বিএনপি চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানালেও নির্বাচন কমিশন (ইসি) বলছে— তারা প্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী কাজ করছে এবং সময়ের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।
মঙ্গলবার স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নেই, এটি গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মতে, এই বছরের জুলাই-অগাস্টের মধ্যে নির্বাচন সম্ভব।” বিএনপি সরকারের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকেও আহ্বান জানিয়েছে, দেশের বৃহত্তর স্বার্থে তাড়াতাড়ি নির্বাচন আয়োজনের জন্য।
বিজ্ঞাপন
এদিকে, নির্বাচন কমিশন তার প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করতে চাইছে এবং কমিশনার তাহমিদা আহমদ বলেন, “আমরা কারো ইচ্ছা পূরণের জন্য কাজ করছি না। সবার লক্ষ্য একটি ভালো নির্বাচন, এবং সেটির জন্য সময় প্রয়োজন। আগামী ২০ জানুয়ারি ভোটার তালিকা সংশোধন শুরু হবে, যা এক মাস চলবে। তারপর কিছু আইনগত পরিবর্তন প্রয়োজন, এ কারণে নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য আমাদের সময় দরকার।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) না, আমাদের প্রস্তুতির জন্য বাস্তবসম্মত সময় দরকার।” কমিশনের এবারের প্রস্তুতির লক্ষ্য জাতীয় নির্বাচন, এবং তারা সে অনুযায়ী কাজ করছে।
এদিকে, গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, "নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ হবে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে। একটি থেকে দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে, তবে সে জন্য আরও সংস্কার প্রয়োজন।"
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ইমরান সালেহ প্রিন্স অভিযোগ করেছেন যে, নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে গেছে, যা দেশের পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। তিনি বলেন, “আমরা সরকারকে পর্যাপ্ত সময় দিয়েছি এবং এক বছর নির্বাচনের জন্য যৌক্তিক সময়।” তিনি আরও বলেন, যত দ্রুত সম্ভব একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা উচিত।
এছাড়া, কমিশন সদস্য আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানিয়েছিলেন যে, নির্বাচনের প্রস্তুতি জাতীয় নির্বাচনকেই সামনে রেখে চলবে, তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয়েও আলোচনা হচ্ছে।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, “আমরা প্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত সময় অনুযায়ী কাজ করছি এবং ইউএনডিপি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছি।”
এদিকে, জাতীয় পার্টি (এ) চেয়ারম্যান জি এম কাদের এবং সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সও দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের দাবি করেছেন। তারা বলেছেন, “এই সরকার জনগণের দাবি-দাওয়া পূরণে ব্যর্থ হয়েছে, তাই নির্বাচন দ্রুত অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।”
এখনো নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ অব্যাহত রয়েছে, তবে নির্বাচন কমিশন তার কাজের জন্য সময় দাবি করছে, যাতে একটি সুষ্ঠু এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
এইউ