শনিবার, ৪ মে, ২০২৪, ঢাকা

গ্রাহক পর্যায়ে কত বাড়ল বিদ্যুতের দাম?

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারি ২০২৩, ০৮:১৪ পিএম

শেয়ার করুন:

গ্রাহক পর্যায়ে কত বাড়ল বিদ্যুতের দাম?

গ্রাহক পর্যায়ে ৫ শতাংশ হারে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সমন্বয়-২ অধিশাখা থেকে দাম বৃদ্ধির কথা জানিয়ে বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। চলতি জানুয়ারির ১ তারিখ থেকেই নতুন এই দর কার্যকর হবে।

নতুন দর অনুযায়ী, খুচরা পর্যায়ে আবাসিক গ্রাহকদের মধ্যে শূন্য থেকে ৫০ ইউনিট ব্যবহারকারী লাইফলাইন গ্রাহকদের ক্ষেত্রে বিদ্যুতের দাম ইউনিটপ্রতি ৩ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ৩ টাকা ৯৪ পয়সা। পাশাপাশি শূন্য থেকে ৭৫ ইউনিট ব্যবহারকারীর (প্রথম ধাপ) ক্ষেত্রে বিদ্যুতের দাম ৪ টাকা ১৯ পয়সা থেকে বেড়ে হবে ৪ টাকা ৪০ পয়সা।


বিজ্ঞাপন


Notificationএছাড়া ৭৬ থেকে ২০০ ইউনিট ব্যবহারকারীদের (দ্বিতীয় ধাপ) ক্ষেত্রে ৫ টাকা ৭২ পয়সা থেকে বেড়ে ৬ টাকা ১ পয়সা, ২০১ থেকে ৩০০ ইউনিট ব্যবহারকারীদের (তৃতীয় ধাপ) ৬ টাকা থেকে বেড়ে ৬ টাকা ৩০ পয়সা, ৩০১ থেকে ৪০০ ইউনিটের (চতুর্থ ধাপ) জন্য ৬ টাকা ৩৪ পয়সা থেকে বেড়ে ৬ টাকা ৬৬ পয়সা, ৪০১ থেকে ৬০০ ইউনিটের (পঞ্চম ধাপ) জন্য ৯ টাকা ৯৪ পয়সা থেকে বেড়ে ১০ টাকা ৪৫ পয়সা এবং ৬০০ ইউনিটের (ষষ্ঠ ধাপ) ওপরে বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী আবাসিক গ্রাহকদের বিল ১১ টাকা ৪৯ পয়সা থেকে বেড়ে ১২ টাকা ৩ পয়সা করা হয়েছে।

এ ক্ষেত্রে আগে মাসে ডিমান্ড চার্জ ৩০ টাকা ছিল, এখন সেখানে বেড়ে হয়েছে ৩৫ টাকা।

এদিকে, কৃষিকাজে ব্যবহৃত সেচ পাম্পের ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৪ টাকা ১৬ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪ টাকা ৩৭ পয়সা। এ ক্ষেত্রেও ডিমান্ড চার্জ ৩৫ টাকা করা হয়েছে, যা আগে ছিল ৩০ টাকা।

Notificationঅন্যদিকে, ক্ষুদ্র শিল্পের ক্ষেত্রে এখন ফ্ল্যাট রেট ৮ টাকা ৯৬ পয়সা, অফ পিকে ৮ টাকা ৬ পয়সা এবং পিকে ১০ টাকা ৭৫ পয়সা। আগে এই দর যথাক্রমে ৮ টাকা ৫৩ পয়সা, ৭ টাকা ৬৮ পয়সা এবং ১০ টাকা ২৪ পয়সা ছিল। আর ডিমান্ড চার্জ ৩০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪০ টাকা।


বিজ্ঞাপন


এছাড়া নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ১২ টাকার বদলে হয়েছে ১২ টাকা ৬০ পয়সা। পাশাপাশি শিক্ষা, ধর্মীয় ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান ছাড়াও হাসপাতালের ক্ষেত্রে ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৬ টাকা ২ পয়সা থেকে হয়েছে ৬ টাকা ৩২ পয়সা। আর রাস্তার বাতি ও পানির পাম্পের ক্ষেত্রে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুৎ খরচ ৭ টাকা ৭০ পয়সার বদলে ৮ টাকা করা হয়েছে।

অন্যদিকে বাণিজ্যিক ও অফিস শ্রেণিতে প্রতি ইউনিটের দাম ১০ টাকা ৩০ পয়সার বদলে ১০ টাকা ৮২ পয়সা, অফ পিকে ৯ টাকা ২৭ পয়সার বদলে ৯ টাকা ৭৩ পয়সা ও পিক সময়ে ১২ টাকা ৩৬ পয়সার বদলে ১২ টাকা ৯৮ পয়সা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মাসিক ডিমান্ড চার্জ ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৭৫ টাকা করা হয়েছে।

Notificationগত ৮ জানুয়ারি বিদ্যুতের দামবৃদ্ধির গণশুনানিতে বিদ্যুৎ বিতরণ প্রতিষ্ঠান বাবিউবো, বাপবিউবো, ডিপিডিসি, ডেসকো, ওজোপাডিকো ও নেসকোর আবেদনের প্রেক্ষিতে বিদ্যুতের দাম ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছিল বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কারিগরি কমিটি। এর প্রেক্ষিতে সংশোধিত বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) অধ্যাদেশের ক্ষমতাবলে সরকার প্রথমবারের মতো নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম বাড়াল।

যদিও সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি মাসে দাম সমন্বয়ের কথা জানানো হয়েছে। সরকার চাইলে জনসাধারণের কথা বিবেচনায় যে কোনো সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম সমন্বয় করতে পারবে। সম্প্রতি এমন বিধান যুক্ত করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০২৩ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদনও দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

>> আরও পড়ুন: ফেনীতে ভুতুড়ে বিলে অতিষ্ঠ গ্রাহক

গত ৯ জানুয়ারি নবনিযুক্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এই তথ্য জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম ৯০ দিন সময় নিয়ে নির্ধারণ করে বিইআরসি। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে সরকারও যেন তা নির্ধারণ করতে পারে এ জন্যই প্রস্তাবিত এই সংশোধনী মন্ত্রিসভা অনুমোদন করে। ইতোমধ্যেই এটি রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে অধ্যাদেশ আকারে জারিও করা হয়েছে। তবে ওই সময় জাতীয় সংসদের অধিবেশন চলমান না থাকায় আইনে কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে সংসদের অধিবেশন চালু রয়েছে। তাই নিয়ম অনুযায়ী সংসদে উত্থাপনের জন্য মন্ত্রিসভায় আইনটি অনুমোদন করে নেওয়া হয়েছে।

এদিকে, প্রতি মাসে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম সমন্বয়ের কথা জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদও। গত ৯ জানুয়ারি রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় প্রসঙ্গে জানিয়েছিলেন, এখন তো একটা সমন্বয় হয়ে গেছে। আমরা একটা ম‌্যাকানিজম (কৌশল) তৈরি করছি, যাতে প্রতি মাসে এটার সমন্বয় চলতে থাকে।

ওই সময় এই সমন্বয় শুধু তেলের ক্ষেত্রেই হবে না-কি বিদ্যুৎ ও গ‌্যাসের ক্ষেত্রেও হবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘সব, সবগুলোর।’

/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর