সোমবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

মা-মেয়েকে হত্যার পর স্কুল ড্রেস পরে পালান গৃহকর্মী

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:০৭ পিএম

শেয়ার করুন:

Ma
মোহাম্মদপুরে হত্যার শিকার মা ও মেয়ে।

‎রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বাসায় মা-মেয়েকে গলাকেটে হত্যার পর মেয়ের স্কুলের ড্রেস পরে বাসা থেকে বের হয়ে যান ওই বাসার গৃহকর্মী। চার দিন আগে তিনি বাসাটিতে কাজ শুরু করেন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ির দারোয়ানকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

‎সোমবার (৮ নভেম্বর) সকালে মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের একটি বাসা থেকে মা ও মেয়ের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

‎পুলিশ বলছে, চার দিন আগে নিহতদের বাসায় কাজ শুরু করেন পালিয়ে যাওয়া গৃহকর্মী। সে সময় তিনি নিজের নাম আয়েশা বলে পরিচয় দেন। তার বিস্তারিত পরিচয় খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

‎ভবনের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিহত মালাইলা আফরোজ গৃহিণী। মেয়ে নাফিসা বিনতে আজিজ মোহাম্মদপুরের প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। নাফিসার বাবা এম জেড আজিজুল ইসলাম পেশায় শিক্ষক। তিনি উত্তরার সানবিমস স্কুলে ফিজিক্স পড়ান।‎

ভবনের একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নাফিসার বাবা স্কুলের উদ্দেশে সকাল ৭টার দিকে বের হয়ে যান। সকাল ৯টা ৩৬ মিনিটে কাধে স্কুল ব্যাগ ও স্কুল ড্রেস পরে বের হয়ে যান গৃহকর্মী আয়েশা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নাফিসার বাবা বাসায় ফিরে স্ত্রী ও মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান।

‎তিনি বলেন, আমাদের বাসায় একজন কাজের মহিলা দরকার ছিল। সাধারণত গেটে অনেকেই কাজের সন্ধানে আসে। চার দিন আগে একটি মেয়ে আসে। বোরকা পরিহিত মেয়েটি আমাদের বাসার দারোয়ান খালেকের কাছে কাজের সন্ধান করলে সে আমাদের বাসায় পাঠিয়ে দেয়। 

আজিজুল ইসলাম জানান, এরপর আমার স্ত্রী মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে কাজে রেখে দেয়। পরে আমি স্ত্রীর মুখে শুনেছি, মেয়েটার নাম আয়েশা। বয়স আনুমানিক ২০ বছর। তার গ্রামের বাড়ি রংপুর। জেনেভা ক্যাম্পে চাচা-চাচির সঙ্গে থাকে। বাবা-মা আগুনে পুড়ে মারা গেছে। তার শরীরেও আগুনে পোড়ার ক্ষত রয়েছে।

‎তিনি আরও বলেন, মেয়েটা কাজ শুরুর পর প্রথম দুদিন সময় মতো এসেছে। গতকাল সে সাড়ে ৯টার দিকে আসে। আজ কী হয়েছে এটা তো আর বলার অবস্থায় নেই।

‎পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার ইবনে মিজান বলেছেন, পুলিশ সাড়ে ১১ টার দিকে খবর পেয়ে একটি লাশ পায়। মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, নেওয়ার পর সেও মারা গেছে। পরে লাশ দুটি সুরতহালের পর ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠানো হয়। আমরা প্রাথমিকভাবে কিছু তথ্য পেয়েছি, সেসব যাচাই বাছাই চলছে।

‎এদিকে ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখা যায়, সেটির প্রবেশ মুখ থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে রক্তের দাগ। বাসার আলমারিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করে তছনছ করে রাখা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ দুটি ধারালো চাকু উদ্ধার করেছে। হত্যাকারী হাত-মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়।

‎একেএস/এএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর