সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫, ঢাকা

নিয়োগের ক্ষেত্রে এনআইডি বাধ্যতামূলক করতে যেসব যুক্তি দিলো ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২ জুন ২০২৫, ১০:০১ পিএম

শেয়ার করুন:

নিয়োগের ক্ষেত্রে এনআইডি বাধ্যতামূলক করতে যেসব যুক্তি দিলো ইসি

সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বাধ্যতামূলক করতে একগুচ্ছ যুক্তি তুলে ধরেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

সোমবার (২ জুন) নির্বাচন ভবনের আয়োজিত ২৭ সংস্থা-মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে যুক্তিগুলো উপস্থাপন করে সংস্থাটি।


বিজ্ঞাপন


এনআইডি অনুবিভাগের কর্মকর্তারা জানান, সম্প্রতি সময়ে আমরা দেখছি বয়স লুকিয়ে জন্মসনদ দিয়ে অনেকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরিতে যোগদান করছে। এর ফলে এনআইডি সঙ্গে বয়সের মিল না থাকায় বেতন-ভাতাসহ নানা সমস্যার সম্মুখীন হয় নাগরিকরা। যার ফলে এনআইডি সংশোধনে আসেন তারা। আর এ আবেদনগুলোর বেশির ভাগই হয় জটিল প্রকৃতির। এসব সমস্যার সমাধান করতেই সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে এনআইডি আমলে নেওয়ার কথা বলেছি আমরা। এতে করে পরবর্তীতে কোনো জটিলতা থাকে না। এছাড়া বেতন ফিক্সেশনের জন্য এনআইডি আমলে নেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের। কাজেই শুরুতেই কাজটি সম্পন্ন হলে দুর্নীতির সুযোগ কমে যায়।

যুক্তিগুলো হলো—

১. চাকরি প্রাপ্তির পর বেতন নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্রে লিপিবদ্ধ তথ্য (বিশেষ করে জন্ম তারিখ ও নিজ নাম) এর সাথে নিয়োগপত্র/সার্ভিস বহিতে লিপিবদ্ধ তথ্যের তারতম্য হওয়ার কারণে পে ফিক্সেশন (Pay Fixation) সম্ভব হয় না;

২. পরবর্তীতে ভুক্তভোগীরা জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের দ্বারস্থ হলে বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়;


বিজ্ঞাপন


৩. সরকারি চাকরির বয়সসীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পরও ভিন্ন ভিন্ন ডকুমেন্টে বয়স কম দেখিয়ে চাকরিতে আবেদনের সুযোগ পেলেও পরবর্তীতে পে ফিক্সেশন (Pay Fixation) না হওয়ায় ঐ সকল ব্যক্তি আর্থিক ক্ষতিসহ মারাত্মক ভোগান্তি ও হয়রানির সম্মুখীন হয়;

৪. ভোটার তথা পরিচয় নিবন্ধনকালে একটি জন্ম সনদ ব্যবহার করে। পরবর্তীতে ভিন্ন আরেকটি জন্মসনদ ব্যবহার করে চাকরি লাভ করে। ORG (Office of the Registrar General) এর ওয়েবসাইটে জন্ম নিবন্ধন নম্বর দুটিই সক্রিয়;

৫. কতিপয় ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চাকরিজীবী কর্তৃক চাহিত জন্ম তারিখ সংশোধন করা হলে তার বয়স ভোটার নিবন্ধনকালে ভোটার হওয়ার ন্যুনতম বয়সের নীচে চলে আসে, সেক্ষেত্রে উক্ত ভোটারের ভোটার হওয়ায় অযোগ্যতার প্রশ্ন সামনে চলে আসে যা এক ধরণের আইনি জটিলতা সৃষ্টি করে;

৬. চাকরি প্রাপ্তির পর চাহিত জন্ম তারিখ অনুসারে এনআইডি কার্ড সংশোধন করা হলে আবেদনকারীর পিতা/মাতার বয়সের সাথে তার নিজের বয়সের অসামঞ্জস্যতা পরিলক্ষিত হয়। অনেক ক্ষেত্রে সহোদর ভাই-বোনের বয়সের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা বজায় থাকে না;

৭. ১৬ থেকে ২০তম গ্রেডভুক্ত (৪র্থ শ্রেণী) চাকরির ক্ষেত্রে ব্যক্তির প্রকৃত শিক্ষাগত যোগ্যতা ও জন্ম তারিখ গোপন করে চাকরিতে যোগদানের ফলে যোগ্য ব্যক্তি চাকরি হতে বঞ্চিত হয়;

৮. সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি কর্তৃক নিয়োগ বাতিল চেয়ে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বরাবর এবং এনআইডি কার্ডের তথ্য গোপন করার জন্য নির্বাচন কমিশন বরাবর অভিযোগ ও মামলা দায়ের করাসহ নানা রকম জটিলতার উদ্ভব হচ্ছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসনসহ ২৭ মন্ত্রণালয়, বিভাগের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ইসি সচিব আখতার আহমেদ। সভায় আলোচনার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে আরও বৈঠকের প্রয়োজন বলে সিদ্ধান্ত হয়।

এমএইচএইচ/এমএইচটি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর