যারা তিনবার ক্ষমতায় থেকেও কোনো উন্নয়ন করতে পারেনি তারাই আজ কোনো উন্নয়ন দেখতে পায় না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) দক্ষিণ বনশ্রী এলাকায় ‘২ নম্বর ওয়ার্ডস্থ উন্নয়ন উৎসবে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ‘আজকে অনেকেই অনেক কথা বলেন। আজকে তাদের চোখে উন্নয়ন দেখা যায় না। যারা জীবনে উন্নয়ন করে নাই, উন্নয়ন করতে পারে নাই, তারা কীভাবে উন্নয়ন দেখবে? যারা উন্নয়ন করে, উন্নয়ন করতে পারে তারাই উন্নয়ন দেখবে। সাধারণ জনগণ যারা উন্নয়ন চায়, তারা দেশের উন্নয়ন প্রত্যাশা করে। জননেত্রী শেখ হাসিনা সে প্রত্যাশা পূরণ করছেন।’
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, যারা (উন্নয়ন দেখতে পায় না) বলে, তারা ৩/৪ বার ক্ষমতায় ছিল। তারা বিদ্যুৎ দিতে পারেনি। তারা মেট্রোরেল দিতে পারেনি, পদ্মা সেতু দিতে পারেনি। সুতরাং তারা উন্নয়ন চোখে দেখতে পাবে না। তারা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেল, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট চিন্তাও করতে পারে না। মাতারবাড়ি (গভীর সমুদ্র বন্দর, বিদ্যুৎ কেন্দ্র), রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র- এসব তাদের কল্পনায়ও আসে না। তারা শুধু চিন্তা করে নিজেদের উন্নয়ন, নিজেদের পেট ভরা আর বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা। সুতরাং তাদের চোখে কোনোদিনও উন্নয়ন দেখা যাবে না। উন্নয়ন দেখতে হলে সাধারণ মানুষের চোখ দিয়ে উন্নয়ন দেখতে হবে।’
২০০৮ সালে চার দলীয় জোটের অপকর্ম, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনগণ রায় দিয়েছিল উল্লেখ করে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘একসময় তারা বলেছিল, আওয়ামী লীগ ১০০ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। আজ তারা কান্দে। এখন ভাবে, ১০০ বছরেও বুঝি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে নামানো যাবে না। তারা বলেছিল, আওয়ামী লীগ ৩০টি আসনও পাবে না। ২০০৮ সালে বাঙালি জাতি তাদের দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ, অপকর্মের বিরুদ্ধে শিক্ষা দিয়ে তাদেরকে আসন দিয়েছিল মাত্র ২৯টা। ৩০টা আসনও তারা পায় নাই।’
বিজ্ঞাপন
বিএনপির নেতৃত্ব খালেদা জিয়াকে ‘মাইনাস’ করে ফেলেছে মন্তব্য করে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনে তারা এসেছিল। তখন আর নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের কথা বলে নাই। তখন আর বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা বলে নাই। এখনোও বলে না। বেগম খালেদা জিয়াকে তারা ভুলে গেছে। মাইনাসই করে ফেলছে। তাদের আর বেগম খালেদা জিয়ার দরকার নাই। তারা এখন নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের কথা বলে। কিন্তু একসময় তারাই নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকার মানে নাই। তারা একেক সময় একেক কথা বলে। তারা এখন বলে, আমরা না-কি পাঁচটি আসনও পাবো না। অথচ ২০১৮ সালের নির্বাচনে তারা সর্বসাকুল্যে আটটি আসন পেয়েছিল। ১০টি আসনও জুটে নাই। সুতরাং এসব কথা বলে বাঙালিকে আর বিভ্রান্ত করা যাবে না।’
মেয়র তাপস বলেন, ভরাডুবির আশঙ্কায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট নির্বাচনে আসতে চায় না। এবার তারা যদি নির্বাচনে না আসে, তার মানে হলো- তারা বুঝে গেছে যে, নির্বাচনে আসলে তারা শূন্যটা আসন পাবে। সেজন্য নির্বাচনে আসতে চায় না। যেটা তারা ২০১৪ সালে করেছিল। আগুনে পুড়িয়ে মানুষ মেরেছিল। সেজন্য ২০১৪ সালে লজ্জায় আর নির্বাচনে আসেনি। তারা জানত, নির্বাচনে আসলে ভরাডুবি হবে। ভরাডুবি হওয়া থেকে ইজ্জত বাঁচানোর জন্য নির্বাচনে না এসে তারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা চালিয়েছিল। ভেবেছিল নির্বাচনকে প্রতিরোধ করবে, প্রতিহত করবে। সে শক্তি তাদের নেই। সেটা তারা করতে পারেনি।
এ সময় দক্ষিণ বনশ্রীর ২ নম্বর ওয়ার্ডে গত তিন বছরে প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে গোড়ান খেলার মাঠ প্রতিষ্ঠা ছাড়াও এসটিএস নির্মাণ, রাস্তাঘাটসহ নানাবিধ উন্নয়ন করা হয়েছে বলেও জানান ডিএসসিসি মেয়র।
দক্ষিণ বনশ্রীর ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মকছুদ হোসেন, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর ফারজানা ইয়াসমিন বিপ্লবী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এতে অন্যদের মধ্যে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, ২ নম্বর অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সোয়ে মেন জো ছাড়াও কাউন্সিলরদের মধ্যে ১ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মাহবুবুল আলম, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সিরাজুল ইসলাম ভাট্টি, ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের মো. জিয়াউল হক ও ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আজিজুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ডিএইচডি/আইএইচ