পাবনা-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক অধ্যাপক আবু সাইয়িদের নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। দুই ঘণ্টা পর সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আলপনা ইয়াসমিনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সাঁথিয়া বাজারের বোয়ালমারী মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
এদিন দুপুর দেড়টার দিকে ঘটনাস্থলে মিডিয়াকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন অধ্যাপক আবু সাইয়িদ। এসময় পাশ দিয়ে নৌকার মিছিল যাচ্ছিল। এসময় তারা অধ্যাপক আবু সাইয়িদকে দেখে নৌকার শ্লোগান দিতে শুরু করেন এবং তাকে ঘিরে ধরেন। তাদের মাঝে অবস্থান নেয় পুলিশ। পুলিশ উভয় পক্ষকে সরে যেতে বলেন কিন্তু কেউই সরে যান নাই। অধ্যাপক আবু সাইয়িদ পাশে একটু সরে গিয়ে বসে অবস্থান নেন। আর নৌকার সমর্থকরা পাশেই স্লোগান স্লোগানে অবস্থান নেন। পুলিশ উভয় পক্ষকে ঘিরে রাখেন। এসময় আবু সাইয়িদকে লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি ডিম নিক্ষেপ করে নৌকার সমর্থকরা। সেগুলো অধ্যাপক আবু সাইয়িদের মাথায় আঘাত হানে।
সাঁথিয়া পৌর মেয়র মাহবুবুল আলম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা খোকন ও বেড়া ভাইস চেয়ারম্যান মেজবাহ মোল্লার নেতৃত্বে আ.লীগ নেতাকর্মীরা অধ্যাপক আবু সাইয়িকে ঘিরে ধরে স্লোগান দিতে থাকে। এ অবস্থায় প্রায় দুই ঘণ্টা পর সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আলপনা ইয়াসমিন উভয় পক্ষকে সরে যেতে বাধ্য করেন। উভয় পক্ষ সরে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
টাঙ্গাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর হামলা
টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনের স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী ইউনুস ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু (ঈগল প্রতীক) ও তার নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ভূঞাপুর পৌর শহরের দারোগ আলী সুপার মার্কেটের দোতলায় ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স অফিস কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
খবরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলে তাদের উপস্থিতিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনুস ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু ওই কার্যালয়ে তার নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণা আলোচনা করে। তাৎক্ষণিক উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাহিমা বিনতে আখতার ও ভূঞাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ্ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
জানা যায়, স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী ইউনুস ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু তার সমর্থকদের সাথে দুপুরে উল্লেখিত কার্যালয়ে নির্বাচনী আলোচনা করছিলেন। এসময় দুর্বৃত্তরা ওই কার্যালেয় ইট-পাটকেল ছুঁড়লে অফিসের গ্লাস ভেঙে যায়। পরে অফিসের দরজা ভেঙে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশেল উপস্থিতির টের পেয়ে দুর্বৃত্তরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
গায়ে পেট্রল ঢেলে আত্মহত্যার হুমকি স্বতন্ত্র প্রার্থীর
নিজের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন পুড়ে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন জয়পুরহাট-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাহফুজ চৌধুরী অবসর। সঠিক বিচার না পেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে তিনি এ কাজ করবেন বলে জানান।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) প্রতীক বরাদ্দের পর বিকেল পাঁচটার দিকে কালাই উপজেলার মাত্রাই বাজারে পোস্টার টাঙানোকে কেন্দ্র করে নৌকা মার্কার প্রার্থী আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের কর্মী-সমর্থকের হামলায় আহত হন আটজন কর্মী-সমর্থক।
প্রতিবাদে রাত ১১টার দিকে জয়পুরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মূল ফটকের সামনে অবস্থান কর্মসূচির সময় তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সালেহীন তানভীর গাজী উপস্থিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নেতাকর্মীদের প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার আশ্বাসে অবস্থানরত কর্মী-সমর্থকরা কর্মসূচি শেষ করেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর, আহত ১২
নেত্রকোনার-৩ (আটপাড়া-কেন্দুয়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টুর নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা হয়েছে। এতে ১২ জনের বেশি কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। এ সময় সেখানে থাকা ১২-১৪টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। অভিযোগের তীর আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের দিকে।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে কেন্দুয়া উপজেলার মাসকা বাজারে পিন্টুর নির্বাচনী কার্যালয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে আহতদের স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসা দেওয়া হয়।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী অসীম কুমার উকিলের সমর্থক মাসকা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সালাম বাঙালির নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু (ট্রাক প্রতীক) জানান, মাসকা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সালাম বাঙালির নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী আমার নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা চালায় চালায়। এতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী অসীম কুমার উকিল ও তার স্ত্রী অপু উকিলের ইন্ধন রয়েছে। হামলায় আমার ১২-১৪ জন সমর্থক আহত হয়। এছাড়া সেখানে থাকা -১২-১৪টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
হাত-পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে
নাটোরের গুরুদাসপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর দুই সমর্থকের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নৌকা প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
গুরুদাসপুর থানার কর্মকর্তা (ওসি) মো. উজ্জল হোসেন বিষয়টি ঢাকা মেইলকে নিশ্চিত করেছেন।
আহত স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক নাজিরপুর বাজারের ময়েজ উদ্দিনের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৭) ও খালেক মোল্লার ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৩৫)।
নাজিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান উজ্জল হোসেন জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোরের গুরুদাসপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফ আব্দুল্লা বীন কুদ্দুস শোভনের সমর্থকরা নির্বাচনের প্রচারণা করছিলেন। সন্ধ্যায় উপজেলার গোডাউন মোড়ে শরিফুল ইসলাম ও সিরাজুল ইসলামের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নৌকার সমর্থরা হামলা চালায়। এতে শরিফুলের বাম পা ভেঙে এবং সিরাজুল ইসলামের ডান পা বাম হাত ভেঙে যায়। পরে স্থানীয়রা তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। একজনের অবস্থা অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেলে রেফার করা হয়েছে।
আহত শরিফুল ইসলাম জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থী শোভনের প্রচার প্রচারণা জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে গোডাউন মোড় দিয়ে নাজিরপুর বাজারে যাচ্ছিলেন তিনি। এসময় নৌকা প্রার্থী ও নাজিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী প্রামানিকের সমর্থক ইউপি সদস্য আলমের নেতৃত্বে ৮/১০ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের দু'জনের ওপর হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়।
নৌকা-স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত ৪
ঝিনাইদহ সদরে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটছে। এসময় ভাঙচুর করা হয়েছে দুটি প্রাইভটে কার। তখন আহত হয় উভয়পক্ষের অন্তত ৪ জন। তাদের মধ্যে নাসির মন্ডল নামের নৌকা প্রতীকের এক সমর্থককে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সদরের বাসুদেবপুর বাজারে এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন উদ্দিন।
স্থানীয়রা জানায়, আজ সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুলের সমর্থক সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম হিরণ বাসুদেবপুর বাজারে গাড়ি থেকে নেমে কিছু দূর এগোলে কে বা কারা ইট মেরে তার গাড়ি ভাঙচুর করে। এরই জেরে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী তাহজীব আলম সিদ্দিকীর সমর্থক ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। সেসময় ভাঙচুর করা হয় আরো একটি প্রাইভেটকার, আহত হয় ৪ জন।
ওসি শাহীন উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমান সেখান অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নৌকার প্রচারণায় ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক
লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের নৌকার প্রার্থী গোলাম ফারুক পিংকুর নির্বাচনী প্রচারণা মিছিল থেকে প্রথম দিন ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সমার্থকরা। এ সময় ‘নৌকার বিরোধীরা হুঁশিয়ার-সাবধান’ স্লোগানও ভেসে আসে মিছিল থেকে।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সদর উপজেলার মান্দারি বাজারে এ ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে দীর্ঘদিন যানজট সৃষ্টি হয় ঢাকা লক্ষ্মীপুর মহাসড়কে।
নৌকার প্রার্থী পিংকু লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদ্য উপ-নির্বাচনে একদিনের জন্য নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন এমপি পদে জয় হন।
এ আসন থেকে পিংকুর সঙ্গে ভোট যুদ্ধে লড়াই করবেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ সাত্তার (প্রতীক) ট্রাক। এছাড়াও জাতীয় পার্টির মো. রাকিব হোসেন (প্রতীক) লাঙ্গল, আব্দুর রহিম (প্রতীক) কাঁঠাল, মাঈম হাসান (প্রতীক) সোনালী হাঁস, মাহবুবুল করিম টিপু (প্রতীক) হাতুড়ি।
জেবি