ফিলিস্তিনে নির্বিচারে গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এর প্রতিবাদে সকল ধরনের পণ্য বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে টিএসসিতে সমবেত হওয়া বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। সেইসঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের মাধ্যমে দেশটির শাসক ও যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও করা হয়।
সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুরের পর থেকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে গাজায় হামলার প্রতিবাদ জানাতে সমবেত হয় হাজার হাজার নারী, পুরুষ ও শিশুরা। চলে রাত অবধি।
বিজ্ঞাপন
এসময় তারা স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে টিএসসি এলাকা৷ এসময় সবাই মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধভাবে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বানও জানান। আজ রাত সাড়ে ৮টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রাজু ভাস্কর্যের সামনে আন্দোলনকারীদের দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, কারো হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা, কারো হাতে ফিলিস্তিনের গণহত্যা বন্ধের প্ল্যাকার্ড, কেউবা গায়ে ফিলিস্তিনের পতাকা জড়িয়ে এসেছেন। সবার একটাই চাওয়া গাজায় গণহত্যা বন্ধ করা। তা না করলে বিশ্বব্যাপী ইসরায়েলকে বয়কট করার ঘোষণার দাবিও জানান তারা।
আন্দোলনে নিজের ছোট বাচ্চাকে নিয়ে এসেছেন জসিম হোসেন। তিনি বলেন, আমার ছেলেকে নিয়ে এসেছি ফিলিস্তিনের পক্ষে সমর্থন জানাতে। ছোট ছেলেকে বুঝাতে চাই অন্যায় হলে সেটির প্রতিবাদ করতে হবে।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মামুন হোসেন বলেন, ফিলিস্তিনে ইসারায়েলি বাহিনী যে হামলা চালাচ্ছে এর চেয়ে জঘন্য কিছু হয় না। সেখানে পৃথিবীর নিকৃষ্টতম গণহত্যা চলছে। কিন্তু জাতিসংঘ নীরব। আমরা তাদের ধিক্কার জানাই। গাজায় আর একজন মুসলমান মারা গেলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনের ডাক দিব।
বিজ্ঞাপন
নিজের ছেলে ও বোনের মেয়েকে নিয়ে এসেছেন রোজি নামের একজন গৃহিণী। তিনি বলেন, বাচ্চাদের নিয়ে এসেছি ফিলিস্তিনের পক্ষের আন্দোলনে। তাদের মানবিক মূল্যবোধ শেখাতে টিএসসিতে নিয়ে এসেছি। আমরা গাজার শিশুদের জন্য সরাসরি কিছু করতে পারছি না তাই দূর থেকেই প্রতিবাদ করছি।
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বলেন, বোমার আঘাতে ছোট শিশুদের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যাচ্ছে এর চেয়ে কঠিন কোনো দৃশ্য হতে পারে না। আমরা আর একটাও মৃত্যু দেখতে চাই না। এই গণহত্যা বন্ধ চাই এবং ইসরায়েলের বিচার চাই।
টিএসসিতে আগত আন্দোলনকারীরা জানান, ইসরায়েলকে উচিত শিক্ষা দিতে তাদের পণ্য বয়কট ছাড়া উপায় নেই। তাদের অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দিতে হবে। শুধু তাই নয়, জাতিসংঘের মাধ্যমে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আদালতে দেশটির শাসক, সামরিক সদস্যদের বিচারের দাবিও তোলেন কেউ কেউ।
তারা আরও জানান, সারা মুসলিম বিশ্ব যখন জেগে উঠেছে তখন আরব বিশ্বের দেশগুলো এখনও নীরব। শুধু তাই নয় মুসলিমদের স্বার্থ রক্ষায় ওআইসি এবং জাতিসংঘ এখনও কোনো কথা বলছে না। এমন আচরণ রহস্যজনক। দ্রুত সারা বিশ্বকে একজোট হয়ে ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ বা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই।
আইএমকে/এএসএল/এফএ