চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় অস্ত্র আইনে করা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে খালাস পাওয়ার পর সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের কারামুক্তিতে আর বাধা নেই। বিএনপির এই নেতা আজই কারামুক্ত হতে পারেন বলে আইনজীবীরা জানিয়েছিলেন। তবে আজ তার মুক্তির সম্ভাবনা নেই। কারণ আদালত থেকে আদেশের যাবতীয় কাগজপত্র এখনো কারাগারে পৌঁছায়নি। ফলে আজই প্রায় ১৮ বছর ধরে কারাগারে থাকা বিএনপির এই প্রভাবশালী নেতার মুক্তির অপেক্ষার অবসান হচ্ছে না।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় কারা কর্তৃপক্ষ ও আদালত সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার ঢাকা মেইলকে জানান, কারামুক্তির কিছু কাগজপত্র তিনি ইতোমধ্যে পেয়েছেন। তবে সব কাগজ এখনো এসে পৌঁছেনি।
আরও পড়ুন
এ বিষয়ে কারা অধিদফতরের মিডিয়া বিভাগের সহকারী কারা মহাপরির্শক জান্নাত উল ফরহাদ ঢাকা মেইলকে বলেন, এখনো তার আদালতের কপি কারাগারে পৌঁছায়নি। ফলে আজ তার মুক্তি মিলছে না। আগামীকালও যদি না পৌঁছায় তবে সম্ভব হবে না। যেহেতু খালাসের রায় দিয়েছে আদালত, তাই কাগজপত্র পৌঁছালেই তাকে মুক্তি দেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন
বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের হয়েছিল। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী গত ডিসেম্বরে চোরাচালান মামলায় খালাস পেয়েছেন। আজ তিনি অস্ত্র আইনে দায়ের করা মামলায় খালাস পেলেন। দুপুরে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।
রায় ঘোষণা শেষে বাবরের আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, কোর্ট বলেছেন আজকেই একটি অ্যাডভান্স অর্ডার সই করে দেবেন। আমি আশা করি আজকেই এই আদেশ পৌঁছানো হবে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে লুৎফুজ্জামান বাবর জেল থেকে মুক্তি পাবেন।
আইনজীবী বলেন, তিনি কেরানীগঞ্জ কারাগারে আছেন। কারাগারে আদেশ যথানিয়মে পৌঁছানোর পর তার আত্মীয়-স্বজন এবং গুণগ্রাহীরা যারা আছেন, সবাই আইন-কানুন মেনে বের করে যথাসম্মানে তাকে বাসায় পৌঁছে দেবেন।
এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পান বাবর। এছাড়া ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা থেকেও গত মাসে খালাস পেয়েছেন তিনি।

সেনাসমর্থিত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ২৮ মে আটক হন লুৎফুজ্জামান বাবর। সেই থেকে কারাগারেই রয়েছেন তিনি। এরপর বিভিন্ন মামলায় তার দণ্ড হয়। যার মধ্যে দুটি মামলায় তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয়, একটিতে হয় যাবজ্জীবন দণ্ড। এর মধ্যে ২৩ অক্টোবর দুর্নীতির মামলায় আট বছরের দণ্ড থেকে এবং ১ ডিসেম্বর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা থেকে খালাস পান তিনি। সবশেষ ১৮ ডিসেম্বর ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পান সাবেক এ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
বাবর ১৯৯১ সালে প্রথমবার নেত্রকোনার মদন-খালিয়াজুড়ি-মোহনগঞ্জ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সবশেষ ২০০১ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে তাকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি বিএনপিতে প্রভাবশালী নেতাদের একজন ছিলেন।
এআইএম/জেবি

