উৎসবমুখর পরিবেশে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঈদ উদযাপনে দেশব্যাপী নানা উদ্যোগ নিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব)। সব ধরনের ঝুঁকি পর্যালোচনা করে এবারের ঈদে অন্যান্য বছরের মতো র্যাব বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে এলিট ফোর্সটি।
রোববার দুপুরে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঈদকে কেন্দ্র করে গোয়েন্দা তথ্য, সাইবার মনিটরিংসহ অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণপূর্বক কোনো নাশকতার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
বিজ্ঞাপন
র্যাব আরও জানায়, ঈদুল ফিতরের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাব দেশব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। নিরাপত্তা জোরদার করতে ব্যাটালিয়নসমূহ নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
দেশব্যাপী ঈদুল ফিতর উদযাপন উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য রয়েছে র্যাবের কন্ট্রোল রুম, স্ট্রাইকিং রিজার্ভ, ফুট ও মোবাইল পেট্রল, ভেহিক্যাল স্ক্যানার, অবজারভেশন পোস্ট, চেক পোস্ট এবং সিসিটিভি মনিটরিং।
ঘরমুখী মানুষের নিরাপদে বাড়ি ফেরা নিশ্চিত করতে সড়ক, রেল এবং নৌ-পথে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে র্যাব ফোর্সেস ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেছে। ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধ ও কালোবাজারিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসায় সাধারণ মানুষ সহজেই ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে পেরেছেন এবং নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দে ঈদে বাড়িতে গেছেন।
ঈদ উপলক্ষে দেশব্যাপী ঘরমুখী মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়ার পাশাপাশি র্যাবের সেবা সাধারণ জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সকল ব্যাটালিয়নসমূহের দায়িত্বপূর্ণ এলাকার বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল, ফেরিঘাট এবং গুরুত্বপূর্ণ জনসমাগম স্থানসমূহে রয়েছে র্যাব ফোর্সেসের বিশেষ নজরদারি রয়েছে। সড়ক, রেল এবং নৌ-পথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও হয়রানি, অজ্ঞান/মলম পার্টি, চাঁদাবাজি এবং ছিনতাই রোধকল্পে নজরদারি ও প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিজ্ঞাপন
অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই বাস, পিকআপ, লেগুনা ইত্যাদি যানসমূহের চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট আছে কিনা তা যাচাই করা এবং মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন টার্মিনাল ও আশপাশের স্থানসমূহে টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সড়ক ও নৌপথে বাস/লঞ্চ চালকেরা যেন প্রতিযোগিতামূলকভাবে বাস/লঞ্চ না চালায় সেজন্য বাস ও লঞ্চ মালিক ও চালকদের সতর্কীকরণ ও সচেতন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঈদগাহে (জাতীয় ঈদগাহ, শোলাকিয়া ঈদগাহ ও দিনাজপুর বড় ঈদগাহ) নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জাতীয় ঈদগাহসহ গুরুত্বপূর্ণ ঈদগাহসমূহে নিরাপত্তা সুইপিং করা হবে এবং প্রয়োজনীয় সিসিটিভি কাভারেজ থাকবে।
গুরুত্বপূর্ণ শপিং মল, বিপনিবিতান ও জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় স্ট্যাটিক টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধির মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে; যাতে জনগণ উৎসবমুখর পরিবেশে এবং নিরাপদে কেনাকাটা শেষ করে বাড়ি ফিরতে পারে।
রাজধানীসহ সারাদেশে ঈদের ছুটিতে যাওয়া মানুষের বাসস্থান, কর্মস্থল, শপিংমলসহ অন্যান্য স্থানে চুরি ও ডাকাতি প্রতিরোধে র্যাবের নজরদারি ও টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।
যেকোনো নাশকতা অথবা হামলা মোকাবিলায় র্যাবের স্পেশাল কমান্ডো টিমকে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও পর্যাপ্ত সংখ্যক টহল মোতায়েন ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করার মাধ্যমে নাশকতাসহ যেকোনো উদ্ভুত পরিস্থিতি কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।
গোয়েন্দা তথ্য, সাইবার মনিটরিংসহ অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ পূর্বক পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের নাশকতার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। গোয়েন্দা নজরদারি ও সাইবার জগতে মনিটরিং বৃদ্ধির মাধ্যমে যেকোনো ধরণের নাশকতাকারীদের পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিতে প্রস্তুত রয়েছে র্যাব।
ভার্চুয়াল জগতে ঈদকে কেন্দ্র করে যেকোনো গুজব অথবা উস্কানিমূলক তথ্য/মিথ্যা তথ্য ছড়ানো প্রতিরোধেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে র্যাব সাইবার মনিটরিং টিম অনলাইনে সার্বক্ষণিক নজরদারি অব্যাহত রাখছে।
ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানস্থল ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে আগত মহিলাদের উত্যক্ত/ইভটিজিং/যৌন হয়রানি রোধকল্পে মোবাইলকোর্টসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ কোন ধরণের হেনস্থার শিকার হলে অবশ্যই কর্তব্যরত র্যাবকে জানাবেন। র্যাব কঠোর হস্তে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
এমআইকে/এমআর