'যেমন কুকুর তেমন মুগুর' এমন নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করতে বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের দলের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির প্রথম সভায় এ কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
ওবায়দুল কাদের বলেন, জুঁই ফুলের গান গেয়ে লাভ নেই, আমাদের এখন কঠিন সময়। যেমন কুকুর তেমন মুগুর, ওইরকম ইশতেহার তৈরি করুন৷ দেশের গণতন্ত্র রক্ষা করতে হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে হবে। বিএনপি ক্ষমতা এলে গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে যাবে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জন্য, বাংলাদেশের জনগণের জন্য শেখ হাসিনা আল্লাহর রহমতের দান। আমরা গত বছরের নির্বাচন ইশতেহার করেছি। ইশতেহার পড়ে কয়জন? বুলেট পয়েন্টে করুন ইশতেহার। কোনো দরকার নেই বিশাল একটা পুস্তক রচনা করার। এ ধরনের ইশতেহার কেউ পড়বে না। মানুষের সময়ও নেই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব সব জায়গায়। আমাদের সময়ের সঙ্গে বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চলতে হবে। সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ। ক্ষমতায় থাকতে হলে এই চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জো বাইডেন বলেছেন আমি আবারও ক্ষমতা থাকতে চাই। কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে আমেরিকার গণতন্ত্র নষ্ট হবে। আমেরিকার গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে যাবে। আমার বয়স কোনো ব্যাপার না, গণতন্ত্র রক্ষার জন্য আমি আবারও ক্ষমতা থাকতে চাই। আমিও (ওবায়দুল কাদের) একইভাবে বলতে চাই, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হলে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে যাবে। এই স্পিরিটটা আমাদের রাখতে হবে। অ্যাকশন মুখে কর্মকাণ্ড করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: কঠিন সময় পাড়ি দেওয়ার সাহস শেখ হাসিনার আছে: কাদের
‘এখানে জুঁই ফুলের গান গেয়ে লাভ নেই। আমার সামনে এই ২৩ নম্বরে গ্রেনেডে বিস্ফোরণ, তার সামনে দাঁড়িয়ে আমি জুঁই ফুলের গান গাইব? আমাকেও অ্যাকশনে যেতে হবে। যেমন কুকুর তেমন মুগুর ওই রকম ইশতেহার তৈরি করুন। ২০৪০ সাল মাথায় রাখতে হবে।-বলেন সেতুমন্ত্রী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়ে গেছে এখন মাথায় স্মার্ট বাংলাদেশ। স্মার্টনেস কীভাবে আসবে? এর কীভাবে বিকাশ ঘটবে? এই বিষয়গুলো আমাদের চিন্তা করতে হবে।
ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় আমাদের দেশেও সেভাবেই হবে। কে এলো, কে এলো না এটা আমাদের বিষয় না। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। আমরা কারও ওপর চাপিয়ে দিচ্ছি না। কে আসবে, কে আসবে না এটা তাদের ব্যাপার। কে কারে নিষেধাজ্ঞা দিল সেটা আমাদের কোনো বিষয় না। নিষেধাজ্ঞা আমাদের বিষয় না। কারণ আমরা তো ইলেকশন করব। নির্বাচনের বাধা যারা দেবে, তারাই তো নিষেধাজ্ঞায় পড়বে। যারা বাধা দেবে তাদের গিয়ে ধরুন, তাদের হুমকি দেন।‘
‘একেক দিন একেক হুমকি আসে, কী আজব ব্যাপার? ইউক্রেন যুদ্ধে সারা পৃথিবীটা তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে, সুদান দুই ভাগ হয়ে যাচ্ছে, ফিলিস্তিনে প্রতিদিন নারী শিশুর রক্তস্রোত, আমাদের প্রতিবেশী মিয়ানমারে কী হচ্ছে? রোহিঙ্গাদের চাপিয়ে দিয়ে মানবতার জন্য শেখ হাসিনার প্রশংসা করলেন, এখন তো আমাদের সাহায্য কমে যাচ্ছে। ১২ থেকে ৮ ডলারে চলে আসছে, আমরা কীভাবে চালাব তাদের? কীভাবে চলবে এরা? আমরা আমাদের এসব নিয়েই আজকে ভাবছি। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এতো মাথা ঘামাচ্ছেন, পারেন না দুষ্টু ছেলে ইজরাইলকে থামাতে?’-বলেন সেতুমন্ত্রী কাদের।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক ড. আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে সভায় তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির সদস্য সচিব ড. সেলিম মাহমুদ, ড. সাত্তার মন্ডল, ড. বজলুল হক খন্দকার, অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ড. শামসুল আলম, ডা. দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ, শ ম রেজাউল করিম, শেখর দত্ত, ড. মাকসুদ কামাল, ড. মাহফুজুর রহমান, অধ্যাপক খায়রুল হোসেন, অধ্যাপক সাদেকা হালিম, সাজ্জাদুল হাসান, তারানা হালিম, ওয়াসিকা আয়েশা খান, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, জুনায়েদ আহমেদ পলক, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাত, সায়েম খান, সাদিকুর রহমান চৌধুরী, সাব্বির আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কারই/এমআর
