সাতসকালে কর্মস্থলে যাওয়া নতুন কিছু নয় বেসরকারি চাকরিজীবী রেজার জন্য। সকালে অফিস থাকায় প্রতিদিন সাতটার আগেই মধ্যবাড্ডা লিংক রোড থেকে বাসে চেপে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি। নতুনবাজার পৌঁছাতে বাসে তার সর্বোচ্চ ১৫ মিনিট সময় লাগত। কিন্তু বুধবার একই সময় বাসে চড়লেও কর্মস্থলে যেতে তার পাক্কা ৩৫ মিনিট সময়ে লেগেছে।
শুধু রেজাই নন রাজধানীর শ্যামপুর থেকে নিজের মোটরসাইকেলে করে প্রতিনিয়ত বারিধারায় কর্মস্থলে যান শেখ লিমন। রাস্তায় যতই গাড়ির চাপ থাকুক তিনি ৪০ থেকে ৫০ মিনিটে পৌঁছে যেতেন বারিধারায়। জ্যাম বেশি থাকলে কখনো সোয়া ঘণ্টাও লাগত। কিন্তু বুধবার ঠিক দুই ঘণ্টা ২০ মিনিটের মতো সময় লেগেছে কর্মস্থলে পৌঁছাতে।
বিজ্ঞাপন
নতুন সময়সূচিতে আজ থেকে অফিস শুরু হওয়ায় সাতসকালেই ঢাকার সড়কগুলোতে তীব্র যানজট লেগে যায়। যারা একটু আগে বেরিয়েছেন তারা কিছু ভোগান্তি ছাড়া অফিসে পৌঁছতে পারলেও বহু চাকরিজীবীকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। অন্যান্য দিনের তুলনায় গণপরিবহন কম থাকায় দুর্ভোগের মাত্রা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সবকিছু মিলিয়ে বুধবার সড়কে নতুন এক সকাল দেখেছে ঢাকাবাসী। সরকারের নির্ধারণ করা নতুন অফিসসূচি চালুর প্রথম দিনেই ভিন্ন চেহারায় দেখা গেছে ঢাকার সড়কগুলো।
কাজের প্রয়োজনে যারা বের হয়েছেন তারা জানান, নিত্যদিনের চেয়ে সকাল সকালই যানজট দেখা দিয়েছে ঢাকার রাস্তায়। এতে অনেকে সময়মতো অফিসে পৌঁছাতে কিছুটা বিলম্বও হয়েছে।
অফিসের নতুন সূচির প্রথমদিন সকালে রাজধানীতে গণপরিবহনের সংখ্যা কম দেখা গেছে। বাসে যাত্রীচাপ বেশি থাকায় অনেককে দাঁড়িয়ে গন্তব্যে যেতে হয়েছে। অনেককে বাসের জন্য দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতেও হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
নতুন সময়ে অফিস ধরতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যক্তিগত গাড়ি, স্টাফ বাস ও মোটরসাইকেলে ছুটেছেন কর্মস্থলে। অন্যদিকে বেসরকারি চাকরিজীবী গণপরিবহনে চেপে, ঠাসাঠাসি করে অফিসে গেছেন।
সরেজমিনে মালিবাগ আবুল হোটেল থেকে নর্দা পর্যন্ত রাস্তার দুইপাশেই গাড়ির অনেক চাপ দেখা গেছে। বিশেষ করে বাড্ডা লিংক রোড ও নর্দা এলাকায় বেশি যানজট দেখা গেছে।
আরেফিন শাকিল নামে একজন নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে ঢাকা মেইলকে বলেন, রামপুরা-বিমানবন্দর সড়কে অন্যদের তুলনায় গাড়ির চাপ কম ছিল সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত। কিন্তু গণপরিবহন সংকটে আমার মতো অফিসমুখী মানুষদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ২০-৩০ মিনিট। যে কয়টা বাস চলাচল করেছে, সবগুলোতে যাত্রীতে ছিলো টইটুম্বর। আসনে বসা যাত্রীর দ্বিগুণ ছিল দাঁড়িয়ে কিংবা দরজায় ঝুলে।
আরও পড়ুন: বুধবার থেকে সরকারি অফিস ৮-৩টা, ব্যাংক ৯-৪টা
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আফতাব মাহমুদ চৌধুরী ঢাকা মেইলকে বলেন, অনেকে ভেবেছিল সকাল সকাল যানজট হয়তো কম হবে। কিন্তু জ্যাম তো কমলই না বেড়েছে। মানুষের দুর্ভোগও বেড়েছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা সরকারি অফিসের সময় এক ঘণ্টা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ব্যাংকের লেনদেনের সময়ও এগিয়ে আনা হয়েছে। এছাড়া সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে দুই দিন। গত সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়।
নতুন সময়সূচি অনুযায়ী সরকারি অফিস ৮টা থেকে ৩টা পর্যন্ত আর ব্যাংক ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে৷ তবে ব্যাংকে লেনদেন চলবে ৩টা পর্যন্ত।
বিইউ/এমআর