শনিবার, ১১ মে, ২০২৪, ঢাকা

বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাসের বিচার করতে হবে দ্রুত

আদম তমিজী হক
প্রকাশিত: ০৭ নভেম্বর ২০২২, ০৯:৪২ পিএম

শেয়ার করুন:

বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাসের বিচার করতে হবে দ্রুত

একটি গণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাতে সারাদেশের বিভিন্ন জেলায় গণসমাবেশ করছে দলটি। আপাতত শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারও ভীষণ নমনীয়। বাধা দেওয়া হচ্ছে না বিএনপির তথাকথিত সমাবেশে। কিন্তু সাধারণের আতঙ্ক আসলে ১০ ডিসেম্বর নিয়ে।

মাসখানেক আগে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছেন ১০ ডিসেম্বর থেকে দেশ চলবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের কথায়। তিনি নেতাকর্মীদের সারাদেশ অচল করে দেওয়ার কথা বলেছেন। কি মারাত্মক হুমকি! এই হুমকি বাস্তবায়নে বিএনপি যে নৈতিক কোনো পথে হাঁটবে না, সেটা নিশ্চিত।


বিজ্ঞাপন


নৈতিকতা বিবর্জিত দলটি খুব বেশিদিন আগে নয়, ২০১৩-১৫ সালেই মেতেছিল আগুন-সন্ত্রাসে। সেই সময়ে দলটি আওয়ামী লীগ সরকারকে হঠাতে ট্রেন, বাস, লঞ্চ, প্রাইভেটকার এমনকি অ্যাম্বুলেন্সেও আগুন দিয়েছে। তাদের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার আগুনে পুড়ে জীবন দিয়েছে বহু মানুষ। আগুনে পুড়ে পঙ্গু হয়েছে আরও বহুগুণ।

>> আরও পড়ুন: বিএনপি লাশ পেলেই খুশি

বিএনপির রাজনীতিতে ইতিবাচক কোনোকিছু খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তারা রাজনীতি করে ক্ষমতার জন্য। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে গ্রেনেড ছুঁড়ে বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টাও বাধেনি তাদের। শেখ হাসিনা বেঁচে গেলেও ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট প্রাণ হারিয়েছিলেন মহিলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভানেত্রী বেগম আইভি রহমানসহ ২২ জন নেতাকর্মী। এছাড়া সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াকে ২০০৫ সালে হত্যা করা হয় গ্রেনেড হামলায়। এমন নৃশংস অনেক ঘটনা রয়েছে বিএনপির ইতিহাসে।

এছাড়াও দেশে জঙ্গিবাদের উত্থানে বিএনপির মদদের বিষয়টিও কারও অজানা নেই। সেই সঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের সঙ্গে অশুভ আঁতাত তো আছেই।


বিজ্ঞাপন


বিএনপির ইতিহাস জানি বলেই আমানউল্লাহ আমানসহ মির্জা ফখরুল আর রিজভী আহমেদদের সাম্প্রতিক হুমকি আমাদের আশঙ্কায় ফেলে দিচ্ছে। বিএনপি যাতে আন্দোলনের নামে ফের আগুন-সন্ত্রাস কিংবা লাশ ফেলার রাজনীতিতে মেতে উঠতে না পারে, সেই জন্য সরকারকে কঠোর হতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৮ অক্টোবর গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে বলেই, বিএনপি আজ আন্দোলন করতে পারছে। কিন্তু বিএনপির যারা খুনের সঙ্গে জড়িত, অগ্নিসন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত, তাদের ধরতে হবে। তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’

>> আরও পড়ুন: সমাবেশের বার্তা পরিষ্কার, ধর্মঘটের বার্তা কী?

আমরা বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ সরকার কোনো নেতিবাচক ঘটনা ঘটবার আগেই কঠোর হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে পূর্বের সব আগুন-সন্ত্রাসে জড়িতদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনার নির্দেশ দিতে হবে। এছাড়া, আন্দোলনের নামে হুমকি-ধামকিও অপরাধ। জনমনে যা আতঙ্ক ছড়ায়। নাগরিক জীবনকে স্বস্তিতে রাখতে হুমকি-ধামকির রাজনীতি করা বিএনপি নেতাদেরও আইনের আওতায় আনা দরকার।

বিএনপি যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পথে যাবে না এটা নিশ্চিত। কারণ তারা জানে, আন্দোলনের নামে পথে নামলে নিজেদের কিছু কর্মী আর ভাড়া করা সন্ত্রাসী ছাড়া কাউকে পাশে পাবে না। গত ১৩ বছরে পায়নি। তাই তারা আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসকেই বেছে নেবে শেষ পর্যন্ত।

> আরও পড়ুন: প্রশ্নটা আওয়ামী লীগ করুক

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬ নভেম্বর বিএনপির আগুন ও সন্ত্রাসের সেই দিনগুলি স্মরণ করে বলেছেন, সরকার হটাতে হত্যা কিংবা আগুন কেন? এই প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তিনি জানাতে চেয়েছেন যে, গণতান্ত্রিক পথেই সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে কাজ করতে হবে। নাশকতা করে কেউ চ্যালেঞ্জ জানাতে চাইলে বরদাশত করা হবে না।

বিএনপি আরও একবার দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা তাই করবে। এটা হতে দেওয়া যাবে না। নাশকতাকে হাতিয়ার হিসাবে তারা বেছে নিলে বেগম খালেদা জিয়াকেও পুনরায় জেলে যেতে হবে, এমন উচ্চারণেও থেকেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। জনগণের জন্য বিএনপি রাজনীতি না করতে পারলে, তাদের যে পেনাল্টি দিতে হবে, তাও স্বীকার করার দরকার। যে পেনাল্টি তাদের মূলধারার রাজনৈতিক শক্তি থেকে পৃথক করতে পারে, এমন চিন্তার উদ্রেকে তারা আসলেই কী ভাসে?

লেখক: রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মী।

বিইউ/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর