শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ঢাকা

ফেনীতে ভুতুড়ে বিলে অতিষ্ঠ গ্রাহক

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৩ মে ২০২২, ০৪:৪১ পিএম

শেয়ার করুন:

ফেনীতে ভুতুড়ে বিলে অতিষ্ঠ গ্রাহক
ছবি: সংগৃহীত

ফেনীতে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (পিডিবি) বিরুদ্ধে ব্যবহৃত ইউনিটের চেয়ে বেশি ইউনিট দেখিয়ে বিদ্যুৎ বিল করার অভিযোগ উঠেছে। মিটার না দেখে নিজ ঘরে বা অফিসে বসে বিদ্যুতের বিল করেছেন মিটার রিডাররা। এমন ভুতুড়ে বিলে অতিষ্ঠ গ্রাহক। এ নিয়ে পিডিবির অফিসে বারবার অভিযোগ করে প্রতিকার মিলছে না। এসব বিলের কারণে বাড়িওয়ালাদের সঙ্গে ভাড়াটেদের প্রায় ঝগড়া-বিবাদ হচ্ছে বলে জানা গেছে।

গ্রাহকদের অভিযোগ, বিদ্যুতের ইউনিট ব্যবহার না করেও তাঁদের ওপর চাপানো হচ্ছে ভুতুড়ে বিলের বোঝা। কয়েক মাস পর পর অতিরিক্ত বিল করে তাঁদের কাছ থেকে বেশি ইউনিটের বিল কাটা হচ্ছে। বেশ কয়েকজন গ্রাহক শিগগিরই পিডিবির মিটার রিডার, নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপ-সহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান।


বিজ্ঞাপন


ফেনী শহরের সার্কিট হাউস রোডের বাসিন্দা জসিম উদ্দিন বলেন, তাঁর বাবা প্রয়াত মো. আবুল হাশেমের নামে আমার বাসার মিটার। ৫ মে করা বিলে বিল দেওয়া হয়েছে ৬০০ ইউনিটের। এর আগের মাসে বিল দেওয়া হয় ২০০ ইউনিটে; যার টাকার পরিমাণ ১ হাজার ১১২ টাকা। গত মাসে যে বিল দেওয়া হয়েছিল তখন বর্তমান রিডিং দেখানো হয়েছিল ৩৫ হাজার ৯০০ ইউনিট। তখন মিটারে ইউনিট কম থাকায় বিল দেননি। কিন্তু রোববার বাসায় পিডিবি যে বিদ্যুৎ বিল পাঠায়, তাতে বিল দেখানো হলো হলো ৫ হাজার ৬৬০ টাকা। বর্তমান ইউনিট দেখানো হলো ৩৬ হাজার ৫০০। বাস্তবে গতকাল মিটার রিডিং ছিল ৩৬ হাজার ২২৬। এদিকে ১৫ দিন আগে যে বিল করা হয়েছে, তাতে দেখানো হলো প্রায় ৩০০ ইউনিট বেশি।

জসিম উদ্দিন বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে আমার বিল দেওয়া হয়েছিল ৯ হাজার ৮৭৫ টাকার। তখন আমার মিটারের চেয়ে ৭০০ ইউনিট বেশি বিল করায় আমি পিডিবিতে অভিযোগ করলে তাঁরা জানান, দুঃখিত এখন আর কিছু করার নেই। সামনের মাস থেকে সমন্বয় করে দেওয়া হবে। বিল কুমিল্লায় করায় আমাদের কোনো হাত নেই। পরবর্তী মাসে ২০ ইউনিট ও তার পরের মাসে ২০০ ইউনিট করা হয় বলে তিনি জানান। চলতি মাসে আবার ৬০০ ইউনিটের বিল করায় বিল কীভাবে পরিশোধ করবেন জানতে চাইলে তিনি জানান, পিডিবিকে মৌখিকভাবে জানিয়ে এসেছি, ব্যবস্থা না নিলে মামলায় যাব পিডিবির বিরুদ্ধে।

আতিকুর রহমান, শহীদ উল্যাহ, ফরিদ হোসেনসহ বিভিন্ন গ্রাহক বলেন, পিডিবি খামখেয়ালিভাবে ভুতুড়ে বিল করে আসছে। পিডিবির কর্মকর্তাদের অভিযোগ দিয়েও কোনো লাভ হয় না। কখনো বিল করেন কম, কখনো অতিরিক্ত বেশি, আবার কখনো করে থাকেন যে বিল মিটারেই নেই, তার চেয়েও অনেক বেশি।

আনোয়ার নামের একজন বলেন, আমাদের বাসায় সর্বোচ্চ ব্যবহার হয় ২০০ থেকে ২৫০ ইউনিট। দুই-তিন মাস বিল করে ১৫০ ইউনিট করে। পরের এক মাসে করে বসে ৬০০ ইউনিটের ওপরে। আরেক ব্যক্তি জানান, তাঁর বিল ৬০০ থেকে ৯০০ ইউনিটে করা হয় মাঝেমধ্যে। ফলে বিল প্রতি ইউনিট ৬ টাকার নিচে হওয়ার কথা থাকলেও তখন বিল হয় ব্যবসায়িক ইউনিটে; মানে প্রতি ইউনিট ১০ টাকার আশপাশে। এতে হাজার হাজার টাকা বিনা কারণে লোকসান বা জরিমানা দিতে হয়।


বিজ্ঞাপন


এ ব্যাপারে পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম বলেন, আবুল হাশেমের নামে যে মিটারটা আছে, সেটার ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি। আমি একজন অফিসার পাঠাব তদন্ত করতে। কয়েক মাস পরপর অতিরিক্ত বিল করার কারণে গ্রাহককে হাজার হাজার টাকা বাড়তি দিতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি গুরুত্বপূর্ণ কাজে আছেন বলে এড়িয়ে যান ও কোনো উত্তর দেননি।

এজে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর