দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে যা যা করা দরকার তাই করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান। তিনি বলেন, দিনের ভোট দিনেই হবে। আর ভোট হবে অবাধ ও সুষ্ঠু।
রোববার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে জেলার রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
এক প্রশ্নের জবাবে আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমি কোনো সময় দেখিনি রাতে ভোট হয়েছে। ভোট দিনে হয় এবং দিনের ভোট দিনেই হবে। ভোট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তা, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের যথাযথ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা-না করার এখতিয়ার সবার আছে। কিন্তু নির্বাচন বানচাল করা বা অন্যকে নির্বাচন করতে না দেওয়ার অধিকার আইন কাউকে দেয়নি। কমিশনে ৪৪টি দল নিবন্ধিত দল আছে। ছোট-বড় সব দলকে ভোটে অংশগ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। বিএনপিকেও আমরা বার বার আহ্বান জানিয়েছি। ভোটে অংশ নেওয়া অথবা না নেওয়ার স্বাধীনতা তাদের রয়েছে। তবে কোনো দল যদি নির্বাচনে অংশ না নিয়ে সহিংসতার চেষ্টা করে তা কঠোরভাবে দমন করা হবে। ভোটের পরিবেশ সৃষ্টিতে যা যা দরকার সেদিকে আমরা নজর দিচ্ছি।’
নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের বিষয়ে আনিছুর রহমান বলেন, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। কোনো ধরনের পক্ষপাতমূলক আচরণ ও শৈথিল্যতা প্রদর্শন করা যাবে না। দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। যদি কারও পক্ষপাতমূলক আচরণে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয় তাহলে তিনিই দায়ী থাকবেন এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিজ্ঞাপন
এই নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, কমিশন বরাবরই বলে আসছে, আমরা সুষ্ঠু অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চাই। এবং এর জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করতে যা যা দরকার, সবই করা হবে।
নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো শঙ্কা প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে কমিশনের করণীয় কী এমন প্রশ্নের জবাবে আনিছুর রহমান বলেন, আমাদের কাছে কেউ এখনও শঙ্কা প্রকাশ করেনি। এরই মধ্যে ছোট-বড় বিভিন্ন দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এতে মনে হচ্ছে, এবারের নির্বাচনে অনেকেই মাঠে থাকবেন এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাও হবে। আমরা আমাদের চোখ দিয়ে এই নির্বাচন দেখছি না। বিশ্ববাসীও দেখছে। কাজেই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করার কোনো বিকল্প নাই। যেকোনো মূল্যে গ্রহণযোগ্য করতে হবে।
নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভোটারদের কেন্দ্রে উপস্থিতি করানোর দায়িত্ব কমিশনের না। তবে কোনো ভোটার ভোট দিতে বাধাপ্রাপ্ত হলে কমিশন বিষয়টি দেখবে। তাদের নিরাপত্তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বিএনপি নির্বাচনে এলে তফসিল পুনর্বিবেচনা করা হবে কি না এমন প্রশ্নে আনিছুর রহমান বলেন, আমরা এখনও কারও কাছ থেকে কোনো আবেদন পাইনি। যদি কেউ নির্বাচনে আসে বা নির্বাচনের সময় নিয়ে কারও কথা থাকে, তবে সেক্ষেত্রে আমরা বিবেচনা করব। সেই বিবেচনা করার মত যথেষ্ট সময় আমাদের আছে।
এ সময় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম, রেঞ্জ পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) নুরে আলম মিনা, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ও পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ, বিজিবির রিজিওনাল কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজিদুর রহমান, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ইউনুছ আলী, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এনামুল হক উপস্থিত ছিলেন।
আইকে/এমআর