সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

ভোটে অংশ নেওয়া নিয়ে দ্বিধা-বিভক্ত ইসলামি দলগুলো

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ০৭:২৪ পিএম

শেয়ার করুন:

ভোটে অংশ নেওয়া নিয়ে দ্বিধা-বিভক্ত ইসলামি দলগুলো
কয়েকটি ইসলামি দল সম্প্রতি দফায় দফায় বৈঠক করে। ছবি: সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে ইসলামি দলগুলো। কওমি মাদরাসাভিত্তিক বেশির ভাগ দল নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণার ওপর অটল থাকলেও দুয়েকটি দল ইতোমধ্যে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কয়েকটি দলের নেতাদের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেও ভোটে না যাওয়ার ব্যাপারে তাদের ওপর তৃণমূলের চাপ রয়েছে। সেই চাপ উপেক্ষা করে ভোটে গেলে কোনো কোনো দলে ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন, শায়খুল হাদিস প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বিএনপির সাবেক জোটসঙ্গী জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও খেলাফত মজলিসসহ বেশ কয়েকটি দল আওয়ামী লীগের অধীনে ভোটে না যাওয়ার ব্যাপারে অনড় রয়েছে। তবে মুফতি আমিনীর প্রতিষ্ঠিত ইসলামী ঐক্যজোট এবং হাফেজ্জী হুজুর প্রতিষ্ঠিত খেলাফত আন্দোলন ইতোমধ্যে ভোটে যাওয়ার ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে।


বিজ্ঞাপন


সরকারের পাতানো ফাঁদে আমরা পা দেব না: চরমোনাই পীর 

এছাড়াও ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামিক ফ্রন্ট, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন, জাকের পার্টি ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) ভোটে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে যেসব ইসলামি দল ভোটে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সেগুলোর মাঠ পর্যায়ে খুব একটা প্রভাব নেই।


বিজ্ঞাপন


জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে দলের শীর্ষ নেতাদের অনেকেরই সম্মতি রয়েছে। নির্বাচনে গেলে তারা নানাভাবে লাভবানও হবেন। তবে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোর বিরোধী। এজন্য তৃণমূলের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তারা এখনো ভোটে না যাওয়ার ব্যাপারে অনড় রয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ, দলীয় শাস্তির মুখে জমিয়ত নেতা পাশা 

জমিয়তের সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শাহিনুর পাশা চৌধুরী গত বৃহস্পতিবার দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে কয়েকটি ইসলামি দলের সঙ্গে গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এতে দলটি ক্ষুব্ধ হয়ে তার দলীয় সব পদ স্থগিত করেছে। তবে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, দলীয়ভাবে নির্বাচনে না গেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সুনামগঞ্জ-৩ আসনে লড়বেন।

PM1
বৃহস্পতিবার কয়েকটি ইসলামি দলের নেতা দেখা করেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ছয়টি সমমনা ইসলামির দলের মধ্যে ভোটকে সামনে রেখে একটি লিয়াজোঁ গড়ে উঠেছিল। দফায় দফায় বৈঠকও করেছেন দলগুলোর নেতারা। তবে শেষ পর্যন্ত তারা এই সরকারের অধীনে ভোটে না যাওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। যদিও সেই জোটের শরিক ইসলামী ঐক্যজোট এবং খেলাফত আন্দোলন পরবর্তী সময়ে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

দলীয় প্রতীক না থাকলেও নির্বাচনে যাবে ইসলামী ঐক্যজোট 

গত কয়েক বছর ধরে বেশ আলোচনায় আসা চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ভোটে না যাওয়ার ব্যাপারে এখনো অনড় রয়েছে। শেষ পর্যন্ত ইসলামী আন্দোলন শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না বলে সাফ জানিয়েছেন দলটির নেতারা। চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীম সদ্য শেষ হওয়া চরমোনাই মাহফিলে লাখো জনতার সামনে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। দলীয় সরকারের অধীনে ভোট হলে সেই ভোটে কেন্দ্রে না যেতে আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে জামায়াতে ইসলামী বৃহৎ ইসলামি দল হলেও নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় তাদের দলীয়ভাবে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই। যদিও দলটি এখনো বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে রয়েছে।  

জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর