দেশে বরিশাল বিভাগের নারীরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হন বলে এক জরিপে উঠে এসেছে। প্রতিবেদন বলছে, এই বিভাগরে ৮১.৫ শতাংশ নারী নির্যাতনের শিকার হন।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) নারীদের ওপর সহিংসতা শীর্ষক জরিপ ২০২৪ এর প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরে।
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানে চার ধরনের সহিংসতার তথ্য তুলে ধরা হয়। এগুলো হচ্ছে- শারীরিক সহিসংতা, যৌন, অনৈতিক এবং মনস্তাত্ত্বিক সহিসংতা।
বিবিএস জানায়, দেশে জীবনে এক বার হলেও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৭৫.৯ শতাংশ নারী। গ্রামে এর হার ৭৬ শতাংশ এবং শহরে ৭৫.৬ শতাংশ। তবে বিভাগওয়ারী বরিশালে নারী নির্যাতনের হার বেশি ৮১.৫ শতাংশ। অন্যদিকে সব থেকে কম সিলেটে ৭২.১ শতাংশ। বরিশালের পরেই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নারী নির্যাতনের হার বেশি খুলনায় ৮১.৫ শতাংশ। এছাড়া ঢাকায় ৭২.৯ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৭৮.৫ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৭৫.১ শতাংশ, রাজশাহীতে ৭৪.৫ শতাংশ ও রংপুরে ৭৪.১ শতাংশ নারী জীবনে একবার হলেও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
এই খানাজরিপে শহর, গ্রাম, দুর্যোগপ্রবণ ও বস্তি এলাকায় ২৭ হাজার ৪৭৬ জন নারীর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সহিংসতার শিকার নারীদের মধ্যে মাত্র ৭.৪ শতাংশ নারী আইনের আশ্রয় নেন। বাকি ৯৩.৬ শতাংশ নারী এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেন না। এছাড়া সহিংসতার শিকার ৬৪ শতাংশ নারী তাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া সহিংসতার কথা কারও সঙ্গে শেয়ার করেন না।
বিজ্ঞাপন
জরিপের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সহিংসতার ঝুঁকির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য তারতম্য, যেমন- দুর্যোগ-প্রবণ এলাকার নারীরা তাদের জীবদ্দশায় এবং বিগত ১২ মাসের মধ্যে, অ-দুর্যোগ-প্রবণ এলাকার নারীদের তুলনায় জীবনসঙ্গী বা স্বামীর দ্বারা বেশি মাত্রায় সহিংসতার সম্মুখীন হন। জীবনসঙ্গী বা স্বামী কর্তৃক সহিংসতার মাত্রা বেশি হলেও সহিংসতার শিকার নারীদের প্রায় ৬৪ শতাংশ তাদের সাথে ঘটে যাওয়া সহিংসতার কথা কাউকে কখনো বলেননি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পরিবারের সুনাম রক্ষা করার আকাঙ্ক্ষা, সন্তানদের ভবিষ্যত সম্পর্কে উদ্বেগ এবং এধরনের সহিংসতা স্বাভাবিক বলে মনে করার প্রবণতাসহ বিভিন্ন কারণ থেকে মূলত এই নীরবতা।
এমএইচ/ইএ