কড়াইল বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের পর বিশুদ্ধ খাবার পানি ও শৌচাগারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে বাসিন্দাদের পাশাপাশি আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের শিশুরাও বেশি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। বাসিন্দারা বলছেন, অগ্নিকাণ্ডের পর গতকাল সকাল থেকে খাবার আসলেও বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ তেমনভাবে পাওয়া যাচ্ছে না। বিশুদ্ধ পানির পাশাপাশি শৌচাগারের সংকটে পড়ছেন বাসিন্দারা।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া বস্তি ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
বিজ্ঞাপন
দুপুর সাড়ে ১২টার পর কয়েকটি সেবাদাতা এনজিও প্রতিষ্ঠান ছোট ছোট বোতলজাত পানি নিয়ে আসলেও সবার চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছিল না। মুহূর্তেই বোতলজাত পানি শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে জানান এনজিও কর্মীরা। পানির চাহিদা মেটাতে বোতলজাত পানির পাশাপাশি ওয়াসার বড় ট্যাংকারে করে পানি আনা হলেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। এদিকে বিশুদ্ধ পানি না পাওয়ার পাশাপাশি শৌচাগারের সমস্যা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
দুস্থ ফাউন্ডেশনের একজন কর্মী জানান, “আজ আমরা প্রথমে দুটি বড় ট্যাংকারে করে পানি নিয়ে আসি। পরে দেখি পানিতে ময়লা রয়েছে। এরপর পানি পাল্টে ওয়াসা থেকে আবারও বিশুদ্ধ পানি আনা হয়েছে। কিন্তু পানি আনার পর নতুন সংকট দেখা দিয়েছে।”
স্থানীয় বাসিন্দা নাজমা বেগম বলেন, “অগ্নিকাণ্ডের পর খাবার নিয়ে আসলেও বিশুদ্ধ পানি তেমন কেউ দিচ্ছে না। আমাদের পর্যাপ্ত খাবার থাকলেও তার বিপরীতে পানি নেই। আমরা বিশুদ্ধ খাবার পানি চাই—বিশেষ করে শিশুদের জন্য। পাশাপাশি টয়লেটের সমস্যায় ভুগছি। স্বেচ্ছাসেবীরা ছোট বোতলে পানি আনলেও সবাই পাচ্ছে না। আমরা চাই দ্রুত বিশুদ্ধ খাবার পানি পৌঁছে দেওয়া হোক।”
আরেক বাসিন্দা তহুরা বেগম বলেন, “গতকাল বিকেল থেকে আমাদের জন্য খিচুড়ি, তেহারি ও মুড়ি এসেছে। কিন্তু এসব খাবারের সঙ্গে বিশুদ্ধ পানি প্রয়োজন। আমরা অনেকে গতকাল রাত থেকে পানি না খেয়ে আছি। পাশাপাশি টয়লেট সংকট ভয়াবহ। অগ্নিকাণ্ডে সব টয়লেট পুড়ে গেছে। কোথাও যেতে পারছি না।”
বিজ্ঞাপন
নাজমা বেগম, তহুরা বেগমসহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকশ’ বাসিন্দা একই ধরনের সংকটের কথা জানিয়েছেন। তাদের দাবি—সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যেন দ্রুত বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ করে এবং জরুরি ভিত্তিতে শৌচাগারের ব্যবস্থা করে।
এদিকে সকাল থেকে বিভিন্ন বেসরকারি এনজিও সংস্থা ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা, খাবার ও পানি সরবরাহ শুরু করলেও তাতেও সংকট কমছে না।
একেএস/এআর

